বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান, সাবেক মন্ত্রী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল্লাহ আল নোমানের নামাজে জানাজায় সর্বস্তরের মানুষের ঢল নেমেছে। গতকাল শুক্রবার বাদ জুমা চট্টগ্রাম জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ ময়দানে নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ বিপুলসংখ্যক মানুষ উপস্থিত ছিলেন। বিপুলসংখ্যক মানুষের উপস্থিতিতে চট্টগ্রাম জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ ময়দান কানায় কানায় ভরপুর হয়ে ওঠে। এর আগে, বেলা ১১টায় চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির দলীয় কার্যালয় নাসিমন ভবনে শেষবারের মতো নিয়ে যাওয়া হয় আবদুল্লাহ আল নোমানের লাশ। সেখানে চট্টগ্রামের বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের ঢল নামে। এতে এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আবদুল্লাহ আল নোমান একজন পরিপূর্ণ রাজনীতিবিদ ছিলেন। উনি সার্বক্ষণিকভাবে রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। নোমান ভাইয়ের নেতৃত্বে আমরা চট্টগ্রাম মহানগরের রাজনীতি করেছি। চট্টগ্রামের রাজনীতিতে, আন্দোলন, সংগ্রামে রাজপথে আমরা একসঙ্গে কাজ করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই নাসিমন ভবনে পুলিশের আক্রমণ, টিয়ার গ্যাসের শিকার হয়ে আমরা আশ্রয় নিয়েছি। নোমান ভাই ছাত্ররাজনীতি করেছেন, শ্রমিক রাজনীতি করেছেন, বিএনপির রাজনীতি করেছেন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল সংগঠিত করার জন্য চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর, দক্ষিণসহ এই অঞ্চল এবং যেখানেই দলের ডাক দেয়ার জন্য বলা হয়েছে সেখানে ছুটে গেছেন। ওনার রক্তের সঙ্গে রাজনীতি মিশে গেছে। নোমান ভাইয়ের সঙ্গে চট্টগ্রামের রাজনীতি ও কেন্দ্রীয়ভাবে অনেক স্মৃতি আছে। সুখ-দুঃখ, ভালো-খারাপ সময় আমরা অতিক্রম করেছি।’
এ সময় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আমীর খসরু বলেন, ‘আমাদের নেতাকর্মীরা যে আপসহীন রাজনীতি, দীর্ঘ সময় আত্মত্যাগের মাধ্যমে, জীবন দিয়ে, গুম হয়ে, খুন হয়ে, জেলে গিয়ে, চাকরি হারিয়ে, ব্যবসা হারিয়ে যে ত্যাগের রাজনীতি বিশেষ করে গত ১৬ বছর রোদে পুড়ে আমরা খাঁটি সোনায় পরিণত হয়েছি। এটা বিএনপির সম্পদ। এ সম্পদ কেউ কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। আমরা যে ত্যাগের মাধ্যমে পরিণত হয়েছি এটা পরিপূর্ণ ও পরিণত রাজনীতি। সেখানে নোমান ভাইয়ের অবদান ছিল।’ নামাজে জানাজা শেষে লাশ নিয়ে যাওয়া হয় গ্রামের বাড়ি রাউজান উপজেলার গহিরায়। রাউজান গহিরা হাইস্কুল মাঠে বাদ আসর মরহুমের শেষ নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে। প্রসঙ্গত, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ভোর ৬টায় রাজধানীর ধানমন্ডির বাসায় অসুস্থ হলে হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি ইন্তেকাল করেন আবদুল্লাহ আল নোমান। ঢাকায় তিন দফা নামাজে জানাজা শেষে গত বৃহস্পতিবার বিকাল পৌনে ৫টার দিকে হেলিকপ্টারে লাশ চট্টগ্রাম এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে আনা হয়। এরপর কাজীর দেউড়ি ভিআইপি টাওয়ারের বাসভবন প্রাঙ্গণে নেতাকর্মী ও স্বজনদের দেখার জন্য মরদেহ রাখা হয়।
