
ভারতে অবস্থানরত বহু রোহিঙ্গা শরণার্থীকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। সংস্থাটির তরফ থেকে গতকাল শুক্রবার প্রকাশিত বিবৃতিতে দাবি করা হয়, ভারতে থাকা শতাধিক রোহিঙ্গার সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও নির্বিচারে আটকের তথ্য পেয়েছে তারা।
এইচআরডব্লিউ এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ইলেইন পিয়ারসন বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের তাড়িয়ে দিয়ে মানুষের জীবন ও আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি চরম অবহেলার পরিচয় দিয়েছে ভারত সরকার।
মে মাসে ভারতের ক্ষমতাসীন দল ‘ভারতীয় জনতা পার্টি’ (বিজেপি) অবৈধ অভিবাসীদের উৎখাতের অভিযান শুরু করে, যার বলি হয় অনেক রোহিঙ্গা শরণার্থী ও বাংলা-ভাষী মুসলিম। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থায় (ইউএনএইচসিআর) নিবন্ধিত থাকার পরও অন্তত ১৯২ জন রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়। কর্তৃপক্ষ আরও ৪০ জনকে মিয়ানমারের উপকূলের কাছাকাছি নিয়ে সাঁতার কেটে তীরে যেতে বাধ্য করে বলে অভিযোগ রয়েছে। দমন-নীতির ভয়ে অনেকে বাংলাদেশে পালিয়ে যায়।
বাংলাদেশে কক্সবাজার শরণার্থী শিবিরে সম্প্রতি ভারতে থেকে আসা নয়জন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষের সাক্ষাৎকার নিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ । মে মাসে বিতাড়িত ছয়জন অভিযোগ করেন, ভারতীয় কর্তৃপক্ষ তাদের অর্থ, মুঠোফোন এবং ইউএনএইচসিআর নিবন্ধন কার্ড কেড়ে নিয়েছে। পুলিশি হুমকির মুখে অন্য তিনজন যথাক্রমে জম্মু-কাশ্মীর, অন্ধ্র প্রদেশ ও দিল্লি থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন।
ভারতে আনুমানিক ৪০ হাজার রোহিঙ্গা বাস করেন, যাদের অন্তত ২০ হাজার ইউএনএইচসিআরে নিবন্ধিত। ভারত ১৯৫১ সালের জাতিসংঘ শরণার্থী কনভেনশন বা এর ১৯৬৭ সালের প্রোটোকলে স্বাক্ষরকারী না হলেও, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ‘নন-রিফাউলমেন্ট’ নীতির অধীন। এই নীতি অনুযায়ী কাউকে এমন দেশে ফেরত পাঠানো নিষেধ যেখানে তার জীবন বা স্বাধীনতার হুমকি রয়েছে।
ভারতের আসাম রাজ্যের গোলপাড়া জেলায় আটক ৩৭ বছর বয়সী এক রোহিঙ্গা নারী বলেন, ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীরা ৬ মে রাতে বন্দুকের মুখে স্বামী ও তিন সন্তানসহ তাদের বাংলাদেশে ঢুকতে বাধ্য করে। পরিবারটি ২০১২ সালে রাখাইন রাজ্যে সামরিক বাহিনীর জাতিগত নিধন অভিযান থেকে পালিয়ে মিয়ানমার ছেড়েছিল, কিন্তু ভারতের আসামে এক দশকেরও বেশি সময় জেলে কাটিয়েছে। ৬ মে দিল্লিতে ১৩ জন নারীসহ ৪০ জন মুসলিম ও খ্রিস্টান রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়। এরপর তাদের আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে নিয়ে যাওয়া হয় এবং একটি ভারতীয় নৌবাহিনীর জাহাজে উঠতে বাধ্য করা হয়।
শরণার্থীদের অভিযোগ, জাহাজের কর্মীরা তাদের মারধর করেছে। এক খ্রিস্টান রোহিঙ্গা ব্যক্তি বলেন, মিয়ানমার উপকূলের কাছে পৌঁছালে শরণার্থীদের লাইফ জ্যাকেট দিয়ে সাগরে ফেলে দেওয়া হয়।
মিয়ানমারবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক টম অ্যান্ড্রুজ বলেন, যাদের জীবন এবং নিরাপত্তার জন্য আন্তর্জাতিক সুরক্ষা প্রয়োজন, তার প্রতি এই ঘটনায় প্রকাশ্যে অবহেলা দেখানো হয়েছে।
