
ভেনেজুয়েলার উপকূলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের তেলের ট্যাংকার জব্দ করার ঘটনাকে ‘আন্তর্জাতিক জলদস্যুতা’ ও ‘চুরি’ হিসেবে অভিহিত করে এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে দেশটির সরকার। ভেনেজুয়েলা বলছে, তাদের তেল ও খনিজ সম্পদ লুটপাটের উদ্দেশ্যেই যুক্তরাষ্ট্র এই পরিকল্পিত আগ্রাসন চালাচ্ছে। গত বুধবার এক বিবৃতিতে নিকোলাস মাদুরোর সরকার এ অভিযোগ করে। এর আগে আজই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও মার্কিন কর্মকর্তারা ভেনেজুয়েলার ট্যাংকার জব্দের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ট্যাংকার দখলের ঘটনায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের কঠোর সমালোচনা করে ভেনেজুয়েলা সরকার বলেছে, ট্রাম্প এই ‘হামলার’ দায় স্বীকার করেছেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি স্পষ্ট করেছেন যে যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য ভেনেজুয়েলার তেল সম্পদ দখল করা। আমাদের দেশের বিরুদ্ধে এই আগ্রাসন মূলত জ্বালানি সম্পদ লুণ্ঠনের একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘস্থায়ী আগ্রাসনের আসল কারণ অবশেষে সবার সামনে এসেছে। ‘এটি অভিবাসন, মাদক পাচার, গণতন্ত্র বা মানবাধিকারের কোনো বিষয় নয়। আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ, আমাদের তেল ভেনেজুয়েলার জনগণের একচ্ছত্র মালিকানাধীন সম্পদের বিষয়,’ উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে। যুক্তরাষ্ট্রের এই কাজকে ‘সাম্রাজ্যবাদী আচরণ’ হিসেবে আখ্যায়িত করে ভেনেজুয়েলা বলেছে, তারা এই ‘গুরুতর আন্তর্জাতিক অপরাধের’ বিরুদ্ধে বিদ্যমান সব আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে অভিযোগ জানাবে। একই সঙ্গে সার্বভৌমত্ব, প্রাকৃতিক সম্পদ ও জাতীয় মর্যাদা রক্ষায় দৃঢ় সংকল্প নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাবে কারাকাস। এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ডোনাল্ড ট্রাম্প নিশ্চিত করেন যে মার্কিন সামরিক বাহিনী ভেনেজুয়েলার কাছে একটি বড় ধরনের অভিযান চালিয়ে তেলের ট্যাংকার জব্দ করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে অভিযোগ করেছেন, জব্দ করা জাহাজটি একটি ‘অবৈধ তেল পরিবহন নেটওয়ার্কের’ সঙ্গে যুক্ত ছিল, যা বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে সহায়তা করত। বিবিসির মার্কিন সহযোগী সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজকে যুক্তরাষ্ট্রের একজন জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘দ্য স্কিপার’ নামের ওই ট্যাংকার জব্দ করার অভিযানে দুটি হেলিকপ্টার, কোস্টগার্ডের ১০ সদস্য, ১০ জন মেরিন সেনা এবং স্পেশাল ফোর্স অংশ নেয়।