ঢাকা মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

সুসংবাদ প্রতিদিন

কুষ্টিয়ার মিরপুরে করলা চাষে কৃষকরা লাভবান

কুষ্টিয়ার মিরপুরে করলা চাষে কৃষকরা লাভবান

তিতা সবজি করলা চাষে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছেন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার স্থানীয় কৃষকরা। চলতি মৌসুমে করলা জাতীয় সবজির উৎপাদন উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় স্থানীয় বাজারে যেমন চাহিদা বেড়েছে, তেমনি কৃষকরাও ভালো দাম পাচ্ছেন।

জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, মিরপুর উপজেলার আমলা, ছাতিয়ানডাঙ্গা, তালবাড়িয়া ও পোড়াদহ ইউনিয়নে গত তিন বছরে করলা চাষ বেড়েছে প্রায় ৪০ শতাংশ। এ অঞ্চলের উঁচু জমি, জৈব সার ও খাল-বিলের প্রাকৃতিক সেচ সুবিধার কারণে চাষিরা করলা (তিতা সবজি) চাষের দিকে ঝুঁকছেন। মিরপুর উপজেলার আমলা ইউনিয়নের একসময়ের অভাবী কৃষক মিলন হোসেন এখন স্থানীয়ভাবে সফল সবজি চাষি হিসেবে পরিচিত। পাঁচবছর আগেও মিলন ছিলেন ধানের ওপর নির্ভশীল একজন কৃষক। বারবার লোকসান হওয়ায় ঋণের বোঝা তার ঘাড়ে চেপে বসে। হতাশ হয়ে পড়লেও কৃষি কাজ ছাড়েননি। ২০২১ সালে কৃষি অফিস থেকে একটি প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়ার পর তিনি করলা চাষে আগ্রহী হন। কৃষক মিলন জানান, করলা চাষে বছরে দুই-তিনটি ফসল, আয় হয় লক্ষাধিক টাকা। ২০২৫ সালের এ মৌসুমে কৃষক মিলন প্রায় ২ বিঘা জমিতে করলা চাষ করেছেন। তিনি জানান, এবার তার উৎপাদন খরচ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪৫ হাজার টাকা, আর আয় হবে প্রায় দেড় লাখ টাকার মতো। প্রতিদিন স্থানীয় বাজারে তার সবজি চলে যাচ্ছে পাইকারদের মাধ্যমে। কৃষিবিদরা জানান, করলা গ্রীষ্মকালীন ফসল, যা উচ্চ তাপমাত্রা ও অল্প পানি সহ্য করতে পারে। মিরপুর উপজেলার মাটি ও আবহাওয়া এই সবজির জন্য বেশ উপযোগী হওয়ায় উৎপাদনে ভালো ফল মিলছে।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, করলাসহ মিরপুরের সবজি সরবরাহ হয় কুষ্টিয়া শহর, ঝিনাইদহ, রাজবাড়ী ও ঢাকার বাজারেও। প্রতিকেজি করলার দাম পাইকারি বাজারে ৩০-৩৫ টাকা এবং আর খুচরায় ৫০-৬০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। স্বাস্থ্যের উপকারিতার জন্য শহরের বাজারে করলা বেশি জনপ্রিয়।

মিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, মিরপুরে করলা চাষের অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা কৃষকদের আধুনিক চাষ পদ্ধতি ও বালাইনাশক ব্যবস্থাপনা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সূফি রফিকুজ্জামান জানান, আগামী মৌসুমে জেলার মিরপুর উপজেলায় অন্তত ২০০ হেক্টর জমিতে করলা চাষের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এছাড়া একটি কৃষিপণ্য সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র স্থাপনের বিষয়ে ভাবা হচ্ছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত