ঢাকা বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

সুসংবাদ প্রতিদিন

কেশবপুরে আখের বাম্পার ফলন

কেশবপুরে আখের বাম্পার ফলন

যশোরের কেশবপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় লতারি জরা ইশ্বরদী-১৬ ও গেন্ডারী জাতের আখ চাষে বাম্পার ফলন হওয়ায় দিনে দিনে আখ চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা। প্রতি বছর উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে আঁখের আবাদ। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর কেশবপুর উপজেলায় ৫০ হেক্টর জমিতে আখ চাষ করা হয়েছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, মঙ্গলকোট, বাদুড়িয়া এলাকায় আখখেতে আখ পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। এ অঞ্চলের মাটি আখ চাষের উপযোগী হওয়ায় এখানকার কৃষকরা তাদের ভাগ্য বলাতে ১৯৯৫ সাল থেকে আখ চাষ শুরু করে আসছেন। আখ চাষ করে অনেকেই এখন স্বাবলম্বী। যে কারণে এই অঞ্চলের কৃষকরা আখচাষের প্রতি উৎসাহী হয়ে উঠেছে। আখ চাষ লাভজনক হওয়ায় বাদুড়িয়া, মঙ্গলকোট, পাঁচপোতা, বসুন্তিয়া, রামকৃষ্ণপুর, বড়েঙ্গা, পাঁচারই, কেদারপুরসহ বিভিন্ন গ্রামে আখচাষ করে থাকে। প্রতি বছর আখের বাম্পার ফলন হলেও ভালো বাজার ব্যবস্থাপনা না থাকায় চাষিরা তাদের আখের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। স্থানীয় আখচাষিরা তাদের নিজস্ব উদ্যোগে ২০০০ সালের দিকে যশোর-সাতক্ষীরা সড়কের বাদুড়িয়া মোড় নামক স্থানে রাস্তার দুই পাশে আঁখের হাট বসিয়ে প্রাথমিকভাবে আখ বেচাকেনা করে আসছে।

প্রতিদিন কেশবপুর ছাড়াও যশোর, মাগুরা, ঝিনাইদাহ জেলাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকারীরা ব্যবসায়ীরা বাদুড়ীয়া হাটে এসে লাখ লাখ টাকার আখ ক্রয় করে নিয়ে যায়। আর এসব আখ বহনের জন্য ব্যবহার হচ্ছে ট্রাক, পিকআপ, নছিমন, করিমন, আলমসাধুসহ বিভিন্ন ধরনের ইঞ্জিনচালিত যানবাহন। ভালো বাজার ব্যবস্থাপনা না থাকায় পাইকাররা এই সড়কের পাশে গাড়ি পার্কিং করে থাকে। যার ফলে যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভবনা রয়েছে। তাই আখশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় জায়গা বরাদ্দের জোর দাবি জানিয়েছেন আখ চাষি ও ব্যবসায়ীরা।

মঙ্গলকোট ইউনিয়নের বসুন্দিয়া গ্রামের আখ চাষি রহমত আলী, আহম্মাদ আলী, হাফিজুর রহমান, নাজমুল হোসেন, ত্রিমোহিনী ইউনিয়নের চাদড়া গ্রামের ফারুক হোসেন, সোহাগ হোসেন জানান, তারা প্রতি বছর আখ চাষ করেন। আখ চাষে ব্যাপক লাভজনক হওয়ায় কৃষকরা এ আখ চাষে ঝুঁকে পড়েছে। আখখেতে সময় মতো কৃষকরা পরিচর্যাসহ বিভিন্ন রাসায়নিক সার ব্যবহার করার ফলে প্রতি বিঘা জমিতে আখ রোপণ থেকে শুরু করে কাটা পর্যন্ত ১ লাখ টাকা খরচ হয়। আর এ আখ বিক্রি হয় ৩ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা। মঙ্গলকোট গ্রামের বাসুদেব জানান, আমার দুই বিঘা জমিতে আখ চাষ করা হয়েছে। আখ রোপণের ৬/৭ মাস পর আখ কাটা শুরু করেন চাষিরা। এছাড়া আখখেতে পেঁয়াজ-রসুনসহ বিভিন্ন সবজি রোপণ করা যায়।

উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, কেশবপুর উপজেলায় এ বছরে ৫০ হেক্টর জমিতে আখ চাষ হয়েছে। লাভবান হওয়ায় কৃষকরা আখ চাষে আগ্রহী বেশি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেকসোনা খাতুন বলেন, দক্ষিণ বঙ্গের একটি বৃহত্তম আঁখের হাট বসে কেশবপুরের বাদুড়িয়া মোড়ে। বাজারের জন্য নির্ধারিত জায়গা না থাকায় সড়কের দু’পাশে আখ রেখে বেচা-বিক্রি করে। যার ফলে দুর্ঘটনা আশঙ্কা বাড়ছে। মাঝেমধ্যে যানজটের সৃষ্টি হয়। হাট কমিটির পক্ষ থেকে আবেদন পেলে ও আশপাশে খাসজমি থাকলে বাজার স্থানান্তরের ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত