বন্দর নগরী চট্টগ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে ৪৭২টি সড়ক উন্নয়নের ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। গতকাল শুক্রবার সকালে রসুলবাগ আবাসিক থেকে বাকলিয়া এক্সেস রোড সংযোগ সড়ক নির্মাণের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনকালে এ ঘোষণা দেন তিনি। ২০০০ ফুট মূল সড়ক এবং প্রায় ২০০ ফুট বহি-লেইনের এ সড়ক নির্মাণ করতে ব্যয় হবে প্রায় দেড় কোটি টাকা। মূল প্যাকেজের মধ্যে রসুলবাগ থেকে বাকলিয়া এক্সেস রোড এবং সৈয়দ শাহ রোড হেলথ কেয়ার আবাসিক এলাকা নির্মিত হবে।
কোভিড১৯ রিকভারী প্রকল্পের আওতায় নির্মিতব্য এ সড়কের অর্থায়ন করেছে বিশ্বব্যাংক এবং বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন চট্টগ্রাম মহানগরের ৪৭২টি সড়কের উন্নয়ন পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে বলেন, কিছু রাস্তার কাজ এরই মধ্যে শুরু হয়েছে, কিছু চলমান রয়েছে এবং কিছু রাস্তার উন্নয়ন শিগগিরই শুরু হবে।
তিনি ঠিকাদারদের উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, রাস্তার মানের সাথে কোনো আপস করা হবে না। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় তৈরি রাস্তা টেকসই হতে হবে। কাজের মান খারাপ হলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। তিনি আরও বলেন, ঠিকাদারদের কোনো ধরনের ঘুষ বা কমিশন দেয়ার প্রয়োজন নেই। জনগণের করের টাকা সঠিকভাবে ব্যয় করতে হবে এবং রাস্তা নির্মাণে সর্বোচ্চ মান বজায় রাখতে হবে। এসময় তিনি জনগণের উন্নয়ন ও স্বচ্ছতার প্রতি তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, চট্টগ্রামের উন্নয়ন কাজ চলবে, দুর্নীতির কোনো স্থান নেই। চাঁদাবাজি ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়ার ঘোষণা দিয়ে মেয়র বলেন, চট্টগ্রামের কোনো উন্নয়ন প্রকল্পে চাঁদাবাজদের কোনো জায়গা নেই। যারা চাঁদাবাজি করবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি জনগণকে চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। তিনি আরও বলেন, যারা শহরে চুরি, ডাকাতি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে, তাদের কঠোর হাতে দমন করা হবে। অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং জনগণ যদি এ সব অপরাধীদের সম্পর্কে তথ্য জানাতে পারে, তাহলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বর্ষাকাল আসন্ন হওয়ায় শহরের জলাবদ্ধতা সমস্যার কথা স্বীকার করে মেয়র বলেন, ‘সিডিএর বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কারণে সাময়িক কিছু অসুবিধা হচ্ছে। তবে আমরা মনিটরিং করছি, যাতে পানি জমে না থাকে এবং দ্রুত নিষ্কাশন হয়।’ তিনি জনগণকে রাস্তার ড্রেনের মধ্যে প্লাস্টিক ও বর্জ্য না ফেলতে অনুরোধ করেন এবং পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার জন্য সব নাগরিককে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বাজার মনিটরিং জোরদার করার ঘোষণা দেন এবং জনগণকে অনুরোধ করেন, ‘যদি কেউ অতিরিক্ত দামে পণ্য বিক্রি করে, তাহলে আমাদের জানান। আমরা ব্যবস্থা নেব।’ এ সময় উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী প্রকৌশলী আশিকুল ইসলাম, মাহমুদ শাফকাত আমিন, উপ-সহকারী প্রকৌশলী এসএম আশফাক, মেয়রের একান্ত সহকারী মারুফুল হক চৌধুরী (মারুফ), জিয়াউল হক জিয়া প্রমুখ।