পরিস্থিতি বেগতিক দেখে কিছু রোহিঙ্গা পরিবার ভারত থেকে বাংলাদেশে আসার সিদ্ধান্ত নেয়। তাদের অভিযোগ, ভারতীয় পুলিশ তাদের মারধর করেছে। হায়দ্রাবাদে বসবাসকারী ৪০ বছর বয়সী একজন ইউএনএইচসিআর নিবন্ধিত রোহিঙ্গা বলেন, ১৫ মে তিনি স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে একটি রোহিঙ্গা দলের সঙ্গে ট্রেনে যাত্রা করেন। কিন্তু ত্রিপুরার একটি রেলওয়ে স্টেশনে পুলিশ তাদের আটক করে, তথ্য নেয়, এরপর তাদের প্রহার করে।
তিনি দাবি করেন, আমার চার বছরের মেয়েকেও ওরা মেরেছে। নারীদেরও অপমান করেছে। তারা আমাদের ফোন, ২০ হাজার রুপি সব কিছু নিয়ে গেছে।
তার অভিযোগ, পুলিশ তাদের বাংলাদেশি পরিচয় স্বীকার এবং ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টার কারণে ভারত সরকার তাদের গ্রেফতার করে ফেরত পাঠাচ্ছে- এই বিবৃতি মেনে নিতে বাধ্য করে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, এসব ঘটনায় ভারতে থাকা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে চরম নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করেছে।
এদিকে, ভারতের সর্বোচ্চ আদালত ঘোষণা করেছে, দেশটিতে থাকা রোহিঙ্গারা ‘শরণার্থী’ নাকি ‘অবৈধ অনুপ্রবেশকারী’ হিসেবে অধিকার ও সুরক্ষা পাবে, সেটা তারা নির্ধারণ করবে। এ সংক্রান্ত পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ২৩ সেপ্টেম্বর।
এর আগে, রোহিঙ্গাদের নির্বিচারে বিতাড়ন বন্ধে আদেশ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে আদালত এবং রোহিঙ্গাদের সাগরে ফেলে দেওয়ার অভিযোগকে বানানো গল্প বলে উড়িয়ে দেয়।
পিয়ারসন বলেন, ভারত সরকারকে অবিলম্বে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ভয় দেখানো, নির্বিচারে আটক ও অবৈধ বহিষ্কার বন্ধ করতে হবে এবং নিরপেক্ষভাবে তাদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ তদন্ত করতে হবে। তাদেরকে শরণার্থী হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে এবং অধিকার রক্ষায় জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার সঙ্গে কাজ করতে হবে।
এদিকে নৌবাহিনীর জাহাজে তুলে মিয়ানমারের নিপীড়িত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সদস্যদের সমুদ্রে ফেলে দিচ্ছে ভারত। এমনই অভিযোগ করেছেন ৪০ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী। তাদের অভিযোগ, রাজধানী দিল্লি থেকে আটক করে নৌবাহিনীর জাহাজে তুলে সাগরে ফেলে দেওয়া হয় তাদের।
এমন অবস্থায় মিয়ানমারের ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে এসব রোহিঙ্গা শরণার্থী আবারও অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখে দাঁড়িয়ে। জাতিসংঘ বলছে, ভারত রোহিঙ্গাদের জীবনকে ‘চরম ঝুঁকির’ মুখে ঠেলে দিয়েছে। গতকাল শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, গত ৯ মে সর্বশেষ ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেন নুরুল আমিন। ফোনালাপটি ছিল সংক্ষিপ্ত, কিন্তু ভয়ংকর সংবাদ বয়ে আনে। তিনি জানতে পারেন, তার ভাই খাইরুলসহ পরিবারের আরও চারজনকে ভারতের সরকার মিয়ানমারে ফেরত পাঠিয়েছে। মূলত ওই দেশটি থেকে তারা বহু বছর আগে প্রাণভয়ে পালিয়ে এসেছিলেন।
বর্তমানে মিয়ানমার ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে রয়েছে, সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ২০২১ সালে ক্ষমতা দখলকারী জান্তার বিরুদ্ধে লড়ছে জাতিগত গোষ্ঠী ও প্রতিরোধ বাহিনী। এমন পরিস্থিতিতে আমিনের পরিবারের সঙ্গে পুনর্মিলনের সম্ভাবনা কার্যত নেই বললেই চলে।
দিল্লিতে বসে ২৪ বছর বয়সী আমিন বলেন, আমার বাবা-মা ও স্বজনেরা কী যন্ত্রণার মধ্যে আছেন, সেটা কল্পনাও করতে পারিনি।
বিবিসি বলছে, তাদের দিল্লি থেকে সরিয়ে নেওয়ার তিন মাস পর বিবিসি মিয়ানমারে ওই রোহিঙ্গাদের খুঁজে পায়। বেশিরভাগই আশ্রয় নিয়েছেন বাহটু আর্মি (বিএইচএ)-এর কাছে। বিএইচএ মূলত একটি প্রতিরোধ গোষ্ঠী যারা দক্ষিণ-পশ্চিম মিয়ানমারে জান্তার সেনাদের বিরুদ্ধে লড়ছে।
ভিডিও কলে সৈয়দ নূর বলেন, আমরা এখানে নিরাপদ নই। পুরো এলাকা যেন যুদ্ধক্ষেত্র”। কাঠের তৈরি ওই আশ্রয়ে তার সঙ্গে ছিলেন আরও ছয়জন রোহিঙ্গা।
শরণার্থীরা ও দিল্লিতে থাকা তাদের স্বজনদের ভাষ্য, বিশেষজ্ঞদের তদন্ত ও তথ্য জোগাড় করে বিবিসি ঘটনার ধারাবাহিকতা পুনর্গঠন করেছে।
তথ্য অনুযায়ী, তাদের দিল্লি থেকে বিমানে বঙ্গোপসাগরের একটি দ্বীপে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে নৌবাহিনীর জাহাজে তুলে নিয়ে শেষে আন্দামান সাগরে ফেলে দেওয়া হয়, যদিও লাইফ জ্যাকেট দেওয়া হয়েছিল। পরে সাঁতরে তীরে ওঠেন তারা। এখন তারা মিয়ানমারে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি। এই দেশটি থেকে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নিপীড়ন এড়াতে পালিয়ে এসেছেন বহু মুসলিম রোহিঙ্গা।
জন নামে এক রোহিঙ্গা ফোনে তার ভাইকে জানান, আমাদের হাত বেঁধে, চোখণ্ডমুখ ঢেকে বন্দির মতো জাহাজে তোলা হলো। তারপর সমুদ্রে ফেলে দিলো।
ক্ষোভ প্রকাশ করে নুরুল আমিন বলেন, মানুষকে কীভাবে এভাবে সমুদ্রে ফেলে দেওয়া যায়? মানবতা পৃথিবীতে এখনও বেঁচে আছে, কিন্তু ভারতের সরকারের মধ্যে আমি কোনো মানবতা দেখিনি।”
মিয়ানমারে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক টমাস অ্যান্ড্রুজ বলেন, এসব অভিযোগ প্রমাণের মতো “গুরুত্বপূর্ণ তথ্য” তার হাতে আছে। তিনি জেনেভায় ভারতের মিশন প্রধানের কাছে এ সংক্রান্ত প্রমাণও জমা দিয়েছেন, কিন্তু কোনো উত্তর পাননি। বিবিসি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গেও বহুবার যোগাযোগ করেছে, কিন্তু কোনো সাড়া মেলেনি।
ভারতে রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি আগে থেকেই ঝুঁকিপূর্ণ। দেশটি তাদের শরণার্থী হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না; বরং ‘অবৈধ অভিবাসী’ হিসেবে চিহ্নিত করে। বর্তমানে ভারতে প্রায় ২৩ হাজার ৮০০ রোহিঙ্গা জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআরের নিবন্ধিত হলেও, হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতে প্রকৃত সংখ্যা ৪০ হাজারেরও বেশি।
২০১৭ সালে মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর ভয়াবহ অভিযানের পর লাখো রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। বর্তমানে বাংলাদেশে রোহিঙ্গার সংখ্যা ১০ লাখেরও বেশি।
বিবিসি বলছে, চলতি বছরের ৬ মে দিল্লির বিভিন্ন জায়গায় বসবাসরত ৪০ জন রোহিঙ্গাকে স্থানীয় থানায় ডেকে পাঠানো হয়। বলা হয়েছিল, সরকারনির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী তাদের ছবি ও আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করা হবে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষার পর তাদের শহরের ইন্দরলোক আটক কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়।
আমিন জানান, সেই সময় তার ভাই ফোন করে জানায় তাদের মিয়ানমারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এবং আইনজীবীর সাহায্য নিতে ও ইউএনএইচসিআরকে খবর দিতে বলেন। এরপর ৭ মে তাদের হিন্দন বিমানবন্দর থেকে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে পাঠানো হয়। সেখানে পৌঁছে বাসে করে নিয়ে যাওয়া হয়। বাসগুলোর গায়ে লেখা ছিল “ভারতীয় নৌবাহিনী”।
সৈয়দ নূর বলেন, বাসে উঠেই আমাদের হাত প্লাস্টিক দিয়ে বেঁধে ফেলা হয়, আর মুখ কালো কাপড়ে ঢেকে দেওয়া হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই তাদের নৌবাহিনীর একটি জাহাজে তোলা হয়। বড় যুদ্ধজাহাজটিতে তারা প্রায় ১৪ ঘণ্টা ছিলেন। খাওয়ানো হয়েছিল ভাত, ডাল আর পনির।
কিন্তু এ সময় অনেককে মারধর করা হয়, অপমান করা হয়। সৈয়দ নূর বলছেন, আমাদের সঙ্গে খুব খারাপ ব্যবহার করেছে। কয়েকজনকে বারবার চড় মারা হয়, অনেককে মারধর করা হয়।
ভিডিও কলে ফয়াজ উল্লাহ তার হাতে আঘাতের দাগ দেখান। তিনি জানান, তাকে ঘুষি, চড় মারা হয়েছিল, বাঁশ দিয়ে খোঁচানো হয়েছিল। জিজ্ঞেস করা হয়েছিল“ভারতে অবৈধভাবে কেন এসেছো?”
৪০ জনের মধ্যে ১৫ জন ছিলেন খ্রিস্টান রোহিঙ্গা। নূরের দাবি, তাদের জিজ্ঞেস করা হয়েছিল কেন ইসলাম ছেড়ে খ্রিস্টধর্ম নিয়েছেন, কেন হিন্দু হননি। এমনকি তাদের খতনা হয়েছে কি না সেটিও পরীক্ষা করা হয়।
এমনকি তাদের মধ্যে একজনকে কাশ্মিরের পেহেলগাম হামলায় জড়িত বলে অভিযুক্ত করা হয়। অথচ রোহিঙ্গাদের সঙ্গে এ ঘটনার কোনো সম্পর্কের প্রমাণ নেই। এরপর ৮ মে সন্ধ্যায় তাদের ছোট ছোট রাবারের নৌকায় তুলে সমুদ্রে নামতে বাধ্য করা হয়। হাতে লাইফ জ্যাকেট দেওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল, তারা ইন্দোনেশিয়ায় পৌঁছেছেন। কিন্তু আসলে তারা ছিল মিয়ানমারে। এরপর ৯ মে ভোরে স্থানীয় জেলেরা তাদের খুঁজে পান। জেলেরা তাদের ফোন ব্যবহার করতে দেন, সেখান থেকেই তারা ভারতে থাকা স্বজনদের খবর দেন। এরপর থেকে বাহটু আর্মি ওই রোহিঙ্গাদের খাবার ও আশ্রয় দিচ্ছে। কিন্তু ভারতে থাকা পরিবারগুলো তাদের ভাগ্য নিয়ে ভীষণ আতঙ্কে।
জাতিসংঘ বলেছে, ভারত রোহিঙ্গাদের আন্দামান সাগরে ফেলে দিয়ে তাদের জীবনকে “চরম ঝুঁকিতে” ফেলেছে।
এদিতে গত ১৭ মে নুরুল আমিনসহ তার এক আত্মীয় ভারতের সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন, যেন রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে আনা হয়, এভাবে নির্বাসনে পাঠানোর কাজ বন্ধ করা হয় এবং ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। তবে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের এক বিচারপতি অভিযোগগুলোকে “অবাস্তব কল্পনা” বলে মন্তব্য করেন। মামলার শুনানি স্থগিত হয়ে ২৯ সেপ্টেম্বর নির্ধারিত হয়েছে। তখন সিদ্ধান্ত হবে, রোহিঙ্গারা শরণার্থী নাকি অবৈধ অভিবাসী এবং তাদের ফেরত পাঠানো যাবে কি না। ভারতের রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মধ্যে এ ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকে গা ঢাকা দিয়েছেন, কেউ কেউ আর বাসায় থাকেন না।