ঢাকা রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

মানবতাবিরোধী অপরাধ

হাসিনার মামলায় পরবর্তী সাক্ষ্য ৮ সেপ্টেম্বর

হাসিনার মামলায় পরবর্তী সাক্ষ্য ৮ সেপ্টেম্বর

মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে হওয়া মামলার রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের সাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরা শেষ হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজসাক্ষীকে আসামি পক্ষের জেরা শেষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে-১ এই মামলায় পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ৮ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন।

এর আগে বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন ট্র্যাইব্যুনাল-১ এ এই মামলার ৩৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা শেষ হয়েছে। ট্রাইব্যুনালে এই মামলায় প্রসিকিউশনের পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এসএইচ তামিম শুনানি করেন। এসময় অপর প্রসিকিউটররা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে এই মামলায় পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন। আর এই মামলায় গ্রেফতার হয়ে পরে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।

মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। এক পর্যায়ে এই মামলায় দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদঘাটনে (অ্যাপ্রোভার) রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের আবেদন মঞ্জুর করেন ট্রাইব্যুনাল। এটি ছাড়াও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে গুম-খুনের ঘটনায় তাকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হয়েছে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়। গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, এর দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে। দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসব অপরাধের বিচার কাজ চলছে।

প্লট দুর্নীতি মামলা: গতকাল রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে লড়তে চান চার আইনজীবী। কিন্তু আইনে সুযোগ না থাকায় আদালত তাদের আইনজীবী হিসেবে লড়ার অনুমতি দেননি। ঢাকার চার নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. রবিউল আলম এ আদেশ দেন।

আবেদনের শুনানিতে বিচারক বলেন, আপনাদের আসামিকে আদালতে হাজির থাকতে হবে। আদালতে হাজির হলেই দুদকের মামলাগুলোতে তার পক্ষে আইনজীবী কথা বলতে পারবেন। না হলে তার পক্ষে আইনজীবী হিসেবে থাকার সুযোগ নেই। ওই চার আইনজীবী হলেন মোরশেদ হোসেন শাহীন, ইমরান হোসেন, শেখ ফরিদ ও তপু। আইনজীবীদের পক্ষে শাহীন বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মামলাগুলোতে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার জন্য আমরা তার পক্ষে লড়তে আদালতকে আবেদন জমা দিয়েছি। কিন্তু আদালত আমাদের অনুমতি দেননি। ট্রাইব্যুনালসহ অন্যান্য আদালতে শেখ হাসিনার পক্ষে লড়তে পারলে কেন দুদকের মামলায় তার পক্ষে আইনজীবী লড়তে পারবে না? আবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনার ন্যায় বিচারপ্রাপ্তি ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষে আদালতে বিচারাধীন মামলায় ব্যক্তিগত আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ পেতে ইচ্ছুক। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানাসহ অন্যান্য আসামিদের বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা করে দুদক। মামলার অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তী, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব শহীদ উল্লা খন্দকার, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) কাজী ওয়াছি উদ্দিন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) কবির আল আসাদ, সদস্য (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) তন্ময় দাস, সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) নুরুল ইসলাম, সাবেক সদস্য (পরিকল্পনা) মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সাবেক সদস্য সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-২) শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপ-পরিচালক হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন। সম্প্রতি সব মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে। মামলাগুলোর মধ্যে শেখ হাসিনার মামলাগুলো ঢাকার ৪ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে বিচারাধীন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত