দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম তিস্তা রেল সেতু। তিস্তা রেল ব্রিজে বেশিরভাগ কাঠের স্লিপারগুলো পচে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। বিভিন্ন স্থানে রেললাইন থেকেকাঠের স্লিপার পুরোপুরি নষ্ট। আবার অধিকাংশ রেলপথে ব্যবহৃত ক্লিপগুলো নেই এবং অনেক জায়গায় স্লিপারের সঙ্গে রেলপথ আটকানোর জন্য ব্যবহৃত লোহার প্লেটগুলো নেই। ১৮৯৯- ১৯০০ খ্রিস্টাব্দে তিস্তা নদীর উপর কাউনিয়ায় তিস্তা রেল সেতুটি নির্মিতহয়। দ্বিতীয় বৃহত্তম তিস্তা রেল সেতুটির উত্তর পাশে লালমনিরহাট-কুড়িগ্রাম ও দক্ষিণে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলা। মেয়াদ উর্ত্তিণের ২৩ বছর-ঝুঁকি নিয়ে চলছে ট্রেন-২ মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও ঝুঁকি নিয়ে চলছে ৩টি আন্তনগরসহ মোট ১৬টি ট্রেন। তিস্তা নদীর উপর ২ হাজার ১শত ১০ ফুট লম্বা তিস্তা রেলওয়ে সেতু নির্মাণ করেন তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার। রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে সংস্কারের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। বরাদ্দআসলে মেরামতসহ সংস্কারের কাজ শুরু হবে। এই সেতুটির মেয়াদকাল ছিল একশত বছর। মেয়াদকাল পার হয়ে ২৫ বছর হলেওজরাজীর্ণ ও ঝুলন্ত সেতু দিয়ে জোড়াতালি দিয়ে প্রতিদিন পারাপার করছে ১৮টি ট্রেন। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে অন্য একটি সেতু থেকে স্প্যান, গার্ডার ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি সংগ্রহ করে ১৯৭২ সালে তা মেরামত করা হয় এবং সেতুটিপুনরায় চালু করা হয়।
১৯৭৭ সালে রেলওয়ে ও সওজ বিভাগ যৌথভাবে রেল সেতুতে মিটারগেজ লাইনের পাশে ২৬০টি স্টিলের টাইফপ্লেট ও কাঠের পাটাতন স্থাপন করে। সেতুর উপর দিয়ে সড়ক যোগাযোগ চালুর সম্ভাব্যতা ও উপযুক্ততা যাচাইয়ের পর ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দের ৪ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে সেতুটির উপর দিয়ে রেলওয়ের পাশাপাশি সড়ক যোগাযোগ শুরু করা হয়েছিল। এরপর ২০০১সালে রেল সেতুর পাশে তিস্তা সড়ক সেতু নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা তিস্তা সড়ক সেতু উদ্বোধনের পর তা যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। আর সড়ক সেতু চালু হওয়ার পররেল সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করা হলেও ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রাখা হয়েছে। তিস্তা সেতু এলাকার অনেকে বলেন, তিস্তাসেতুটি দীর্ঘদিন থেকে অবহেলিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। মাঝে মাঝে লোক দেখানো কিছু কাজ করে থাকে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। তাইদুর্ঘটনা এড়াতে সেতুটির উন্নয়নে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান স্থানীয়রা। স্থানীয় ব্যবসায়ী আব্দুল মালেক বলেন, এ সেতুর উপর দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষ ঢাকায় যায়। সেতুটি নষ্ট হয়ে গেলে উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে সারাদেশের রেলযোগাযোগ বন্ধ হওয়ার আশংকা করে অতিদ্রুত সংস্কারের দাবি উত্তরাঞ্চল বাসির। তিস্তা রেল ব্রিজ সংস্কারের বিষয়ে জানতে চাইলেকাউনিয়া রেল স্টেশনের মাষ্টার হোসনে মোবারক জানান ব্রিজটি দ্রুত সংস্কার করা প্রয়োজন, ব্রিজ দেখাশুনার জন্য আলাদা বিভাগরয়েছে এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থাপক মো. ইশবাল হোসেন বলেন, মাঝেমাঝে সেতু মেরামত করা হয়। এরইমধ্যে ব্রিজটির সমিক্ষার কাজ শেষ হয়েছে। সামনে আমাদের একটি প্রজেক্ট আছে সেখানে ডাবলব্রডগেজ সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। ব্রডগেজ সেতু নির্মাণের কাজ হলে আর এই সেতুটি ব্যবহার করা হবে না।