ঢাকা সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

পাকিস্তানে হামলা, ৫ যুদ্ধবিমান হারাল ভারত

পাকিস্তানে হামলা, ৫ যুদ্ধবিমান হারাল ভারত

পাকিস্তানে মিসাইল হামলা চালিয়েছে ভারত। এতে ২৬ জন নিহত এবং ৪৬ জন আহত হয়েছেন। পাল্টাহামলায় ভারতের তিনটি রাফাল, একটি মিগ-টোয়েন্টিনাইন ও একটি এসইউ-থার্টি যুদ্ধবিমান এবং একটি অত্যাধুনিক ড্রোন ধ্বংস করেছে পাকিস্তান। তাছাড়া ভারতের একটি ব্রিগেড হেডকোয়ার্টার ধ্বংস করেছেন তারা। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ভারতীয় বাহিনীর হামলার পর পাল্টাহামলা চালিয়ে এসব যুদ্ধবিমান, ড্রোন ও সেনাঘাঁটি ধ্বংস করা হয়। পাকিস্তানের সামরিক সূত্র জানিয়েছে, পাকিস্তানি ভূখণ্ডে হামলা চালানোর সময় তারা ফ্রান্সের তৈরি তিনটি রাফাল জেট, রাশিয়ার তৈরি দুটি মিগ-টোয়েন্টিনাইন এবং এসইউ-থার্টি যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেছেন। তাছাড়া ইসরায়েলের তৈরি একটি হেরন সারভিল্যান্স ড্রোন ভূপাতিত করা হয়। তবে, তিনটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হওয়ার কথা স্বীকার করেছে ভারত। বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছাকাছি থাকা ভারতের ১২তম পদাতিক ব্রিগেড হেডকোয়ার্টারও ধ্বংস করেছে পাকিস্তান। ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ছিল এটি। পাকিস্তানের ইন্টার সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশন্স বা আইএসপিআর-এর ডিজি মেজর জেনারেল আহমদ শরিফ চৌধুরী রয়টার্সকে বলেছেন, ‘আমাদের বাহিনী শত্রুর নগ্ন আগ্রাসনের সমুচিত জবাব দিয়েছে। নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর শত্রুর কয়েকটি চৌকিও ধ্বংস করা হয়েছে।’ পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ রয়টার্সকে পাল্টাহামলায় ভারতের বিমান ভূপাতিত করার বিষয় নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান আত্মরক্ষামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। আমাদের সশস্ত্র বাহিনী ভারতীয় আগ্রাসনের সমুচিত জবাব দিয়েছে। তারা তাদের ঋণ শোধ করেছেন।’

‘অপারেশন সিঁদুর’ ৬ জায়গায়, মসজিদও ক্ষতিগ্রস্ত : এদিকে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী তাদের এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে পরিচালিত অভিযানে পাকিস্তানের ৯টি জায়গায় হামলা চালিয়েছেন তারা। তাদের দাবি, হামলায় সশস্ত্র গোষ্ঠীর অবকাঠামো লক্ষ্য করা হয়েছে; পাকিস্তানের সেনা সদস্যদের ওপর কোনো হামলা চালানো হয়নি। পাকিস্তানের আইএসপিআরের মহাপরিচালক জানান, মঙ্গলবার দিবাগত মধ্যরাতের পর পাকিস্তানের কোটলি, ভাওয়ালপুর, মুরিদকে, বাগ ও মুজাফ্ফরবাদের ছয়টি স্থানে ‘কাপুরুষোচিত’ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর একজন মুখপাত্র জিও নিউজকে জানিয়েছেন, ভারতের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত স্থানগুলোর মধ্যে দুটি মসজিদও রয়েছে। হামলার প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বলেছেন, ‘পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত ভূখণ্ডের ছয়টি স্থানে ‘কাপুরুষোচিত’ হামলা হয়েছে। ভারতের এই যুদ্ধের বিরুদ্ধে জোরালোভাবে জবাব দেওয়ার অধিকার পাকিস্তানের রয়েছে এবং জোরালোভাবে জবাব দেওয়া হচ্ছে। শত্রুদের মোকাবিলা করার বিষয়ে পুরো জাতি পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীর পাশে দাঁড়িয়েছে।’

সাদা পতাকা উড়িয়ে পরাজয় মেনে নিয়েছে ভারত, পাকিস্তানের দাবি: পাকিস্তানের আইএসপিআর বুধবার ভোর ৪টায় জানায়, গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার দিকে ভারত হামলা শুরু করে। তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ জানান, অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে পাল্টা পদক্ষেপ নেয় পাকিস্তান। বুধবার ভোর পৌনে ৩টার দিকে দুটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করা হয়। এর এক ঘণ্টা পর একটি রাফাল যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেন পাকিস্তানি সেনারা। চতুর্থ ও পঞ্চম যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করা হয় ভোর ৫টায়। সকাল ৭টার দিকে তথ্য মন্ত্রণালয়ে গণমাধ্যমগুলোকে তিনি জানান, ভারত নিয়ন্ত্রণ রেখায় সাদা পতাকা উড়িয়ে পরাজয় মেনে নিয়েছে। সাংবাদিকদের একটি সাদা পতাকার ফুটেজ দেখান তিনি। তারার বলেন, ভারতকে সাদা পতাকা উত্তোলনে বাধ্য করা হয়। একটি ভারতীয় অবকাঠামোর উপরে সাদা পতাকা উত্তোলনের ফুটেজ শেয়ার করেছে পাকিস্তানের পিটিভি নিউজ। তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের সেনারা সীমান্তজুড়ে ভারতীয় সেনাদের কয়েকটি চৌকি ধ্বংস করেছেন। তারার বলেন, হামলা শুরু করে পালিয়েছে ভারত। নিরীহ শ্রমিক ও নাগরিকদের ওপর এই হামলা ভারতের জন্য লজ্জাজনক। অথচ, পাকিস্তান ভারতের কোনো বেসামরিক লোকজনের ওপর হামলা চালায়নি। পেহেলগাঁওয়ের যে হামলাকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের জন্য ভারতে হামলা চালিয়েছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, পাকিস্তানি তথ্যমন্ত্রী সেই ঘটনার আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান জানান।

পাকিস্তানে নিহত ২৬, ভারতে ১২: আইএসপিআর জানিয়েছে, পাকিস্তানে চালানো ভারতের হামলায় ২৬ জন নিহত এবং ৪৬ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে তিন বছরের দুটি শিশুও রয়েছে। নিহতের সংখ্যা ৭০ বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। এদিকে, ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে পাকিস্তানি বাহিনীর গোলায় ১২ জন নিহন হয়েছেন বলে জানায় ভারতীয় সেনাবাহিনী। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য সম্প্রচার বিভাগের অতিরিক্ত মহাপরিচালক এক্সে এক পোস্টে বলেছেন, ‘জম্মুর পুঞ্চণ্ডরাজৌরি এলাকার ভিম্বার গলিতে কামান থেকে গোলা নিক্ষেপ করেছে পাকিস্তান। ভারতের সেনাবাহিনী ধাপে ধাপে এর যথাযথ জবাব দিচ্ছে।’ ভারতীয় পুলিশের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানায়, ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে পাকিস্তানি সেনাদের ছোড়া গুলিতে দুই নারী আহত হয়েছেন। তাদের একজনের অবস্থা গুরুতর। পরে বুধবার সকালে ভারতীয় সেনাবাহিনী জানায়, কাশ্মীরে পাকিস্তানি সেনাদের গোলার আঘাতে ১২ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। বিবিসি জানায়, নিহত ১২ জনই সীমান্তরেখা সংলগ্ন পোঞ্চ জেলার। আহত হয়েছেন আরও ৩২ জন।

বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বিমানবন্দর, ফ্লাইট বাতিল: রয়টার্স জানিয়েছে, ভারতের সামরিক অভিযানের জবাবে পাকিস্তানে পাল্টাহামলা শুরু হওয়ার পর উত্তর ভারতের একাধিক বিমানবন্দর অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিমানবন্দরগুলোর বহু অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। যাত্রীদের ফ্লাইট বাতিলের তথ্য অবহিত করে বিবৃতি প্রকাশ করেছে এয়ার ইন্ডিয়া, স্পাইসজেট ও ইন্ডিগোসহ একাধিক বিমান সংস্থা। এয়ার ইন্ডিয়া এক্সে বলেছে, ‘উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জম্মু, শ্রীনগর, লেহ, যোধপুর, অমৃতসর, ভুজ, জামনগর, চণ্ডীগড় এবং রাজকোট থেকে গতকাল বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাদের সব ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। এই বিমানবন্দরগুলোতে যে ফ্লাইটগুলো নামার কথা ছিল, সেগুলোও বাতিল করা হয়েছে।’ অমৃতসরগামী দুটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটকে দিল্লিতে নামানো হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। স্পাইসজেটের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ধর্মশালা, লেহ, শ্রীনগর, অমৃতসরসহ উত্তর ভারতের একাধিক বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ। ফলে এসব বিমানবন্দরে তারা তাদের ফ্লাইট বন্ধ রাখছে।’ যাত্রীদের যাত্রার আগে সংশ্লিষ্ট তথ্য যাচাই করার আহ্বান জানানো হয়েছে। একইভাবে ইন্ডিগো জানিয়েছে, ‘শ্রীনগর, জম্মু, অমৃতসর, লেহ, চণ্ডীগড় ও ধর্মশালা থেকে আমাদের সব বিমান বাতিল করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত ওই বিমানবন্দরগুলোতে কোনো বিমান ওঠানামা করবে না।’ বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারতের নাগরিকদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া উত্তর ভারতে ভ্রমণ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এদিকে, হামলার পর পাকিস্তানের আকাশসীমা সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানগামী সব ফ্লাইট সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে দোহাভিত্তিক কাতার এয়ারওয়েজ। বুধবার এক বিজ্ঞপ্তিতে উড়োজাহাজ সংস্থাটি জানিয়েছে, পাকিস্তানের আকাশসীমা বন্ধ থাকার কারণে কাতার এয়ারওয়েজ পাকিস্তানে ফ্লাইট সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে। পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। যাত্রী ও ক্রুদের নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। এনডিটিভি জানিয়েছে, ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের জম্মু, সাম্বা, কাঠুয়া, রাজৌরি ও পুঞ্চ এলাকার স্কুল-কলেজসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বুধবার ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদ ও পাঞ্জাব প্রদেশের স্কুলগুলোও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

হামলার জবাব দেওয়ার অনুমতি পেল পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী: পাকিস্তান বলেছে, জাতিসংঘ সনদের ৫১ অনুচ্ছেদের আওতায় তাদের আত্মরক্ষার অধিকার আছে। দেশটি হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছে, সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন এবং বেসামরিক প্রাণহানির প্রতিশোধ নিতে ‘নিজস্ব সময়, স্থান ও পদ্ধতিতে’ ভারতের হামলার জবাব দেওয়ার অধিকার তারা রাখেন। পাকিস্তানের বিবৃতির বরাত দিয়ে বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, দেশটির সশস্ত্র বাহিনীকে ‘প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য পূর্ণ অনুমোদন’ দেওয়া হয়েছে। বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সভাপতিত্বে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির (এনএসসি) এক বৈঠকের পর এই বিবৃতি দেওয়া হয়। বিবৃতিতে পাকিস্তান ভারতের হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে। পাকিস্তান আরও বলেছে, তারা দেশের ভূখণ্ডের অখণ্ডতা রক্ষায় ভারতের যে কোনো হামলার বিরুদ্ধে ‘দৃঢ়ভাবে প্রতিরোধ’ গড়ে তুলেছে।

হামলাকে ‘লজ্জাজনক’ বললেন ট্রাম্প: পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত ভূখণ্ডে ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোকে লজ্জাজনক বলে অ্যাখ্যায়িত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পাকিস্তানে ভারত ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ কথা বলেন। ক্ষেপণাস্ত্র হামলা নিয়ে ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘এটা লজ্জাজনক। আমরা এইমাত্র হামলা সম্পর্কে শুনেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘মানুষ অতীতের ওপর ভিত্তি করে জানত যে কিছু ঘটতে চলেছে। কারণ উভয় পক্ষই বহু দশক এবং শতাব্দী ধরে লড়াই করে আসছে। তবে আমি আশা করি, এটি খুব দ্রুত শেষ হবে।’ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এক্সে বলেছেন, তিনি পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন এবং দ্রুত শান্তিপূর্ণ সমাধানে পৌঁছার জন্য ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখবেন। পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, রুবিও ভারত ও পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলেছেন। দুইজনকে পারস্পরিক যোগাযোগ চালু রেখে উত্তেজনা প্রশমনের অনুরোধ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

জাতিসংঘ মহাসচিব উদ্বিগ্ন: পাকিস্তানে ভারতের হামলার পরিপ্রেক্ষিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক এক বিবৃতিতে বলেন, নিয়ন্ত্রণ রেখা ও আন্তর্জাতিক সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতের সামরিক অভিযান নিয়ে মহাসচিব গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন। তিনি উভয় দেশকে সর্বোচ্চ সামরিক সংযম অবলম্বনের আহ্বান জানান। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক সংঘাত বিশ্ব নিতে পারবে না বলেও উল্লেখ করা হয়েছে বিবৃতিতে। প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের ওপর সশস্ত্র হামলায় ২৬ জনের প্রাণহানির পর থেকে পারমাণবিক ক্ষমতাধর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। টানা ১২ দিন ধরে সীমান্তে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে গুলিবিনিময় হয়। পরস্পরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে দিল্লি ও ইসলামাবাদ। ঘটনা পৌঁছায় জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ পর্যন্ত। এর মধ্যে ভারতের মিসাইল হামলা ও পাকিস্তানের পাল্টাহামলায় ভারতের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটল।

পাকিস্তানে ভারতের হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলল চীন: পাকিস্তানে ভারতের সামরিক হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিবিসির লাইভের এক খবরে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশীয় দুই প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধিসংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, তারা চলমান পরিস্থিতি নিয়ে ‘উদ্বিগ্ন’ এবং উভয় দেশকে ‘শান্ত থাকতে, সংযম প্রদর্শন করতে এবং পরিস্থিতি আরও জটিল করতে পারে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত থাকতে’ আহ্বান জানিয়েছেন।

পারমাণবিক শক্তিতে পাকিস্তান এগিয়ে: ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশই পারমাণবিক ক্ষমতার অধিকারী। তাই দেশ দুটির প্রতিরক্ষা কৌশলে এ সক্ষমতার ভূমিকা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে ১৩০ থেকে ১৪০টি। ডেলিভারি সিস্টেমের মধ্যে রয়েছে অগ্নি-থ্রি/ফাইভ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (পাল্লা ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার কিলোমিটার), মিরেজ ২ হাজার ও রাফায়েল এবং সামুদ্রিক প্রতিরক্ষায় আইএনএস আরিহান্ট। পারমাণবিক অস্ত্র আগে ব্যবহার না করার (নো ফার্স্ট ইউজ/এনএফইউ) নীতির পক্ষে ভারত। তবে এ ধরনের হামলার শিকার হলে ব্যাপক আকারে প্রতিশোধমূলক হামলার পক্ষে দেশটি। অন্যদিকে পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা ১৪০ থেকে ১৫০। এদিক থেকে পাকিস্তানের সক্ষমতা ভারতের চেয়ে বেশি। ডেলিভারি সিস্টেমের মধ্যে আছে শাহিন-টু/থ্রি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাত্র, এফ-১৬ যুদ্ধবিমান, বাবর ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র। পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে দেশটি ‘ফুল-স্পেকট্রাম ডেটারেন্স’ নীতি অনুসরণের পক্ষপাতী। এ নীতিতে যুদ্ধক্ষেত্রে দেশটি প্রয়োজনে আগেভাগে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত