ঢাকা শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

আজ সেন্টমার্টিন যাচ্ছে তিন জাহাজ

আজ সেন্টমার্টিন যাচ্ছে তিন জাহাজ

নানা আলোচনা, নীতি, সিদ্ধান্ত পেরিয়ে বহু প্রতীক্ষিত প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন যাত্রা শুরু হচ্ছে। ১ ডিসেম্বর সোমবার থেকে পর্যটক নিয়ে দ্বীপে যাবে ৩টি জাহাজ। একইসঙ্গে আরও ৪টি জাহাজ প্রস্তুত রয়েছে এবং প্রশাসনের অনুমতি পেলে ধারাবাহিকভাবে দ্বীপে যাত্রা শুরু করবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

তারা বলছেন, আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত দুই মাস পর্যটক নিয়ে কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়াস্থ বিআইডব্লিউটিএ-এর ঘাট থেকে সেন্টমার্টিনে চলাচল অব্যাহত থাকবে। সেন্টমার্টিন রুটের পর্যটকবাহী জাহাজ মালিকদের সংগঠন ‘সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’-এর সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলছেন, ১ ডিসেম্বর কর্ণফুলী এক্সপ্রেস, এমবি বার আউলিয়া ও কেয়ারি সিন্দাবাদ এই ৩টি জাহাজ সকাল ৭টায় যাত্রা শুরু করবে। এরইমধ্যে যে সব পর্যটকরা টিকিট কেটেছেন জাহাজ কর্তৃপক্ষ তাদের ভ্রমণ অনুমতি সংগ্রহ করে করে দিচ্ছে। ৩টি জাহাজ সকাল পর্যন্ত টিকিট বিক্রি করবে। ফলে মোট যাত্রীর সংখ্যা নিশ্চিত করতে পারেননি। তিনি।

তিনি বলেন, ২ হাজারের অধিক কোনো টিকিট বিক্রি করা হবে না। সরকারি সিদ্ধান্ত মেনেই চলবে জাহাজ। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি এই দুই মাস কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়াস্থ বিআইডব্লিউটিএ-এর ঘাট থেকে সেন্টমার্টিনে পর্যটক নিয়ে জাহাজ চলাচল করবে। ঘাটে প্রস্তুত থাকা অপর ৪ জাহাজগুলো হলো- এমভি বে ক্রুজ, এমভি কাজল, কেয়ারী ক্রুজ এন্ড ডাইন ও আটলান্টিক ক্রুজ।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, এমভি কর্ণফুলি এক্সপ্রেস, এমভি বারো আউলিয়া, কেয়ারি সিন্দাবাদ ও কেয়ারি ক্রুজ অ্যান্ড ডাইন নামের চারটি জাহাজ কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিন নৌপথে চলাচলের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে অনুমতি পেয়েছে। তিনি বলেন, সেন্টমার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে জেলা প্রশাসন। আগে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নিরাপত্তার কারণে এখন কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্টমার্টিন যাতায়াত করবে। তার জন্য সব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন।

পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, সেন্টমার্টিনে পর্যটক আসা-যাওয়ার সময় জাহাজগুলোকে কঠোর নজরদারিতে রাখা হবে। দুই হাজারের বেশি পর্যটক যেতে দেওয়া হবে না। এ জন্য নুনিয়ারছড়ার বিআইডব্লিউটিএ জেটিঘাট ও সেন্টমার্টিন জেটিঘাটে পৃথক তল্লাশির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

সেন্টমার্টিন দ্বীপের অনন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সেন্টমার্টিন ভ্রমণের ব্যাপারে গত ২২ অক্টোবর ১২টি নির্দেশনাসহ একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেন।

সরকারি সিদ্ধান্ত মতে বঙ্গোপসাগরের বুকে আট বর্গকিলোমিটার আয়তনের প্রবালসমৃদ্ধ দ্বীপ সেন্ট মার্টিনে গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে পর্যটকদের যাতায়াত বন্ধ রয়েছে। নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত তিন মাস দ্বীপটিতে ভ্রমণের সুযোগ পাবেন পর্যটকরা। প্রতিদিন সর্বোচ্চ দুই হাজার পর্যটক সেন্টমার্টিনে যাওয়ার সুযোগ পাবেন। তবে পর্যটকদের মানতে হবে সরকারের ১২টি নির্দেশনা।

সরকারি প্রজ্ঞাপন মতে, নভেম্বরে পর্যটকরা শুধু দিনের বেলায় দ্বীপটি ভ্রমণ করতে পারবেন। রাত যাপন করতে পারবেন না। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি দুই মাস রাত যাপনের সুযোগ থাকবে।

এ ছাড়া পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের ১২টি নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে বিআইডব্লিউটিএ এবং মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া সেন্টমার্টিন দ্বীপে কোনো নৌযান চলাচলের অনুমতি পাবে না। পর্যটকদের অবশ্যই বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট কিনতে হবে। সেখানে প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস এবং কিউআর কোড সংযুক্ত থাকবে। কিউআর কোড ছাড়া টিকিট নকল হিসেবে গণ্য হবে। তথ্য অনুযায়ী, আগামী জানুয়ারি মাস পর্যন্ত সেন্টমার্টিন দ্বীপে যেতে পারবেন পর্যটকরা। আগামী বছরের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে আবার ৯ মাসের জন্য দ্বীপে পর্যটক যাতায়াত সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে। দ্বীপে ভ্রমণের সময়সূচি এবং পর্যটক উপস্থিতিও এবার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত থাকবে। ফেব্রুয়ারি মাসে দ্বীপে পর্যটক যাতায়াত সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে। প্রতিদিন গড়ে দুই হাজারের বেশি পর্যটক ভ্রমণ করতে পারবেন না।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত