রাজধানীসহ সারাদেশেই বইছে তীব্র তাপপ্রবাহ। প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না মানুষ। তবে এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ঢাকার জনপ্রিয় গণপরিবহন মেট্রোরেল। শীততাপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) এ বাহনে যাত্রী চলাচল অনেকটাই স্বাভাবিক। স্বাচ্ছন্দ্যে যাতায়াত করতে পারছেন যাত্রীরা। বিশেষ করে যারা ঈদের ছুটিতে ঘুরতে বের হয়েছেন, তারা মেট্রোরেলে যাতায়াত উপভোগ করছেন। যাত্রীরা জানান, ঈদের ছুটিতে শহরে মেট্রোরেলে ঘোরাটা বেশ স্বস্তির। এতে ভ্রমণের সময় বাইরের তীব্র তাপপ্রবাহ অনুভূত হয় না। শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে নির্বিঘ্নে যাতায়াত করা যাচ্ছে। মেট্রোরেল স্টেশনগুলোতেও নেই মানুষের চিরচেনা ভিড়, দীর্ঘ লাইন বা মেট্রোরেলে ওঠার তাড়া। এক কথায় ঢাকায় আনন্দ ভ্রমণে মেট্রোরেলই যেন আলাদা একটি বিনোদন কেন্দ্র হয়ে গেছে।
গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিন দেখা যায়, মেট্রোরেলের সচিবালয়, শাহবাগ, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট স্টেশন অন্য দিনের তুলনায় অনেকটা ফাঁকা। কিছু সময় পরপর একটি ট্রেন আসছে, ২৫ থেকে ৩০ জন যাত্রী ট্রেনে উঠছেন। আবার প্রায় একই পরিমাণ যাত্রী ট্রেন থেকে নামছেন। যারা যাতায়াত করছেন তাদের অনেককেই পরিবারের ছোট-বড় সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে বের হতে দেখা গেছে। বিশেষ করে শিশু-কিশোর বয়সীরা সাজগোজ করে বের হয়েছেন। এর বাইরে সাধারণ যাত্রীদের কমতি নেই। আবার ভিড় না থাকায় টিকিট ভেন্ডিং মেশিন (টিভিএম) থেকেই কম সময়ের মধ্যে একক যাত্রার টিকিট সংগ্রহ করতে পারছেন যাত্রীরা। দুপুর ২টায় শাহবাগ স্টেশন থেকে উত্তরাগামী ট্রেনে উঠেছেন কাঁটাবনের বাসিন্দা ফরিদ উদ্দিন। সঙ্গে তার দুই ছেলে-মেয়ে এবং স্ত্রীও। আলাপকালে ফরিদ উদ্দিন বলেন, ঢাকায় ঈদের ছুটির আমেজ এখনও কাটেনি। ফলে মেট্রোরেল এখনও ফাঁকা। এ যানে শহরের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে যাতায়াত অনেকটা স্বস্তির। বিশেষ করে চলমান তাপপ্রবাহের মধ্যে মেট্রোরেলে উদ্দেশ্যহীন ঘোরাঘুরিও আনন্দের। তিনি বলেন, বেড়ানোর যে পরিকল্পনা রয়েছে, তার মধ্যে মেট্রোরেল ভ্রমণও আছে। এরপর মেট্রোরেলের আগারগাঁও স্টেশন সংলগ্ন বিমান জাদুঘর, বিজয় সরণি স্টেশন সংলগ্ন সামরিক জাদুঘর ও নভোথিয়েটারে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। সচিবালয় স্টেশন থেকে উত্তরা মধ্য স্টেশনের টিকিট কেটেছেন সেগুনবাগিচার বাসিন্দা সায়েদুল ইসলাম ও তার স্ত্রী মাসুদা খানম। আলাপকালে সায়েদুল ইসলাম বলেন, ঈদুল আজহা উপলক্ষে তারা ঘুরতে বের হয়েছেন। মেট্রোরেলে ভ্রমণ ছাড়াও উত্তরার দিয়াবাড়ির কয়েকটি দর্শনীয় জায়গায় তারা ঘুরবেন।
কারওয়ান বাজার স্টেশন থেকে মতিঝিলের উদ্দেশ্যে মেট্রোরেলে ওঠেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ঢাকায় তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে স্বস্তিদায়ক পরিবেশে ভ্রমণে মেট্রোরেলের বিকল্প নেই। গরমের মধ্যে বাসে যাতায়াতের চেয়ে মেট্রোরেলে কম সময় যাওয়া যায়। আর ঈদ উপলক্ষে এখনও মেট্রোরেল ফাঁকা দেখে ভালো লাগছে।