ঢাকা শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

জাতিসংঘে একই দিনে ভাষণ দেবেন ইউনূস শেহবাজ-মোদি

জাতিসংঘে একই দিনে ভাষণ দেবেন ইউনূস শেহবাজ-মোদি

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে একই দিনে ভাষণ দেবেন বাংলাদেশের অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

আগামী সেপ্টেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে জাতিসংঘে এই অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, গত মে মাসে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চার দিনব্যাপী উত্তেজনা দক্ষিণ এশিয়াকে পারমাণবিক সংঘাতের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল। সেই ঘটনার পর এবার প্রথমবারের মতো ভারত ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী একই দিনে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৮০তম অধিবেশনে ভাষণ দেবেন। আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য অধিবেশনে এই ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে। সেদিনই অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের। জাতিসংঘ কর্মকর্তাদের প্রকাশিত প্রাথমিক সূচি অনুযায়ী, ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির পর বক্তব্য রাখবেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ। এতে ইসলামাবাদের হাতে সরাসরি দিল্লির বক্তব্যের জবাব দেওয়ার কৌশলগত সুযোগ তৈরি হবে।

দ্য ডন বলছে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন। এই দলে থাকবেন উপ-প্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার ও প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা তারিক ফাতেমি। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশন আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর। তবে উচ্চপর্যায়ের সাধারণ বিতর্ক চলবে ২৩ থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। প্রথম দিনে ব্রাজিল বক্তব্য রাখবে, এরপর যুক্তরাষ্ট্র।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম ভাষণ দেবেন জাতিসংঘের মঞ্চে। এ বছরের মূল প্রতিপাদ্য হলো- ‘একসঙ্গে ভালো: শান্তি, উন্নয়ন ও মানবাধিকারের পথে ৮০ বছর ও আরও বেশি।’

প্রাথমিক তালিকা অনুযায়ী, ভারতের প্রধানমন্ত্রী সকালে বক্তব্য রাখবেন। আর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী, সঙ্গে ইসরায়েল, চীন ও বাংলাদেশের প্রধানরাও একই দিন বিকালে বক্তব্য দেওয়ার সূচি রয়েছে। দিল্লির কর্মকর্তারা এরইমধ্যে ইঙ্গিত দিয়েছেন, তাদের প্রধানমন্ত্রী সাধারণ বিতর্কে অংশ নেবেন।

পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও শেহবাজ শরিফের পর বক্তব্য প্রদান দুই দেশের অবস্থানের পার্থক্য স্পষ্ট করে তুলবে। ধারণা করা হচ্ছে, ভারত সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার বিষয়টিকে প্রাধান্য দেবে। আর পাকিস্তান সরাসরি প্রতিক্রিয়া জানিয়ে কাশ্মীর ও আঞ্চলিক শান্তিকে মূল ইস্যু করে তুলবে।

একজন জ্যেষ্ঠ পাকিস্তানি কূটনীতিক বলেন, ‘বিশ্ব দেখেছে দক্ষিণ এশিয়া কত দ্রুত সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে। কাশ্মীর সমস্যার ন্যায়সঙ্গত সমাধান ছাড়া জাতিসংঘের শান্তি, উন্নয়ন ও মানবাধিকারের প্রতিশ্রুতি আমাদের অঞ্চলে কখনও পূর্ণ হবে না।’

বিশ্লেষকদের মতে, ৮০তম জাতিসংঘ অধিবেশন সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ব্যস্ত কূটনৈতিক মৌসুম হয়ে উঠবে। কারণ, এসময় গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ, ইউক্রেন সংঘাত চলার পাশাপাশি গত মে মাসের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের প্রভাব এখনও রয়েছে। পাকিস্তানের বার্তা স্পষ্ট- দক্ষিণ এশিয়ার উত্তেজনা উপেক্ষা করার সুযোগ নেই, আর টেকসই শান্তির চাবিকাঠি হলো কাশ্মীর।

প্রাথমিক সূচি অনুযায়ী, আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর জলবায়ুবিষয়ক বিশেষ অধিবেশন এবং ২৬ সেপ্টেম্বর পারমাণবিক অস্ত্র পুরোপুরি বিলুপ্তির আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত