ঢাকা সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ইরান-আমেরিকা পরোক্ষ আলোচনা পরিবেশ বিনষ্টকারী ৩ পক্ষ কারা?

ইরান-আমেরিকা পরোক্ষ আলোচনা পরিবেশ বিনষ্টকারী ৩ পক্ষ কারা?

ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা শুরু হওয়ার পর থেকেই তাতে ব্যাঘাত ঘটার বা থেমে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। কারণ প্রতিশ্রুতি লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে আমেরিকার দীর্ঘ রেকর্ড রয়েছে। এছাড়া ইরান যাতে একটি ভালো চুক্তিতে পৌঁছাতে না পারে, সে লক্ষ্যে বিভিন্ন মহল কাজ করছে এবং আলোচনায় বাধা সৃষ্টির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা শুরু হয় ১২ এপ্রিল। এই আলোচনার দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় ১৯ এবং ২৬ এপ্রিল।

চতুর্থ দফার পরোক্ষ আলোচনা ৩ মে শনিবার অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর বিন হামাদ আল বুসাইদি জানিয়েছেন, ‘লজিস্টিক সমস্যার কারণে ইরান-মার্কিন পরোক্ষ আলোচনার চতুর্থ দফার বৈঠকের তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে।’ চতুর্থ দফা বৈঠক রোমে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল; কিন্তু তা আপাতত পিছিয়ে গেছে। এছাড়া, আমেরিকা পরমাণু সমঝোতায় ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করা সত্ত্বেও তেল ও পেট্রোকেমিক্যাল খাতে সক্রিয় সাতটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

এই ধরনের পরস্পরবিরোধী আচরণ থেকে এটা স্পষ্ট যে, আমেরিকার ওপর সহজে বিশ্বাস রাখা যায় না। আমেরিকা তার প্রতিশ্রুতি লঙ্ঘন করতে অভ্যস্ত, যেকোনো সময় তা লঙ্ঘন করতে পারে।

তবে এই আলোচনাকে ব্যর্থ করার জন্য তিনটি পক্ষ ব্যাপক কাজ করছে। তারা ইরানের সঙ্গে কোনো ভালো চুক্তি হোক তা চায় না। প্রথমত, আমেরিকার ডেমোক্র্যাটিক পার্টির কিছু ব্যক্তি এবং পম্পেও ও বোল্টনের মতো ট্রাম্প-যুগের কট্টরপন্থিদের মধ্যে একটি অপ্রত্যাশিত জোট গড়ে উঠেছে। তারা চান না কোনো কূটনৈতিক সাফল্য প্রতিদ্বন্দ্বী সরকারের নামে নিবন্ধিত হোক। দ্বিতীয়ত, ইউরোপীয় দেশগুলো বিশেষ করে ফ্রান্স। এই দেশগুলো নিজেদের একঘরে মনে করছে। এ কারণে তারা আলোচনার পরিবেশ নষ্ট করতে নানা ভিত্তিহীন মন্তব্য করছে। এরিমধ্যে ফ্রান্স দাবি করেছে, ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরির কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। এর মাধ্যমে তারা আলোচনার পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করছে। তৃতীয়ত, ইহুদিবাদী ইসরাইল এবং এর বিস্তৃত মিডিয়া নেটওয়ার্ক আলোচনার পরিবেশ নষ্ট করছে। তারা ইরান ইন্টারন্যাশনালের মতো গণমাধ্যমগুলোকে ব্যবহার করছে এবং ইরানে রাজতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে তৎপর কিছু ব্যক্তির মাধ্যমে নিয়মিত আলোচনাবিরোধী আবহ তৈরি করছে।

এই পরিস্থিতিতে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার দেওয়া কৌশলেই রয়েছে শুধু সমাধান: নীতিমালা মেনে আলোচনায় বুদ্ধিমত্তা দিয়ে এগিয়ে যাওয়া, অন্য পক্ষ সম্পর্কে অতিরিক্ত আশাবাদী না হওয়া এবং অভ্যন্তরীণ সক্ষমতার উপর নির্ভর করা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত