বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলেছবি: প্রথম আলো
কৃষির প্রতি মনোযোগ বাজেট ছাড়াও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে আনতে হবে বলে জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান। তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশকে উন্নত পর্যায়ে নিয়ে যেতে হলে কৃষি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কৃষি আগামী দিনের প্রবৃদ্ধির চালক হতে পারে। সামনে বাজেট আসছে, সেখানে নজর থাকবে, কৃষিতে কতটা বরাদ্দ দেওয়া হলো।’ গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান। কৃষিকে কেন অবহেলা করা হবে, এমন প্রশ্ন তুলে কৃষি ও কৃষকের প্রতি সরকারের মনোযোগ বাড়ানোর ওপর জোর দেন এই অর্থনীতিবিদ। তিনি বলেন, ‘বাজেট ছাড়াও কৃষির প্রতি মনোযোগটা রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে আনতে হবে। বাণিজ্যিক কৃষির ব্যাপক প্রসার ঘটাতে কৃষিকে যদি ভালো করে মনোযোগের মধ্যে নিয়ে আসতে পারি, তাহলে আমরা একটা ন্যায্য সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে পারব।’ বাংলাদেশে অকৃষি ও কৃষিজমির স্থানিক পরিকল্পনায় সরকারের উদ্যোগের তথ্য জানিয়ে ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, গ্রাম, কৃষি ইত্যাদি মাথায় রেখে এই স্থানিক পরিকল্পনার যে উদ্যোগ সরকার নেবে, তার মধ্যে এখনই জোরালো একটা অবস্থান করা দরকার। তাহলে কৃষি বা ভূমিহীনদের প্রয়োজনগুলো উঠে আসবে। বাণিজ্যিক কৃষির ব্যাপারে দুশ্চিন্তার কথা জানিয়ে এই অর্থনীতিবিদ ক্ষুদ্র কৃষকের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনার ওপরও জোর দেন। ক্ষুদ্র কৃষকের ভবিষ্যৎটা কীভাবে তৈরি করা যায় এবং কৃষির মধ্যে পরিবর্তনগুলো ভালোভাবে বোঝা দরকার বলে তিনি জানান। হোসেন জিল্লুর রহমান কৃষক ও ভূমিমালিকদের নানা সংকট ও সমাধান তুলে ধরেন। পাশাপাশি আইনি নানা জটিলতা ও হয়রানির দিকগুলোও তুলে ধরেন তিনি। অনুষ্ঠানের শুরুতে ‘একটি গ্রামীণ এবং কৃষিনির্ভর দেশে কৃষি ও ভূমি সংস্কারের গুরুত্ব’ শীর্ষক একটি প্রবন্ধ তুলে ধরেন পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন–বিষয়ক গবেষক আহমেদ বোরহান। গবেষণার ফলাফল তুলে ধরে হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের ৭৬ দশমিক ২ শতাংশ জমি মাঝারি থেকে অত্যন্ত তীব্র মাত্রার অবক্ষয়ের শিকার বা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। প্রতিবছর উদ্বেগজনকভাবে জমি নষ্ট হওয়ার হার বাড়ছে এবং রাসায়নিক সার ব্যবহারের ফলে এটি ঘটছে। মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের বরাত দিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে আহমেদ বোরহান বলেন, রাসায়নিক সারের দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহারের ফলে মাটিতে পুষ্টির ভারসাম্যহীনতা তৈরি হচ্ছে।