ঢাকা সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

কম্বোডিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের হুঁশিয়ারি থাইল্যান্ডের

* সীমান্তে ভারী গোলাবর্ষণে নিহত ১৬, আহত অর্ধশত * রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে বাস্তুচ্যুত লক্ষাধিক মানুষ * জরুরি বৈঠকে বসছে নিরাপত্তা পরিষদ
কম্বোডিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের হুঁশিয়ারি থাইল্যান্ডের

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সেনাদের মধ্যে গতকাল শুক্রবার সংঘর্ষ হয়েছে। এতে দুপক্ষের অন্তত ১৬ জন নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে ১৫ জন বেসামরিক নাগরিক এবং এক সেনাসদস্য রয়েছে। সংঘর্ষে ভারী অস্ত্রের পাশাপাশি রকেটও ব্যবহার করেছে। এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী সীমান্ত সংঘর্ষে থাইল্যান্ডের এক লাখেরও বেশি বেসামরিক মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ের উদ্দেশে সরে গেছে। এরমধ্যে থাইল্যান্ড হুঁশিয়ারি দিয়েছে, যদি এ সংঘাত চলতে থাকে তাহলে এটি পূর্ণমাত্রার যুদ্ধে র?প নিতে পারে। নিহতের সংখ্যা বাড়তে থাকায় সংঘর্ষ বন্ধে আন্তর্জাতিক মহল জোরালো আহ?ান জানিয়েছে ব্যাংকক।

জানা গেছে, থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যকার দীর্ঘদিনের সীমান্ত বিরোধ বৃহস্পতিবার হঠাৎ তীব্র সংঘর্ষে রূপ নেয়। এতে যুদ্ধবিমান, কামান, ট্যাংক ও স্থলসেনা ব্যবহার করে দু’পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালিয়েছে। পরিস্থিতি গুরুতর হওয়ায় জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ গতকাল এ সংকট নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেছে। থাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সীমান্তবর্তী চারটি প্রদেশ থেকে এক লাখেরও বেশি বেসামরিক মানুষকে সরিয়ে প্রায় ৩শ’টি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ১৪ জন নিহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে ১৩ জন বেসামরিক নাগরিক এবং এক সেনাসদস্য রয়েছে।

সীমান্ত থেকে ২০ কিলোমিটার দূরের কাম্বোডিয়ার সামরোং শহরে অবস্থানরত এএফপি’র সাংবাদিকরা শুক্রবার সকালেও দূর থেকে কামানের গোলার শব্দ শুনেছেন। স্থানীয় সময় সকাল ৬টার দিকে গোলাগুলি শুরু হলে অনেক পরিবার শিশু ও মালপত্র নিয়ে তড়িঘড়ি করে গাড়িতে উঠে পালিয়ে যেতে দেখা গেছে। প্রো বাক নামে ৪১ বছর বয়সী একজন ব্যক্তি এএফপিকে বলেন, ‘আমি সীমান্তের খুব কাছাকাছি থাকি। ভোরে আবার গোলাগুলি শুরু হওয়ায় আমরা ভীষণ ভয়ে আছি। এখন স্ত্রী-সন্তান নিয়ে মন্দিরে আশ্রয়ের খোঁজে যাচ্ছি। কবে বাড়ি ফিরতে পারবো, জানি না।’ এএফপি’র সাংবাদিকরা জানান, তারা সেনাদের রকেট লাঞ্চার নিয়ে সীমান্তের দিকে দ্রুত ছুটে যেতে দেখেছেন। লাখ লাখ বিদেশি পর্যটকদের জনপ্রিয় গন্তব্য এই দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের সীমান্ত বিরোধ হঠাৎ করে ভয়াবহ সংঘর্ষে র?প নিয়েছে। প্রায় ৮শ’ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সীমান্ত নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধ চলছে।

দীর্ঘ এই সীমান্তের বেশ কিছু এলাকার মালিকানা নিয়ে বিরোধ রয়েছে। ২০০৮ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে এসব এলাকায় কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়। ওই হামলায় অন্তত ২৮ জন নিহত এবং দশ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হন। ২০১৩ সালে জাতিসংঘের একটি আদালতের রায়ে সীমান্ত বিরোধ এক দশকের বেশি সময়ের জন্য শান্ত থাকে। তবে চলতি বছরের মে মাসে এক কম্বোডিয়ান সেনা নিহত হওয়ার পর ফের উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। থাই সেনাবাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার ছয়টি এলাকায় সংঘর্ষ হয়েছে । এর মধ্যে দুটি প্রাচীন মন্দিরের কাছেই সংঘর্ষ হয়। ট্যাংকের সহায়তায় স্থল সেনারা ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়। কাম্বোডিয়া থাইল্যান্ডে রকেট ও গোলা ছোড়ে, জবাবে থাইল্যান্ড এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দিয়ে কাম্বোডিয়ান সামরিক স্থাপনায় হামলা চালায়।এদিকে, উভয় দেশই প্রথম গুলি চালানোর জন্য একে অপরকে দায়ী করছে। থাইল্যান্ড অভিযোগ করেছে, তাদের সাধারণ নাগরিকদের বাড়ি-ঘরে হামলা চালিয়েছে কম্বোডিয়া। একটি হাসপাতাল কামানের গোলার আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং একটি রকেট একটি পেট্রোলপাম্পে আঘাত হানে। বৃহস্পতিবারের সংঘর্ষের কয়েক ঘণ্টা আগে, থাইল্যান্ড কাম্বোডিয়ার রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করে এবং নিজেদের রাষ্ট্রদূতকে ফিরিয়ে আনে। এর পেছনে কারণ ছিল, থাই সামরিক টহল দলের পাঁচ সদস্য ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে আহত হওয়া।প্রতিক্রিয়ায় কাম্বোডিয়া দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক ‘সর্বনি¤? পর্যায়ে’ নামিয়ে আনে। রাজধানী নম পেন থেকে থাই কূটনীতিকদের বহিষ্কার করে এবং নিজ দেশের একজন ছাড়া সব কূটনীতিককেও ফিরিয়ে আনে।

কাম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেতের অনুরোধে শুক্রবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্স ‘অবিলম্বে’ সংঘর্ষ বন্ধের আহ?ান জানিয়েছে। এদিকে, কম্বোডিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র চীন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন সংঘর্ষ নিয়ে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছে। পাশাপাশি, শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আহ?ান জানিয়েছে।

থাই সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘কম্বোডীয় বাহিনী ভারী অস্ত্র, ফিল্ড আর্টিলারি ও বিএমণ্ড২১ রকেট সিস্টেম ব্যবহার করে ধারাবাহিকভাবে গোলাবর্ষণ চালিয়েছে। পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে থাই সেনারা পাল্টা হামলা চালায়।’ গত বৃহস্পতিবার সীমান্তে উভয় পক্ষের গোলাবর্ষণে কমপক্ষে ১১ বেসামরিক লোক নিহত হওয়ার পর থাইল্যান্ড এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দিয়ে কম্বোডিয়ার লক্ষ্যবস্তুতে বোমা হামলা চালায়। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ দুটির মধ্যে পুরোনো সীমান্ত উত্তেজনা এ বিরল সশস্ত্র সংঘাতে র?প নিল। দুই দেশই সীমান্তের বিতর্কিত একটি এলাকায় সকালে সংঘর্ষ শুরুর জন্য একে অপরকে দায়ী করেছে। প্রথমে হালকা অস্ত্র থেকে গুলিবর্ষণের মাধ্যমে শুরু হওয়া এ সংঘর্ষ পরে ভারী গোলাবর্ষণে র?প নেয়। অন্তত ছয় স্থানে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে। এলাকাগুলোর ওপর সার্বভৌমত্ব নিয়ে বহু বছর ধরেই দুই পক্ষে বিতর্ক চলছে।

এ সংঘাতে থাইল্যান্ড ছয়টি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে। এর মধ্যে একটি দিয়ে কম্বোডিয়ার সামরিক অবস্থানে আঘাত হানা হয়। থাই সামরিক বাহিনীর ভাষ্য, এ বিমান হামলার উদ্দেশ্য ছিল সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানা। অন্যদিকে কম্বোডিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ হামলাকে ‘বেপরোয়া ও নৃশংস সামরিক আগ্রাসন’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। দুই দেশের মধ্যে গত ১৩ বছরে এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা। গত বুধবার থাইল্যান্ড নমপেন থেকে নিজের রাষ্ট্রদূতকে ফিরিয়ে আনে ও কম্বোডিয়ার রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করে। এর আগে থাই সেনাবাহিনীর একজন সদস্য স্থলমাইন বিস্ফোরণে পা হারান। থাইল্যান্ড দাবি করে, মাইনটি প্রতিপক্ষ বাহিনীর সদস্যরাই সম্প্রতি পুঁতে রেখেছিলেন। কম্বোডিয়া এ দাবিকে ‘মিথ্যা’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।

গত মে মাসের শেষ দিকে একটি সংক্ষিপ্ত সংঘর্ষে এক কম্বোডীয় সেনা নিহত হওয়ার পর থেকে দুই দেশ যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এর অংশ হিসেবে সীমান্তের দুই পাশেই সেনা বাড়ানো হয় এবং কূটনৈতিক টানাপোড়েনে থাইল্যান্ডের জোট সরকার প্রায় ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়। থাইল্যান্ড বলেছে, দেশটির তিনটি প্রদেশে গত বৃহস্পতিবার হামলায় ১২ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১১ জনই বেসামরিক নাগরিক। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে আট বছরের শিশুও আছে। আহত হয়েছেন আরও ৩১ জন। কম্বোডিয়ার হতাহতের সংখ্যা স্পষ্ট নয়। থাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচায়াচাই বলেন, ‘আমরা এর নিন্দা জানাই। সংঘর্ষের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ছাড়াই ভারী অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে, যা লড়াইয়ের ক্ষেত্রের বাইরে ঘটেছে...আন্তর্জাতিক আইনের তোয়াক্কা না করে এভাবে বল প্রয়োগ করা হয়েছে।’ ফুমথাম আরও বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ সমাধানের পক্ষেই রয়েছি এবং আলোচনা হওয়া উচিত। কিন্তু যা হয়েছে, তা একরকম উসকানি। আর আমরা আত্মরক্ষার্থে প্রতিক্রিয়া জানাতে বাধ্য হয়েছি।’

‘পূর্বপরিকল্পিত সামরিক আগ্রাসন’: থাইল্যান্ডের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সোমসাক থেপসুথিন সাংবাদিকদের জানান, সুরিন প্রদেশে একটি হাসপাতালে গোলাবর্ষণ হয়েছে। তিনি একে ‘যুদ্ধাপরাধ’ হিসেবে বিবেচনার দাবি জানান। কম্বোডিয়ার সরকার, প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ পর্যন্ত কোনো হতাহতের তথ্য দেয়নি এবং কতজন মানুষ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, তাও জানায়নি। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বর্তমান সভাপতির দায়িত্বে থাকা পাকিস্তানের কাছে পাঠানো একটি চিঠিতে কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত থাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে ‘অভিযোগহীন ও পূর্বপরিকল্পিত সামরিক আগ্রাসনের’ অভিযোগ এনে এটিকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেন। তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে দ্রুত বৈঠক ডাকারও অনুরোধ জানান। এদিকে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ায় সীমান্তবর্তী থাই গ্রামগুলো থেকে শিশু, বয়স্করাসহ অনেক মানুষ বালির বস্তা ও টায়ারে ঘেরা কংক্রিটের বাংকারে আশ্রয় নিয়েছেন।

থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়ার সংঘাতের নেপথ্যে: থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মাঝে আকস্মিক এই সংঘাতের সূত্রপাত হয়েছিল গত মে মাসে। ওই সময় থাইল্যান্ড, কাম্বোডিয়া ও লাওস সীমান্তের সংযোগকারী এমেরাল্ড ট্রায়াঙ্গল অঞ্চলে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সৈন্যদের মাঝে সংঘর্ষ হয়। এই সংঘর্ষে কম্বোডিয়ার এক সৈন্য নিহত হন। মে মাসের ওই ঘটনায় উভয় দেশেরে সামরিক বাহিনী জানায়, তারা আত্মরক্ষার্থে ব্যবস্থা নিয়েছে এবং সংঘর্ষের জন্য পরস্পরকে দায়ী করে। থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সামরিক নেতারা বলেন, তারা উত্তেজনা কমিয়ে আনার প্রত্যাশা করছেন। যদিও বাস্তবে দুই দেশই সীমান্তে সেনা মোতায়েন জোরদার এবং একে অপরকে হুঁশিয়ারি দিতে শুরু করে। কম্বোডিয়ার সঙ্গে সীমান্ত চেকপয়েন্টের নিয়ন্ত্রণ নেয় থাইল্যান্ড। একই সঙ্গে সীমান্ত পারাপারে বিধিনিষেধ আরোপের পাশাপাশি কাম্বোডিয়ার সীমান্ত লাগোয়া বিভিন? শহরে বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেয় থাই কর্তৃপক্ষ। সীমান্ত সংঘাতের সূত্র ধরে তৈরি হওয়া উত্তেজনার জবাবে থাইল্যান্ড থেকে ফল ও সবজি আমদানি বন্ধ করে দেয় কম্বোডিয়া। এছাড়া থাই সিনেমা ও টেলিভিশন নাটকের সম্প্রচারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে দেশটি। সম্প্রতি সীমান্ত এলাকায় একের পর এক স্থলমাইন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় প্রতিবেশী দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে চরম অবনতি ঘটে। এর জেরে উভয় দেশ নিজেদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সীমিত করে ফেলে এবং কূটনীতিকদের ফিরিয়ে নেয়। গত ১৬ জুলাই বিস্ফোরণে থাইল্যান্ডের এক সেনা পা হারান। পরবর্তী বিস্ফোরণ ঘটে গত বুধবার। এতে থাইল্যান্ডের অন্তত পাঁচ সৈন্য আহত হন। বিস্ফোরণে তাদের একজনের পা উড়ে যায়। বৃহস্পতিবারের সংঘর্ষে উত্তেজনাকর এই পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করে। এতে গতকাল পর্যন্ত থাইল্যান্ডের অন্তত ১৬ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত