ঢাকা শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

রাজশাহীতে একই পরিবারের চারজনের লাশ উদ্ধার

লাশের পাশে মিলল চিরকুট
রাজশাহীতে একই পরিবারের চারজনের লাশ উদ্ধার

রাজশাহীর পবা উপজেলার বামুনশিকড় এলাকায় একই পরিবারের চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার ওই এলাকার একটি বাড়ি থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মতিহার থানার সহকারী উপপরিদর্শক কালাম পারভেজ এ তথ্য নিশ্চিত করেন। নিহত ব্যক্তিরা হলেন- বাসিন্দা মিনারুল ইসলাম (৩৫), স্ত্রী মনিরা বেগম (২৮), সন্তান মাহিন (১৩) ও মিথিলা (২)। মাহিন খড়খড়ি উচ্চবিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত। মরদেহের পাশে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে, যাতে লেখা- ‘আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে, খাবারের অভাবে’। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মিনারুল ইসলাম কৃষিকাজ করেন। তার কাছে অনেকেই টাকা পেতেন। তাদের বসতবাড়ির উত্তরের ঘরে মনিরা বেগম ও তার মেয়ের লাশ পাওয়া গেছে। আর দক্ষিণের ঘরে মিনারুল ইসলাম ও তার ছেলের লাশ ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে ছিল।

পুলিশ বলছে, মিনারুল স্ত্রীকে ওড়না দিয়ে, মেয়েকে গামছা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে ছেলেকে শ্বাসরোধে হত্যার পর নিজে আত্মহত্যা করেছেন।

উদ্ধার করা চিরকুটে লেখা রয়েছে- ‘আমি নিজ হাতে সবাইকে মারলাম। এই কারণে যে, আমি যদি মরে যাই, তাহলে আমার ছেলে-মেয়ে কার আশায় বেঁচে থাকবে। কষ্ট আর দুঃখ ছাড়া কিছুই পাবে না। আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে। তাই আমরা বেঁচে থাকার চেয়ে মরে গেলাম সেই ভালো। কারো কাছে কিছুই চাইতে হবে না। আমার জন্য কাউকে কারো কাছে ছোট হতে হবে না। আমার জন্য আমার বাবা অনেক লোকের কাছে ছোট হয়েছে। আর হতে হবে না। চিরদিনের জন্য চলে গেলাম। আমি চাই সবাই ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ।’

স্থানীয়রা জানান, মিনারুল একসময় জুয়া খেলতেন ও মাদকাসক্ত ছিলেন। এতে তিনি অনেক টাকা ঋণ করেন। সম্প্রতি বাবার জমি বিক্রি করে ঋণ কিছুটা শোধ করলেও আর্থিক সংকটে ছিলেন। অনেক সময় দুবেলা খাবার জুটতো না।

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) গাজিউর রহমান বলেন, ঘটনাটি জানার পরই পুলিশ পাঠানো হয়। চারজনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত করা হবে। মরদেহের পাশে হাতে লেখা একটা চিঠি পাওয়া যায়। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, এটা মিনারুলের লেখা। এতে ঋণের কথা বলা হয়েছে। তবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সুস্পষ্টভাবে বলা যাবে এটা কার লেখা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত