
উচ্চ ফলনশীল জাতের পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ চিচিঙ্গা চাষ করে সাফলতা পেয়েছেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার গরুড়া গ্রামের কৃষক এনামুল হক। মাচা পদ্ধতিতে চাষ করা সবজিটির উৎপাদনও হয়েছে ভালো। এরইমধ্যে পাইকারি বাজারে চিচিঙ্গা বিক্রি করতে শুরু করেছেন তিনি। বাজারে দাম ভালো পাচ্ছেন। ৩০ হাজার টাকা খরচ করে পৌনে দুই বিঘা জমিতে মালচিং পদ্ধতি ও ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করে চাষ করা চিচিঙ্গা বিক্রি করে দুই লাখ টাকা লাভ হবে, এমনটি আশা করছেন এই কৃষক এনামুল হক।
উপজেলার গরুড়া ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. ফজলুল হক জানান, কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বিষমুক্ত পদ্ধতিতে চিচিঙ্গা চাষের জন্য সার্বক্ষণিক তদারকি করা হচ্ছে। এর ফলে আশপাশের কৃষকরাও উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।
কৃষক এনামুল হক বলেন, এ বছর অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে সব ধরনের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে নিজ উদ্যোগে মালচিং পদ্ধতি ও ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করে বিষমুক্ত চিচিঙ্গা চাষে করেছি’। তিনি আরো বলেন, ‘জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে চিচিঙ্গা রোপণ করা হয়েছিল। ৩৫-৪০ দিনের মধ্যে চিচিঙ্গা সংগ্রহ শুরু হয়। বিষমুক্ত হওয়ার কারণে এর চাহিদা বেশি। পাইকারি বাজারে ৩৫ টাকা কেজি দরে চিচিঙ্গা বিক্রি করছি। আশা করছি, দুই লাখ টাকার মতো লাভ করতে পারব।’ উপজেলা ?কৃষি অফিস সূত্র জানায়, এবছর দৌলতপুরে প্রায় ৩০ হেক্টর জমিতে চিচিঙ্গা চাষ হয়েছে।
অফিস সূত্র জানায়, উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়ায় চিচিঙ্গা ভালো জন্মে। শীতের দু’তিন মাস বাদ দিলে বাংলাদেশে বছরের যেকোনো সময় চিচিঙ্গা জন্মানো যায়। সব রকম মাটিতে চিচিঙ্গার চাষ করা যায় তবে জৈব সার সমৃদ্ধ দো-আঁশ ও বেলে দো-আঁশ মাটিতে ভালো জন্মে।
বিএডিসি ‘ঝুম লং’ নামের একটি জাতের বীজ উৎপাদন করছে। এর ফল নীলাভ কালচে সবুজ ও দীর্ঘ। ফলধারী আরও একটি জাত ‘সাদা সাভারী’ নামে পরিচিত। তাছাড়া তিস্তা, তুরাগ, সুরমা, রূপসা, বিভিন্ন জাত এদেশে চাষ করা হয়।
দৌলতপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রেহানা পারভীন বলেন, চিচিঙ্গা পুষ্টিসমৃদ্ধ সবজি, যা ওজন কমানো, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়ক। স্বল্প সময় ও খরচে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। আশা করছি, আগামীতে আরও বেশি কৃষক চিচিঙ্গা চাষ করবেন।