প্রিন্ট সংস্করণ
০০:০০, ০২ ডিসেম্বর, ২০২৫
গত কয়েক বছর ধরেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যের পাঠ্যবই নিয়ে নানা জটিলতা সৃষ্টি হয়। এ বছরও একই প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দেশের মাধ্যমিকে ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবই ছাপাতে সব মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি শেষ করতে পারেনি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। এ কারণে আগামী শিক্ষাবর্ষের শুরুতে শিক্ষার্থীরা পাঠ্যবই পাবে কি না তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হতে আর মাত্র এক মাস বাকি। দরপত্রে শর্ত অনুযায়ী, মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এনসিটিবির চুক্তির পর বই ছাপার জন্য ৫০ দিন সময় পায়। মুদ্রণসংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাধারণত এ সময় নতুন শিক্ষাবর্ষের সব বই ছাপানো শেষ হয়ে থাকে। অথচ এখন র্পর্যন্ত এ বছর বই ছাপানোর চুক্তিই শেষ হয়নি। বছরের শুরুতে মাধ্যমিকের কিছু বই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পৌঁছানো সম্ভব হলেও সব বই ছাপা শেষ হতে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় লেগে যাবে। চলতি বছরও প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের সব শিক্ষার্থীর হাতে সব বই পৌঁছাতে প্রায় তিন মাস দেরি হয়েছিল। এতে শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগামী শিক্ষাবর্ষেও একই পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে বলেই সবার ধারণা।
মানসম্মত ও নির্ভুল পাঠ্যবই প্রণয়ন যেন একটি অসাধ্য বিষয়ে পরিণত হয়েছে। এত আলোচনা-সমালোচনার পরও এ বিষয়ক জটিলতার পুনরাবৃত্তি কেন হয়, তা খতিয়ে দেখে সমস্যার সমাধানে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। এরআগে দেখা গেছে, প্রকাশিত পাঠ্যপুস্তকগুলোতে কোথাও একটি অধ্যায়ের অংশবিশেষ নেই, আবার কোথাও এক পৃষ্ঠার সঙ্গে পরবর্তী পৃষ্ঠার মিল নেই। ভুলে ভরা এমন পাঠ্যপুস্তক নিয়ে অতীতে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। ভুলে ভরা পাঠ্যপুস্তক শিক্ষার্থীদের লক্ষ্যে পৌঁছার ক্ষেত্রে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
কাজেই মানসম্মত ও ত্রুটিমুক্ত বই প্রকাশে কর্তৃপক্ষকে মনোযোগী হতে হবে। শিক্ষার্থীদের বই তুলে দেওয়ার দায়িত্ব এনসিটিবির ওপর ন্যস্ত। কাজেই তাই সময়মতো বই না পাওয়া গেলে তাদেরই জবাবদিহি করতে হবে। বস্তুত মানসম্মত বই শিক্ষার্থীদের দক্ষ জনশক্তি হিসাবে গড়ে তুলতে সহায়ক হবে। একইসঙ্গে তারা যাতে উচ্চ নৈতিকতা ও উন্নত মূল্যবোধের চর্চায় আগ্রহী হয়, সে বিষয়ে তাদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে। এসব বিষয়ে সমাজ যদি পিছিয়ে থাকে, তাহলে শিক্ষার্থীরা কতোটা এগিয়ে যেতে পারবে, সে প্রশ্ন থেকেই যায়।