দেশে দূষণরোধে মোট ৯১৯টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। গত ২ জানুয়ারি থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এসব অভিযান পরিচালনা করে পরিবেশ অধিদপ্তর। জানা গেছে, অভিযানে কালো ধোঁয়া নির্গমনকারী যানবাহন, অবৈধ ইটভাটা, বায়ুদূষণকারী স্টিল মিল, শব্দ দূষণ, ঝুঁকিপূর্ণ বর্জ্য, সিসা/ব্যাটারি রিসাইক্লিং কারখানা, জলাশয় ভরাট, টায়ার পাইরোলাইসিস, চারকোল কারখানা ও খোলা জায়গায় নির্মাণসামগ্রী রেখে বায়ুদূষণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এই সময়ে ২ হাজার ১৩৬টি মামলার মাধ্যমে ২৫ কোটি ৬ লাখ ৯৩ হাজার ২০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। এই অভিযানে ৪৭১টি ইটভাটার চিমনি ভেঙে ফেলা হয় এবং কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেওয়া হয়। ২১৬টি ইটভাটাকে বন্ধ করতে কড়া নির্দেশনা দেওয়া হয়। ১৩০টি ইটভাটার কাঁচা ইট ধ্বংস করা হয়।
এছাড়া চারটি প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ ও অন্যান্য সেবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। একজনকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ছয়টি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে আটটি ট্রাকে থাকা সিসা/ব্যাটারি গলানোর যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয় এবং কারখানাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। এছাড়া গত ৩ নভেম্বর থেকে এ পর্যন্ত সারা দেশে নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন উৎপাদন বিক্রয়, সরবরাহ ও বাজারজাত করার দায়ে ৩৯৬টি মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করে ৭৩৮টি প্রতিষ্ঠান থেকে মোট ৫৯ লাখ ৮৩ হাজার ৩০০ টাকা জরিমানা আদায়সহ আনুমানিক ১ লাখ ৯৬ হাজার ৫১৫ কেজি নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন জব্দ করা হয়। অন্যদিকে আজ (১৫ মে) বায়ুদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা-২০২২ অনুসারে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা উৎপাদনের মাধ্যমে বায়ুদূষণের দায়ে ঢাকার আদাবর ও মোহাম্মদপুরসহ রাজবাড়ী ও ঝালকাঠি জেলায় চারটি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে চারটি মামলায় ২ লাখ ২২ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
একই দিনে ফরিদপুর জেলায় অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে একটি মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয় এবং দুটি মামলায় ২ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। কালো ধোঁয়া নির্গমনের অভিযোগে ঢাকার মিরপুর-১ এলাকায় একটি মোবাইল কোর্ট চারটি মামলায় ১১ হাজার টাকা জরিমানা করে। এছাড়া বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ (সংশোধিত-২০১০) এর ৬(ক) ধারা লঙ্ঘনের দায়ে গাজীপুর জেলায় নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন উৎপাদন, বিক্রয়, সরবরাহ ও বাজারজাত করার অপরাধে একটি মোবাইল কোর্ট নয়টি মামলা করে এবং ৩৫ কেজি পলিথিন জব্দ করে। একইসঙ্গে বিভিন্ন সুপারশপ ও দোকান মালিকসহ সাধারণ জনগণকে এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়। পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক দূষণবিরোধী এ ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে জানানো হয়েছে। পরিবেশ রক্ষায় সবার সচেতনতা ও সহযোগিতা কামনা করেছে অধিদপ্তর।