ঢাকা শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

আন্দোলনে শিক্ষকরা, তালা ভেঙে পরীক্ষা নিলেন ইউএনও

আন্দোলনে শিক্ষকরা, তালা ভেঙে পরীক্ষা নিলেন ইউএনও

সরকারের কঠোর হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে তিন দফা দাবি আদায়ে আন্দোলনে অনড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। ফলে দেশের অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ও ‘তালাবদ্ধ’ কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। এতে বেশির ভাগ বিদ্যালয়ে গতকাল বৃহস্পতিবারও বার্ষিক পরীক্ষা হয়নি। তবে কোথাও কোথাও প্রধান শিক্ষক ও প্রশাসনের সহায়তায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবার খবর পাওয়া গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় গত বুধবার জরুরি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে শিক্ষকদের অবিলম্বে পরীক্ষায় ফেরার চূড়ান্ত নির্দেশ দিয়েছে। একই সঙ্গে কর্মবিরতি বা শাটডাউন অব্যাহত থাকলে সরকারি চাকরি আইন, আচরণবিধি ও ফৌজদারি আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার সতর্কবার্তাও দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ১১তম গ্রেড প্রদান; ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেডের জটিলতা নিরসন এবং প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির দাবি উঠেছে। এসব বিষয়ে প্রয়োজনীয় চিঠি ইতোমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। পে-কমিশনের প্রতিবেদন পাওয়ার পর বেতন স্কেল উন্নীতকরণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের দাবি সত্ত্বেও শিক্ষক সংগঠনগুলোর অভিযোগ, বাস্তবে দাবি পূরণে দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই।

এদিকে চার দফা দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করা সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অনেকটা ‘সরকারের চাপে’ই আন্দোলন সাময়িক স্থগিত করে বার্ষিক পরীক্ষায় ফিরেছেন। যদিও তারা বলছেন, ‘শিক্ষার্থীদের স্বার্থে’ তারা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি (বাসমাশিস) গত মঙ্গলবার গভীর রাতে পরীক্ষায় ফেরার সিদ্ধান্ত নেয়। গতকাল রাজধানীর গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাই স্কুল, ধানমন্ডি গভর্নমেন্ট বয়েজ হাই স্কুলসহ বিভিন্ন বিদ্যালয় ঘুরে দেখা গেছে, স্থগিত হওয়া পরীক্ষাগুলো ফের শুরু হয়েছে।

একজন শিক্ষক নেতা বলেন, পরীক্ষার অনিশ্চয়তায় শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের মানসিক চাপ আমরা বুঝতে পেরেছি। পরবর্তী কর্মসূচি আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত জানানো হবে।

১ ডিসেম্বর থেকে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা চার দফা দাবিতে লাগাতার কর্মবিরতি শুরু করেছিলেন। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- সহকারী শিক্ষক পদকে বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারভুক্ত করা; শূন্যপদে নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন দ্রুত কার্যকর করা; টাইম স্কেল সিলেকশন গ্রেড বকেয়া আদায় এবং আগের মতো সহকারী শিক্ষকদের অগ্রিম বেতন সুবিধা বহাল রাখা।

প্রাথমিকে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি : তিন দফা দাবি আদায়ে সহকারী শিক্ষকরা গতকাল থেকে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি শুরু করেছেন। অসংখ্য বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে, ফলে বার্ষিক পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। শিক্ষকরা নিজ নিজ উপজেলা বা থানা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার (এটিইও) কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশও করেছেন। তবে ঢাকাসহ কিছু বিভাগীয় শহরে সীমিত আকারে পরীক্ষা নেওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক খায়রুন নাহার লিপি বলেন, ‘শিক্ষকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে শাটডাউন পালন করছেন। দাবি পূরণ না হলে কর্মসূচি চলবে।’

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই) সূত্রে জানা যায়, দেশে ৬৫ হাজার ৫৬৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত তিন লাখ ৮৪ হাজারের বেশি শিক্ষকের বেশির ভাগই সহকারী শিক্ষক। প্রধান শিক্ষকরা দশম গ্রেডে উন্নীত হলেও সহকারী শিক্ষকরা এখনও ১৩তম গ্রেডে রয়েছেন, যা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অসন্তোষ বিরাজ করছে।

দাবি আদায় আন্দোলনের সমন্বয়ক ও আহ্বায়কদের কয়েকজনকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার শোকজ নোটিশ দেওয়ায় ক্ষোভ আরও বেড়েছে। তবে অভিভাবকরা বলছেন, হঠাৎ পরীক্ষা বন্ধ হওয়ায় শিশুরা মানসিক চাপের মধ্যে রয়েছে।

প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের একজন আহ্বায়ক আনোয়ার উল্যাহ বলেন, ‘আমরা ২২ দিন অপেক্ষা করেছি। কোনো বাস্তব অগ্রগতি না দেখেই বাধ্য হয়ে শাটডাউনে যেতে হয়েছে।’

সারাদেশের প্রাথমিকে হযবরল অবস্থা : ময়মনসিংহের অধিকাংশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বুবার ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষকরা। বার্ষিক পরীক্ষা দিতে এসে শ্রেণিকক্ষে তালা দেখে চরম দুর্ভোগে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। নান্দাইলের বিদ্যালয়গুলোতে হযবরল অবস্থার সৃষ্টি হয়। কোনো কোনো বিদ্যালয়ে পরীক্ষা হতে দেখা গেলেও অধিকাংশ বিদ্যালয়ে হয়নি।

লাগাতার কর্মবিরতি, বার্ষিক পরীক্ষা বর্জনের পর বরগুনার আমতলী উপজেলার ১৫২টি বিদ্যালয়ে কমপ্লিট শাটডাউন পালিত হয়েছে। গত বুধবার কোনো বিদ্যালয়ে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। তবে বিকেলে প্রধান শিক্ষক, নৈশপ্রহরী ও অভিভাবকদের সহযোগিতায় সব স্কুলে পরীক্ষা হয়েছে।

পাবনার চাটমোহরে শিক্ষকরা মানববন্ধন করেছেন। কর্মসূচি শেষে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপি দেন তারা।

নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলার এক হাজার ৯৮৫টি বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কর্মবিরতি পালন শুরু করেছেন। এক হাজার ২৫৩টিতে শাটডাউন কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এর ফলে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো বার্ষিক পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। তবে কিছু কিছু বিদ্যালয়ে অভিভাকদের দিয়ে পরীক্ষা নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

ঝালকাঠির রাজাপুরের বিভিন্ন স্কুলে গতকাল কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি হয়েছে। তবে রাজাপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আখতার হোসেনের নেতৃত্বে পরীক্ষা হয়েছে।

বরিশালের স্কুলগুলোতে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। শিক্ষকরা প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে দেন। তবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের চাপের মুখে অনেকে পরীক্ষা নিতে বাধ্য হয়েছেন। বানারীপাড়ার ১২৬ স্কুলের সহকারী শিক্ষকরা কর্মবিরতি পালন করেছেন। এতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়।

পিরোজপুরের কাউখালীতে একটি স্কুলে পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থীদের স্কুল থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

পরীক্ষা না নেওয়ায় প্রাথমিক শিক্ষকের মাথা ফাটালেন অভিভাবকরা : বার্ষিক পরীক্ষা না নিয়ে বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি করার জেরে পাবনার এক সহকারী শিক্ষকের মাথা ফাটানোর ঘটনা ঘটেছে। বিক্ষুব্ধ অভিভাবকদের ইটের আঘাতে তার মাথা ফেটে গেছে বলে অভিযোগ শিক্ষকদের। আহত শিক্ষকের নাম রাজিব সরকার। তিনি পাবনার ফরিদপুর উপজেলার বনওয়ারিনগর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের অন্যতম আহ্বায়ক মু. মাহবুবর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, যৌক্তিক দাবিতে চলমান আন্দোলনে পরীক্ষা বর্জন করেছিলেন রাজিব ও তার সহকর্মীরা। অভিভাবক পরিচয়ের কিছু ব্যক্তি সেখানে গিয়ে শিক্ষকদের মারধর করেন। এতে সহকারী শিক্ষক রাজিবের মাথা ফেটে গেছে। তার মাথায় চারটি সেলাই দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন।

শিক্ষকের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনায় শিক্ষকসমাজ ক্ষুব্ধ। আমরা এ হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একই সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।’

শেরপুরে শ্রেণিকক্ষের তালা ভেঙে পরীক্ষা নিলেন ইউএনও : শ্রেণিকক্ষে তালা ঝুলিয়ে কর্মবিরতি পালন করছেন প্রাথমিকের শিক্ষকরা। এদিকে বার্ষিক পরীক্ষার জন্য বাইরে অপেক্ষায় কোমলমতি একদল শিক্ষার্থী। এমন সময় শ্রেণিকক্ষের তালা ভেঙে পরীক্ষা শুরু করেন এক ইউএনও। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার শ্রীবরদী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার ব্যবস্থা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনীষা আহমেদ। এ সময় উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নুরন নবী উপস্থিত ছিলেন।

প্রাথমিকে বেতন স্কেল দশম গ্রেডে নির্ধারণ, ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির বিষয়ে জটিলতার অবসান এবং সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির দাবিতে বুধবার থেকে সারাদেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষকরা।

এতে সংহতি জানিয়ে শ্রীবরদী উপজেলার ১৯৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও কর্মসূচি পালন করছেন। বৃহস্পতিবারও এই কর্মসূচি অব্যাহত আছে।

এর মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে বার্ষিক পরীক্ষা। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে দাবি আদায়ে শ্রেণিকক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকরাও।

শ্রীবরদী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আসা অভিভাবক মিজান উদ্দিন বলেন, হঠাৎ পরীক্ষা বন্ধ হওয়ায় শিশুরা মানসিক চাপের মধ্যে আছে। শিক্ষকরা এতদিন দাবি জানানোর সময় পাননি। আমাদের বাচ্চাদের পড়াশোনার ক্ষতি করে কীসের আন্দোলন? সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে তাদের এই আন্দোলন।

আরেক অভিভাবক বলেন, কোমলমতি শিশুদের জিম্মি করে আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষকরা। সরকারকে কঠোর হতে হবে, বাচ্চাদের ক্ষতি হবে, আর আমরা চেয়ে চেয়ে দেখব তা হয় না। এসব শিক্ষকদের বাদ দিয়ে নতুন করে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হোক।

ইউএনও মনীষা আহমেদ বলেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বুধবার জরুরি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে শিক্ষকদের অবিলম্বে পরীক্ষায় ফেরার চূড়ান্ত নির্দেশ দিয়েছে। সেইসঙ্গে কর্মবিরতি বা শাটডাউন অব্যাহত থাকলে সরকারি চাকরি আইন, আচরণবিধি ও ফৌজদারি আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার সতর্কবার্তাও দিয়েছে।

শিক্ষকরা পরীক্ষা না নিয়ে আন্দোলন করছেন, এমন তথ্যের ভিত্তিতে শ্রীবরদী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয় বলে জানান তিনি

এদিকে গত বৃহস্পতিবার পিরোজপুরের নেছারাবাদে শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে দুই দফায় মারামারির ঘটনা ঘটেছে। বার্ষিক পরীক্ষা না নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা পরিষদের গেটের সামনে শিক্ষকেরা আন্দোলন করতে গেলে এই ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে

‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের’ আহ্বায়ক খায়রুন নাহার লিপি বলেন, আমাদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। দাবি বাস্তবায়নে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কর্মসূচি থেকে সরে আসার কোনো সুযোগ নেই।

শিক্ষকরা নিজ নিজ উপজেলা বা থানা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার (এটিইও) কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশও করছেন। তবে ঢাকাসহ কিছু বিভাগীয় শহরে সীমিত আকারে পরীক্ষা নেওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

সারাদেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা লাগাতার কর্মবিরতি পালন করলেও যশোরে এ কর্মসূচির কোনো প্রভাব নেই। মোল্লাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামীমা খাতুন বলেন, কর্মসূচি পালনে আমাদের উপরে কোন চাপ নেই, শিক্ষকরা তাদের একাডেমিক দায়িত্ব পালন করছেন।

দাবি আদায় আন্দোলনের সমন্বয়ক ও আহ্বায়কদের কয়েকজনকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার শোকজ নোটিশ দেওয়ায় ক্ষোভ আরও বেড়েছে। তবে অভিভাবকরা বলছেন, হঠাৎ পরীক্ষা বন্ধ হওয়ায় শিশুরা মানসিক চাপের মধ্যে রয়েছে।

শিক্ষকদের কর্মবিরতির কারণে দেশের শিক্ষাকাঠামোর সবচেয়ে বড় এই স্তর সংকটে পড়েছে। এতে ক্ষুব্ধ অনেক অভিভাবক। তারা বলছেন, বার্ষিক পরীক্ষার সময় এমন আন্দোলন ঠিক হয়নি। ক্ষতির মুখে পড়ছেন শিক্ষার্থীরা।

ময়মনসিংহের অধিকাংশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বুবার ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষকরা। বার্ষিক পরীক্ষা দিতে এসে শ্রেণিকক্ষে তালা দেখে চরম দুর্ভোগে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। নান্দাইলের বিদ্যালয়গুলোতে হযবরল অবস্থার সৃষ্টি হয়। কোনো কোনো বিদ্যালয়ে পরীক্ষা হতে দেখা গেলেও অধিকাংশ বিদ্যালয়ে হয়নি।

লাগাতার কর্মবিরতি, বার্ষিক পরীক্ষা বর্জনের পর বরগুনার আমতলী উপজেলার ১৫২টি বিদ্যালয়ে কমপ্লিট শাটডাউন পালিত হচ্ছে। বুধবার কোনো বিদ্যালয়ে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। বৃহস্পতিবারও একই অবস্থা বিরাজ করছে। তবে কোনো কোনো স্কুলে প্রধান শিক্ষক, নৈশপ্রহরী ও অভিভাবকদের সহযোগিতায় সব স্কুলে পরীক্ষা হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত