অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিয়েছেন চৌধুরী রফিকুল আবরার (সিআর আবরার)। গতকাল বুধবার বঙ্গভবনে সিআর আবরারকে শপথ পড়ান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. শেখ আবদুর রশীদ। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
শিক্ষা উপদেষ্টার দায়িত্ব পেয়ে সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, অনেকে আমাকে প্রশ্ন করেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নিচ্ছেন, কেমন শিক্ষাব্যবস্থা দেখতে চান। আমি বলব, আমি স্বপ্ন দেখি এমন এক শিক্ষাব্যবস্থার যেখানে আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা দেশের ভেতরেই তাদের ভবিষ্যৎ দেখতে পাবে।
নতুন শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, দেশে বড় রকমের একটা পরিবর্তন হয়েছে। আমরা ভাবিনি আমাদের জীবদ্দশায় এভাবে মুক্তভাবে কথা বলতে পারব। প্রধান উপদেষ্টা আমাকে যে দায়িত্বটা দিয়েছেন সেটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। প্রধান উপদেষ্টাও বলেছেন, সামনে যে জার্নিটা ইজি হবে তা নয়। সিআর আবরার বলেন, শিক্ষা একটা বিশাল জ্বগৎ। আমরা সবাই জ্বনগণের টাকায় বড় হয়েছি। সুতরাং জ্বনগণের প্রতি আমাদের অনেক দায়বদ্ধতা আছে।
তিনি আরও বলেন, আমি মনে করি শিক্ষা হচ্ছে বৈষম্যহীন সমাজ্ব বিনির্মাণে সবচেয়ে শক্তিশালী মাধ্যম। আমি স্বপ্ন দেখি আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা দেশের ভেতরেই তাদের ভবিষ্যৎ দেখতে পাবে। দেশে থেকেই বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে পারবে। আমি জানি এটা হয়তো দ্রুত হবে না কিন্তু এর একটা ভিত্তি আমরা তৈরি করতে চাই। এদিকে দায়িত্ব হস্তান্তরকালে সদ্য বিদায়ী শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, শিক্ষা কমিশন অতীতে ৫ থেকে ৬টি হয়েছে। তারা কি সমস্যার সমাধান করেছে? কয়েকজ্বনকে বসিয়ে দিয়ে কমিশন করলেই কি সমস্যার সমাধান হবে? তাদের সবকিছু বুঝতেই তো অনেক সময় চলে যাবে। আমাদের দূরদৃষ্টিসম্পন্ন একটি কমিশন হওয়া উচিত।
তিনি বলেন, অনেকেই জানে না বেসরকারি খাতের শিক্ষকদের কোনো প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেই। নায়েমসহ এ ধরনের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে শুধু সরকারি শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। অথচ বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তুলনায় বেশি। সুতরাং নতুন কমিশন এসে এসব বিষয় বিবেচনায় নেবে। কারিকুলাম ভালো করার পর প্রশিক্ষিত শিক্ষক না থাকলে তো কাজ্ব হবে না। শিক্ষাব্যবস্থা নষ্ট হতে অনেক সময় লাগে। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা খুবই বিশৃঙ্খল ও অবিন্যস্ত।
এদিকে গতকাল অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন আরও দুজ্বন। তাদের প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে শেখ মইনউদ্দিন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং ফয়েজ্ব আহমদ তৈয়্যব ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করবেন। সেভাবেই তাদের নির্বাহী ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এতে বলা হয়, বিশেষ সহকারী থাকাকালীন তারা প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা, বেতন-ভাতা ও আনুষঙ্গিক সুবিধা পাবেন।
ছাত্র-জ্বনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। এরপর গত বছরের ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এ সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। গত প্রায় সাত মাসে কয়েক দফায় উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল ও নতুন নিয়োগ হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্তর্বর্তী সরকারে এখন উপদেষ্টা ২৩ জ্বন।