ঢাকা সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

বঙ্গোপসাগরে ট্রলারডুবি

চার দিন পর নয় জেলে উদ্ধার, এখনও নিখোঁজ ছয়

চার দিন পর নয় জেলে উদ্ধার, এখনও নিখোঁজ ছয়

পটুয়াখালীর কুয়াকাটা উপকূলসংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার সময় ভয়াবহ ঝড়ের কবলে পড়ে ‘এফবি সাগরকন্যা’ নামে একটি মাছধরা ট্রলার ডুবে গেছে। প্রাণপণ লড়াই করে চার দিন সাগরে ভেসে থেকে ৯ জেলে বেঁচে ফিরলেও এখনও নিখোঁজ রয়েছেন ছয়জন।

নিখোঁজদের উদ্ধারে চেষ্টা চালাচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন ও কোস্ট গার্ড।

স্থানীয় জেলেরা জানান, গত ২৫ জুলাই (বৃহস্পতিবার) সকালে মহিপুর উপজেলার আড়ত ঘাট এলাকা থেকে ‘এফবি সাগরকন্যা’ ট্রলারটি রওনা দেয় ১৫ জন জেলেসহ। তারা গভীর সাগরে গিয়ে মাছ ধরছিলেন। পরদিন ২৬ জুলাই (শুক্রবার) সকাল ১০টার দিকে, বঙ্গোপসাগরের শেষ বয়ার ৭৫ কিলোমিটার গভীরে পৌঁছে তারা মাছ ধরার জন্য জাল ফেলেন। ঠিক সে সময় হঠাৎ করে সাগর উত্তাল হয়ে ওঠে। ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে বিশাল ঢেউ আছড়ে পড়ে ট্রলারের ওপর। মুহূর্তেই ডুবে যায় ট্রলারটি। উদ্ধার হওয়া জেলেরা জানান, ঝড় শুরু হলে তারা কোনোমতে বাঁশ, ফিশ ফ্লুট ও অন্যান্য ভেসে থাকা বস্তু ধরে প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করেন। প্রথমেই স্রোতের টানে এক জেলে সবার চোখের সামনে ভেসে যান। পরবর্তী সময়ে দু’দফায় আরও পাঁচজন স্রোতে হারিয়ে যান। তীব্র স্রোত ও পানির ঢেউয়ের সঙ্গে লড়তে লড়তে বাকি ৯ জেলে শেষ বয়া পর্যন্ত ভেসে আসেন। সেখানে তারা আরও প্রায় দুই দিন অপেক্ষা করেন। অবশেষে ২৮ জুলাই (সোমবার) রাতে, গভীর সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া অপর দুটি ট্রলার তাদের দেখতে পায় এবং উদ্ধার করে উপকূলে নিয়ে আসে। উদ্ধার হওয়ার পর ওই ৯ জন জেলেকে গতকাল মঙ্গলবার ভোররাতে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তারা পানিশূন্যতা, রোদে পোড়া ও মানসিক ট্রমার মধ্যে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এছাড়া এখনও নিখোঁজ ছয় জেলে হলেন, আবদুর রশিদ, নজরুল ইসলাম, রফিক, ইদ্রিস, হারুন ও কালাম। তাদের মধ্যে কয়েকজনের বাড়ি পটুয়াখালীর কলাপাড়া ও মহিপুর অঞ্চলে। পরিবারগুলো এখন গভীর উদ্বেগ ও শোকে মুহ্যমান। এ ঘটনায় মহিপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন ট্রলারটির মালিক কিশোর হাওলাদার। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদ হাসান বলেন, আমরা নিখোঁজ জেলেদের সন্ধানে কাজ করছি। কোস্ট গার্ড ও স্থানীয় মৎস্যজীবী সংগঠনগুলোকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ীরা বলছেন, বর্ষা মৌসুমে বারবার এমন মর্মান্তিক ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটলেও মাছ ধরার নিরাপত্তা ব্যবস্থা তেমন জোরদার হয়নি। তারা দ্রুত নিখোঁজ জেলেদের সন্ধানে সংশ্লিষ্টদের আরও কার্যকর উদ্যোগের দাবি জানান।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত