
আগামী বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট হবে। আসন্ন এই নির্বাচনে প্রার্থীদের অস্ত্র রাখার বিষয়ে প্রয়োজনে আচরণবিধি সংশোধন করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। গতকাল বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, জাতীয় নির্বাচনের প্রার্থীরা ব্যক্তিগত আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স চাইলে অনুমতি দেওয়া হবে। যারা অস্ত্র জমা দিয়েছেন তাদের অস্ত্রও ফেরত দেওয়া হবে। এরপর মন্ত্রণালয় থেকে একটি নীতিমালাও জারি করা হয়। এই বিষয় নিয়ে ইসির অনুমতি নেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মহোদয় এটা বলেছেন যে এটা আমাদের (ইসি) কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে করতে হবে; নিরাপত্তার সব ক্ষেত্রে এটা কী খুব একটা গ্রহণযোগ্য কথা। অন্যরা (স্বরাষ্ট্র) এটা ভালো মনে করেছেন, করেছেন। এখানে তো আমরা সবাই নিশ্চয়ই একমত যে নিরাপত্তার বিষয়টা প্রাধান্য পাক।
তিনি বলেন, দ্বিতীয় জিনিসটা হচ্ছে এর সঙ্গে আচরণবিধির আপাতত কোনও বিরোধ দেখছি না। যদি মনে করা হয় ওভার দ্য পিরিয়ড অফ টাইম, আচরণবিধি এখানে কোনও জায়গার সামান্য সংশোধন বা সংযোজন বা বিয়োজন বা অ্যাডজাস্টমেন্ট লাগবে; এটা করবো আমরা। ভোটের আগে বৈধ অস্ত্র জমা নেওয়ার বিধির কথা তুলে ধরলে ইসি সচিব বলেন, এটা তো সময়ের ব্যাপার। এটা কী করা হবে না হবে এগুলো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আসবে। বৈধ অস্ত্র জমা নেওয়ার বিষয়টা যখন প্রাসঙ্গিক হবে, তখন যদি মনে করা হয়- এই জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টা বিবেচনায় নেবেন, সে অনুযায়ী এটা ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইইউ থেকে দুইশ পর্যবেক্ষক আসবে- ইসি সচিব : ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে ১৭৫ থেকে ২০০ জন পর্যবেক্ষক আসতে পারে বলে জানান ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। সচিব বলেন, নির্বাচন পর্যবেক্ষণের বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং নির্বাচন কমিশনের মধ্যে একটি প্রশাসনিক চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে। এই চুক্তির আলোকে ইইউ একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে পাঠাবে। আমরা এখন পর্যন্ত ডেলিগেশন প্রধানের নাম জানতে পেরেছি। তিনি হলেন মেম্বার অব ইউ পার্লামেন্ট আইভার্স ইজাপস। চুক্তিটি গত কার্যদিবসে সম্পন্ন হলেও ব্রাসেলস (ইইউ সদর দপ্তর) থেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় আমরা তা প্রকাশ করিনি। গতকাল রাতে অনুমোদনের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর আজ আপনাদের জানানো হচ্ছে। তিনি বলেন, আমাদের ধারণা দেওয়া হয়েছে যে, ১৭৫ থেকে ২০০ জনের মতো পর্যবেক্ষক আসতে পারেন। তবে সুনির্দিষ্ট সংখ্যা এবং তাদের বিস্তারিত শিডিউল পরবর্তী সময়ে জানানো হবে। ত্রিপক্ষীয় চুক্তির আওতায় আমরা পর্যবেক্ষক দলকে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক সুবিধা দেব।
বিশেষ করে তাদের যাতায়াত ও চলাফেরায় কমিশন সহযোগিতা করবে। তবে আমরা একটি বিষয়ে অনুরোধ করেছি যে, বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে (যেমন, পার্বত্য চট্টগ্রাম) স্থানীয় নিরাপত্তা প্রোটোকল কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে। তারা তাদের সঙ্গে প্রয়োজনীয় ইকুইপমেন্ট নিয়ে আসবেন এবং কাজ শেষে তা ফেরত নিয়ে যাবেন। এছাড়া তারা বাংলাদেশের স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা মেনেই কাজ করবেন বলে চুক্তিতে উল্লেখ আছে। পাশাপাশি ইইউ ছাড়াও এখন পর্যন্ত টার্কি (তুরস্ক) থেকে এবং আরও দুই-একটি সংস্থা থেকে পর্যবেক্ষণের বিষয়ে আমরা প্রস্তাবনা পেয়েছি।