
দাবি-দাওয়া নিয়ে সচিবালয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছেন সুপারিশপ্রাপ্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। ফলে কর্মসূচি চালু রাখার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। গতকাল শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে থেকে এ ঘোষণা দেয়া হয়। সচিবালয়ে যাওয়া ৬ সদস্যের প্রতিনিধিদলের একজন জান্নাতুল নাইম বলেন, সচিবালয়ে গিয়ে আমরা সচিব আবু তাহের মোহাম্মদ মাসুদ আলমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করি। আগে আমাদের যেমন আশ্বস্ত করা হয়েছিল, এবারও সেই একইভাবে আশ্বস্ত করে বলা হয় যে, এটা আদালতের রায়ের এখতিয়ার হচ্ছে বিচারকের। তারা বললেন- সরকারের ওপর বিশ্বাস ও আস্থা রাখতে। তিনি বলেন, সচিবের পর আমরা উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করি। তিনি বললেন- আপনাদের ৬ হাজার ৫৩১ জনের মধ্যে কাউকেই বাদ দেয়া হবে না। এরপর তো আমাদের আর কিছু বলার থাকে না। আমরা উপদেষ্টা মহোদয়কে একটা কথাই বললাম, যেন অতি দ্রুত আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে আমাদের নিয়োগ প্রদান করা হয়। নাইম আরো বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের সবসময় শুধু আশ্বস্ত করা হচ্ছে। আগেরবার আমরা ঘরে ফিরে গিয়েছিলাম, কিন্তু এবার আর ঘরে ফিরব না। যতদিন পর্যন্ত আমাদের দাবি মানা না হবে আমরা রাজপথে থাকব এবং আমাদের কর্মসূচি চলমান থাকবে। হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত বাতিলে আগামীকাল বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত আল্টিমেটাম ঘোষণা করেছেন আন্দোলনকারীরা। এর মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানানো হয়। এর আগে গতকালও প্রাথমিকের সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকরা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করেছিলেন। পরে পুলিশ জলকামান, সাউন্ড গ্রেনেড, লাঠিচার্জ এবং কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে তাদের সরিয়ে দেয়। তখন বেশ কয়েকজনকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়। সংশ্লিষ্ট সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকরা বলছেন, প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ-২০২৩ বিজ্ঞপ্তি তিনটি ধাপে দেয়া হয়েছিল। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত নিয়োগ কার্যক্রম এবং অপেক্ষমাণ তালিকা থেকেও নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। কিন্তু তৃতীয় ধাপ নিয়ে প্রহসন থামছে না। তারা আরো বলছেন, সুপারিশপ্রাপ্তরা নিজ জেলা সিভিল সার্জনে এরই মধ্যে মেডিকেল টেস্ট করে এবং জেলা শিক্ষা অফিসে প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র ও পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য ফরম জমা দিয়েছে। দেশের সব জেলার প্রায় সব উপজেলাগুলোর চূড়ান্ত সুপারিশপ্রাপ্তরা যোগদানপত্রও হাতে পেয়েছেন। এরপরও যোগদান করতে না পেরে ৬ হাজার ৫৩১টি পরিবার সীমাহীন দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছে। সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হতে হচ্ছে। গত ৬ ফেব্রুয়ারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে চূড়ান্ত ফলাফলে উত্তীর্ণ ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগ বাতিল করেন হাইকোর্ট। মেধার ভিত্তিতে পুনরায় নিয়োগের নির্দেশ দেন আদালত।