ইরানি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতাকারীদের ফলপ্রসূ বৈঠক হয়েছে বলে ইঙ্গিত দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তেহরানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের পথ থেকে সরিয়ে আনতে বিভিন্নভাবে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন তিনি। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। নিউ জার্সি অঙ্গরাজ্যের মরিসটাউন বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইরান বিষয়ে ভালো কোনো খবর দিতে পারব বলেই আমি আশা করি। দুদিন বাদে আমি ভালো না খারাপ খবর দিতে পারব, সে বিষয়ে নিশ্চিত নই। তবে, ভালোকিছু হবে বলেই আমি আশাবাদী।
ইরানের সঙ্গে আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে বলে দাবি করেন ট্রাম্প। অবশ্য ইরানি প্রতিনিধিদলে সঙ্গে বিশেষ মার্কিন কূটনীতিবিদ স্টিভ উইটকফের বৈঠকের বিষয়ে তেমন কোনো তথ্য দেননি তিনি। ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে পশ্চিমের সঙ্গে তেহরানের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, ইরানকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ করতে হবে। এদিকে, ইরান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, নিজ মাটিতে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ চালিয়ে যাওয়ার অধিকার থেকে তারা সরে আসবে না। তবে সমৃদ্ধকরণের মাত্রা হ্রাস এবং উচ্চমাত্রার ইউরেনিয়াম মজুদের পরিমাণ কমাতে আপত্তি নেই তেহরানের। তবে এই মাত্রা ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তির উল্লিখিত হারের কম হতে পারবে না বলেও সাফ জানিয়ে দিয়েছে ইরান।
কয়েক দফা বৈঠকের পর, ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে তেহরান-ওয়াশিংটন একজায়গায় সম্মত হয়েছে-তারা উভয়েই সামরিক পন্থার বদলে কূটনৈতিক উপায়ে সমস্যা সমাধানে আগ্রহী। তবে, বেশ কিছু জায়গায় দু’পক্ষেরই আপত্তির কারণে সমঝোতায় আসতে পারছেন না মধ্যস্থতাকারীরা। সামরিক আগ্রাসনের ঝুঁকি এড়াতে চাইলে এই মতবিরোধ প্রশমন করতে উভয় পক্ষেরই নমনীয় হতে হবে। তবে, দু পক্ষের কেউই ছেড়ে কথা বলছেন না। যেমন, এক বক্তব্যে ইরানকে মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক সত্তা বলে অভিহিত করেন ট্রাম্প।
স্বাভাবিকভাবেই তার মন্তব্য ভালোভাবে নেয়নি ইরান। ওই মন্তব্যের জবাবে ইরানি প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, ইরানকে অস্থিতিশীল করে তুলতে চাইছেন ট্রাম্প। তিনি মনে করেন, চাইলেই আমাদের ধামকি দিয়ে, নিষেধাজ্ঞার চাপে রেখে পরে এসে মানবাধিকারের বুলি আওড়ানো যায়। অথচ তারাই মধ্যপ্রাচ্যে সবরকম অস্থিতিশীলতার জন্য দায়ী।
ইরানের অভিযোগ, তারা পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিবেচনা করলেও, যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার বা শিথিলের কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। পারমাণবিক কর্মসূচির জের ধরে ইরানের ওপর আরোপিত পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় দেশটির অর্থনীতিতে প্রায় ধস নেমেছে।