
আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের ফলে যারা অবৈধ ক্ষমতা ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়, তারা গণতান্ত্রিক পন্থায় আর কখনও রাষ্ট্রক্ষমতায় ফিরতে পারেনা। তাদের অবলম্বন হয় গুপ্ত রাজনীতি ও সন্ত্রাসবাদ। বাংলাদেশে কখনও সন্ত্রাসবাদ ও গুপ্ত রাজনীতি সফল হয়নি, হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নাই। গতকাল শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি আয়োজিত ‘রক্তঝরা জুলাই-আগস্ট: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক কথকতা ও আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি সাইফুল হক। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান।
মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘ইতিহাস বলে, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে যারা ক্ষমতা হারায় তাদের সামনে দুটি পথ খোলা থাকে। একটি হলো, নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে জাতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। দলের নীতি, নাম ও নেতৃত্ব পরিবর্তন করে গণতান্ত্রিক ধারায় নতুন করে রাজনীতি শুরু করা। আরেকটি হলো, আন্ডারগ্রাউন্ডে গিয়ে গুপ্ত রাজনীতি শুরু করা ও সন্ত্রাসবাদের আশ্রয় নেওয়া। প্রথমটির দিকে আওয়ামী লীগের কোনও আগ্রহ এখনও দেখা যাচ্ছেনা বরং গুপ্ত সন্ত্রাসবাদী পথে হাঁটার লক্ষণ আওয়ামী লীগের মধ?্যে ইতোমধ্যেই দেখা যাচ্ছে।’ তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘মানবতাবাদী গণতান্ত্রিক শক্তি যখন ভুল করে, তখন সেই ফাঁক দিয়ে আবার সন্ত্রাসবাদ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার সুযোগ পায়।’
ফ্যাসিবাদের সময়ে বিরোধী শক্তির ইস্পাত-দৃঢ় ঐক্যের কথা উল্লেখ করে মঞ্জু বলেন, ‘সেই সময়ে অনেক বিরোধী দলীয় নেতা এলাকায় টিকতে না পেরে ঢাকায় এসে রিকশা চালিয়েছেন, হকার হয়েছেন। এই গল্পগুলো আজ হারিয়ে গেছে।’
এখন যারা ‘মাস্টারমাইন্ড’ দাবি করছেন সবাইকে মাস্টারমাইন্ড ঘোষণা দিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এই অভ্যুত্থান যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে সেই দায়ও এসব মাস্টারমাইন্ডদের নিতে হবে। নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের পরিবর্তে যদি আপনারা কেবল ক্রেডিট নেওয়ার প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত থাকেন, তবে এক সময় আপনারাই ‘গণ ভিলেন’ হয়ে উঠবেন বলে সতর্ক করেন তিনি।
প্রয়োজনের তাগিদে বিএনপি-জামায়াত খুব দ্রুত ঐক্যবদ্ধ হয়, একসঙ্গে এক মার্কা নিয়ে নির্বাচন করে মন্তব্য করে মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘এটা দুঃখজনক, দেখা যায় স্বার্থের দ্বন্দ্বে মুহূর্তেই একে অপরকে রাজাকার, চাঁদাবাজ বলতেও তারা দেরি করে না। এই দ্বিচারিতার ফলেই ভবিষ্যতে বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদী রাজনীতির বিকাশের আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে।’
আলোচনার শেষে মঞ্জু বলেন, ‘আমাদের মত, পথ আলাদা হতে পারে। কিন্তু আধিপত্যবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে এক থাকতে হবে।’