
নিম্নচাপে বৈরী আবহাওয়া ও মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে গত ১৭ আগস্ট থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত টানা পাঁচ দিন ধরে উপকূলীয় জেলা ভোলাসহ তৎসংলগ্ন জেলাগুলোর নদ-নদী উত্তাল ছিল। ফলে এখানকার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সাগর উপকূলীয় এসব এলাকার নদনদী উত্তাল থাকায় দ্বীপ জেলার আভ্যন্তরীণ ২০ রুটের নৌচলাচল এখনও বন্ধ রেখেছে বাংলাদেশ আভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।
জেলায় থেমে থেমে টানা বৃষ্টিপাত ও বৈরী আবহাওয়ায় জেলার আভ্যন্তরীণ ২০ নৌরুটে লঞ্চ ও সি-ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকায় এখানকার যাত্রীদের ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। ভোলার আবহাওয়া অধিপ্তরের পর্যবেক্ষক মো. মনিরুজ্জামান জানিয়েছেন, জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি দুর্বল হয়ে পড়েছে। তবুও বৈরী আবহাওয়ার ফলে জেলায় এখনও ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত চলমান রয়েছে। এসময় সমুদ্র ও নদনদীগুলোর মাছধরা ট্রলার ও নৌকাগুলোকে উপকূলের কাছাকাছি নদী তীরবর্তী এলাকায় নিরাপদে থাকতে বলা হয়েছে।
এদিকে বৈরী আবহাওয়া ও বৃষ্টিপাতের ফলে বিপাকে পড়েছে এখানকার কর্মজীবী মানুষ। নদী উত্তাল হওয়ায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জেলার ইলিশা টু লক্ষ্মীপুর, মনপুরা টু ঢাকা, চরফ্যাশন টু ঢাকাসহ জেলার আভ্যন্তরীণ ২০টি নৌ-রুটে ছোট-বড় যাত্রীবাহী লঞ্চ ও সরকারি সি-ট্রাক চলাচল, বন্ধ রয়েছে। লঞ্চ ও সি-ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীরা রয়েছেন চরম ভোগান্তিতে। আভ্যন্তরীণ বন্ধ নৌরুটগুলো হচ্ছে- ভোলার ইলিশা- লক্ষ্মীপুর, ইলিশা-মেহেন্দিগঞ্জ, ভোলা-বাউফল, লালমোহন-নাজিরপুর, দৌলতখান-আলেকঝান্ডার, তজুমদ্দিন-মনপুরা, মনপুরা-হাতিয়া, চরফ্যাশন-মনপুরা, চরফ্যাশন-ঢাকা, মনপুরা-ঢাকা, চরফ্যাশনের ঘোষের হাট-ঢাকা, বোরহানউদ্দিনের হাকিমউদ্দিন-ঢাকা, ভোলার ভেদুরিয়াঘাট-বরিশালের লাহার হাট, চরফ্যাশনের কচ্ছপিয়া-ঢালচর, চরফ্যাশনের কচ্ছপিয়া-কুকরী-মুকরী, চরফ্যাশনের কচ্ছপিয়া-চরপাতিলা, চরফ্যাশনের আবুবকরপুর-দশমিনা, ভোলা সদরের তুলাতুলি-মাঝের চর, ভোলা সদরের ইলিশা-রামদাসপুর এবং ভোলা সদরের নাছির মাঝি-দৌলতখানের চর মদনপুর ইউনিয়ন।
তবে বাংলাদেশ আভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্পোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি)’র ভোলা অঞ্চলের ব্যবস্থাপক মো. কাউছার আহমেদ জানান, এ রুটে লঞ্চ ও সি-ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকায় জীবিকার তাগিদে ফেরিতে কিছু যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে। বাংলাদেশ আভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)’র ভোলার বন্দর কর্মকর্তা রিয়াদ হোসেন জানান, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া না কাটতে জেলার আভ্যন্তরীণ নৌরুটে কোনোপ্রকার লঞ্চ চলাচল করতে দেয়া হবেনা।
ভোলার লঞ্চ মালিক মেসার্স ব্রাদার্স নেভিগেশন কোম্পানির ম্যানেজার মে. আলাউদ্দিন জানান, নদী উত্তাল থাকায় ডেঞ্জার জোনে এখনও তাদের কর্ণফুলী সিরিজের লঞ্চগুলোর চলাচল বন্ধ রেখেছেন। তাই হাতিয়া, মনপুরা, চরফ্যাশন ও হাকিমুদ্দিন ঘাট থেকে ঢাকা রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।