ঢাকা সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

গোপালগঞ্জে ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করলেন দুই উপদেষ্টা

গোপালগঞ্জে ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করলেন দুই উপদেষ্টা

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুই উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ও সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় তারা জানান, সহিংসতার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে দুই উপদেষ্টা গোপালগঞ্জে যান। বেলা দুইটার দিকে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তারা। এরপর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

এর আগে দুই উপদেষ্টা সহিংসতার ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত কারাগার, জুলাই স্মৃতিস্তম্ভের ফলক, এনসিপির সভাস্থল, জেলা প্রশাসকের বাসভবন পরিদর্শন করেন।

১৬ জুলাই এনসিপির কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা হামলা চালান। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হন। আহত হন অর্ধশতাধিক। সেদিন বিভিন্ন স্থাপনায় হামলার ঘটনা ঘটে।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, গোপালগঞ্জে সহিংসতার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এই তদন্ত কমিশনের নেতৃত্বে থাকবেন একজন বিচারপতি। এতে শুধু সরকারি কর্মকর্তা নয়, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরাও থাকবেন। তিনি বলেন, ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে একটি নতুন রাজনৈতিক দলের সভাকে কেন্দ্র করে কয়েকটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। এখানে কতগুলো প্রাণহানি হয়েছে। মানুষের জীবনের থেকে বড় কিছু আর হতে পারে না।

ফাওজুল কবির খান আরও বলেন, ‘গোপালগঞ্জকে তিনি কেয়ার করেন, এই বার্তাটি পৌঁছে দেওয়ার জন্য এবং ওই ঘটনার বিষয়ে জানার জন্য মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা আমাদের এখানে পাঠিয়েছেন। গোপালগঞ্জে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে, এটা যেন ভবিষ্যতে আর না ঘটে, উনি (প্রধান উপদেষ্টা) তার প্রশাসনকে সম্পূর্ণভাবে নির্দেশ দেবেন। আজ আমরা আসছি প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করার জন্য। এ ঘটনার গভীরে সরকার যাবে। এটা থেকে আমাদের ভবিষ্যতের শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে।’ ১৬ জুলাই এনসিপির কর্মসূচি নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ধারণা করেছিলেন কিছু একটা ঘটবে, কিন্তু ব্যাপকতা কেউ অনুমান করতে পারিনি। সীমিত সম্পদ দিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সেনাবাহিনী সবাই মিলে পরিস্থিতির মোকাবিলা করেছে। অনেক কষ্ট করেছে। এই ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা, সাংবাদিকেরা আহত হয়েছেন। নানা রকম ঝুঁকি সত্ত্বেও তারা দায়িত্ব পালন করেছেন, আমরা তাদের অভিনন্দন জানাতে এসেছি।’ তিনি বলেন, ‘এটা একটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, দলনিরপেক্ষ সরকার। এটা শহীদদের রক্তের ওপর প্রতিষ্ঠিত সরকার, ২০-৩০ হাজার আহতদের আত্মত্যাগের সরকার। সুতরাং এখানে গোপালগঞ্জ জেলাও যা, আমাদের নিজেদের জেলাও তাই।’

এ সময় পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, মন্ত্রিপরিষদসচিব শেখ আবদুর রশীদ, কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আবদুল হাফিজ, ঢাকা রেঞ্জের পুলিশের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক, জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান, পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলন শেষে দুই উপদেষ্টা গোপালগঞ্জ সার্কিট হাউসে মধ্যাহ্নভোজ করে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত