
চব্বিশের জুলাই-আগস্টে ছাত্র জনতার আন্দোলন চলাকালীন রাজধানীর চানখারপুলে ছয়জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আগামী ২০ জানুয়ারি। উভয় পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শেষে গতকাল বুধবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ রায়ের জন্য এ দিন ধার্য করেন। ট্রাইব্যুনালে ইমাজ হোসেন ইমনের পক্ষে শুনানি করের আইনজীবী মো. জিয়াউর রশিদ। পলাতক চার আসামির পক্ষে ছিলেন স্টেট ডিফেন্স আইনজীবী কুতুবউদ্দিন আহমেদ। প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম। তার সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর সহিদুল ইসলাম, আবদুল্লাহ আল নোমানসহ অন্যরা।
গত ১১ আগস্ট চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন শেষে মামলার প্রথম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন শহীদ আনাসের বাবা সাহরিয়ার খান পলাশ। পরবর্তীতে আনাসের মা ও নানাসহ ২৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য-জেরা সম্পন্ন হয়। এই মামলায় গ্রেপ্তার চার আসামি হলেন- শাহবাগ থানার সাবেক ওসি (অপারেশন) মো. আরশেদ হোসেন, কনস্টেবল মো. সুজন মিয়া, মো. ইমাজ হোসেন ইমন ও মো. নাসিরুল ইসলাম।
পলাতক আসামিরা হলেন- সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রমনা অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহ আলম মো. আখতারুল ইসলাম ও রমনা অঞ্চলের সাবেক সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট চানখারপুল এলাকায় শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে গুলি চালায় পুলিশ। এতে বহু হতাহতের ঘটনার পাশাপাশি শাহরিয়ার খান আনাস, শেখ মাহদী হাসান জুনায়েদ, মো. ইয়াকুব, মো. রাকিব হাওলাদার, মো. ইসমামুল হক ও মানিক মিয়া শাহরিক শহীদ হন। গত ১৪ জুলাই এই মামলার পলাতক চার আসামিসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
রামপুরায় মানবতাবিরোধী অপরাধে ৪ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন, বিচার শুরু : চব্বিশের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান চলাকালে রাজধানীর রামপুরা এলাকায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দুই সেনা এবং দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। গতকাল বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন। একই সঙ্গে আগামী ২০ জানুয়ারি মামলায় সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন ও সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে। চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম প্রসিকিউশন পক্ষে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আবেদন করেন। অন্যদিকে, এ মামলা থেকে অব্যাহতির আবেদন করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী।
এ মামলায় বিজিবির সাবেক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম ও মেজর মো. রাফাত-বিন-আলম গ্রেফতার হয়েছেন। অন্যদিকে, পলাতক দুই আসামি হলেন পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. রাশেদুল ইসলাম ও সাবেক ওসি মো. মশিউর রহমান। জুলাই-আগস্টে দেশজুড়ে গণঅভ্যুত্থানের সময় ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চলেছিল। তখন রামপুরার ঘটনায় ২৮ জন নিহত এবং বহু আহত হন।