ঢাকা রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

সুসংবাদ প্রতিদিন

মির্জাগঞ্জে হাঁসের খামার করে নারী উদ্যোক্তা স্বাবলম্বী

মির্জাগঞ্জে হাঁসের খামার করে নারী উদ্যোক্তা স্বাবলম্বী

বাড়ির পাশে বিশাল চর, সেখানে খোলা আকাশের নিচে হেঁটে যাচ্ছে সারি সারি হাঁস। এ যেন হাঁসের মিছিল। প্রতিদিন সকাল হলেই খাদ্যের সন্ধানে বাড়ির সামনের চরে বের হয় যায় হাঁসগুলো।

থৈ থৈ পানিতে হাবুডুবু খেয়ে খালেবিলে, পুকুরে ও ডোবায় খাদ্যের সন্ধান করে বেড়ায়। সারি সারি হাঁসগুলো দেখে মনে হয় যেন, হাঁসের কোন প্রাকৃতিক অভয়ারণ্য। পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে এভাবেই অত্যন্ত যত্নে হাঁস লালন-পালন করে সাফল্য অর্জন করে ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটিয়েছেন এক নারী উদ্যোক্তা। তিনি হলেন উপজেলার মির্জাগঞ্জ গ্রামের প্রবাসী রহিমের স্ত্রী ফাহিমা বেগম (৪০)। তিনি দুই সন্তানের জননী।

দেশীয় পদ্ধতিতে হাঁস পালনের মাধ্যমে বর্তমানে তিনি মাসে প্রায় ৫০-৬০ হাজার টাকা আয় করছেন। তার সাফল্য দেখে এলাকার অনেক বেকার নারী ও যুবক হাঁস পালনে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। তবে সরকারি অনুদান ও প্রশিক্ষণ পেলে তিনি খামারটিকে আরও বড় করে বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ সরকারের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।

সফল নারী উদ্যোক্তা খামারি ফাহিমা বেগম জানান, দুই বছর আগে তার স্বামী বিদেশে যাওয়ার পর বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে এই হাঁসের ব্যবসা শুরু করেন তিনি। শুরুতে অল্প সংখ্যক হাঁসের বাচ্চা কিনে শুরু করেন খামারি জীবন। ৬ মাস পর হাঁসগুলো ডিম দিতে শুরু করলে ডিম বিক্রি থেকে দ্বিগুণেরও বেশি লাভ হয়। এরপর প্রতিবার ডিমপাড়া শেষে হাঁস বিক্রি করে আরও মুনাফা পান। এতে তার উৎসাহ বেড়ে যায় এবং প্রতিবছর হাঁসের সংখ্যা বাড়তে থাকে। তিনি বিভিন্ন জায়গা থেকে হাঁসের বাচ্চা সংগ্রহ করে লালন-পালন করে বড় করে ডিমপাড়ার উপযোগী করে তোলেন। বর্তমানে তার খামারে প্রায় ৭০০ (সাত শত) ডিম পাড়ার হাঁস রয়েছে। যার মূল্য প্রায় পাঁচ লাখ টাকা। হাঁসের ফার্ম থেকে প্রতিদিন তিন থেকে সাড়ে তিনশত ডিম পায়। সেগুলো বিক্রি করে সব খরচ বাদ দিয়ে প্রতিদিন আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা লাভ থাকে। তিনি আরও জানান, খরচ কমানোর জন্য হাঁসগুলোকে প্রতিদিন বাড়ির পাশে চরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাকৃতিক খাবার যেমন শামুক, ঝিনুক, ধান ইত্যাদি খেয়ে সন্ধ্যায় হাঁসগুলো নিজ আশ্রয়ে ফিরে আসে। এতে খাবারের খরচও কমে যায়।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ফাহিমা বেগম নারী হয়েও হাঁস পালন করে যেভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন তাতে তিনি এলাকার বেকার নারী-যুবকদের কাছে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আলাউদ্দিন মাসুদ বলেন, তাকে প্রয়োজনীয় টিকা এবং পরামর্শ দেওয়া হবে। তাছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে কোনো বরাদ্দ আসলে তার জন্য ব্যবস্থা করা হবে। আমরা চেষ্টা করব সরকারের সকল সুযোগ তাকে দেওয়ার জন্য।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত