ঢাকা বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

কৃষ্ণচূড়ার দল

হুমাইদুল্লাহ তাকরিম
কৃষ্ণচূড়ার দল

গ্রীষ্মের বার্তা নিয়ে প্রকৃতিতে হাজির হয় কৃষ্ণচূড়া। কাঠফাটা রোদ্দুরকে যেন সহনীয় করে দেয় এই ফুল। গ্রামবাংলার নানা প্রান্তে প্রকৃতিতে রং ছড়ায় এই বর্ণিল কৃষ্ণচূড়া। তবে শুধু গ্রামবাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলেই নয়, ইট-পাথরের নগরেও দেখা মেলে এর। যারা ফুলপ্রেমী, তাদের কাছে কৃষ্ণচূড়া বেশ পছন্দের ফুল। বাংলা কাব্য, সাহিত্য ও সংগীতে এসেছে এ ফুলের কথা। শুধু কবি-সাহিত্যিক নয়, পথচারী থেকে শুরু করে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের চোখ জুড়িয়ে দেয় কৃষ্ণচূড়া। বাংলাদেশে এপ্রিল-জুন মাস পর্যন্ত চোখধাঁধানো লাল টকটকে উজ্জ্বল কৃষ্ণচূড়া দেখা যায়। সৈন্দর্য বর্ধনকারী কৃষ্ণচূড়া ফুলের রূপ দেখে মুগ্ধ হয় সবাই। পথের ধারে সবুজ পাতার ফাঁকে যখন আগুন রঙের কৃষ্ণচূড়া উঁকি মারে, তখন বিস্মিত হন সৌন্দর্যপ্রিয় মানুষ। উপভোগ করেন কৃষ্ণচূড়ার অপার সৈন্দর্য।

চলার পথে কেউ ছবি তোলেন, কেউ বা কৃষ্ণচূড়া গাছের পাশে দাঁড়িয়ে সেলফি নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। কৃষ্ণচূড়ার বৈজ্ঞানিক নাম ডেলেনিক্স রেজিয়া। এটি ফ্যাবেসি পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। উচ্চতায় সাধারণত দশ-বারো মিটার পর্যন্ত হয়। চারদিকে ছড়িয়ে পড়া শাখা-প্রশাখা ছায়াদানের বেশ উপযোগী। কৃষ্ণচূড়া গাছ উষ্ণ আবহাওয়া ও লবণাক্ততা সহিষ্ণু। বাংলাদেশ, ভারত, আফ্রিকা, তাইওয়ান, হংকং, ক্যারাবিয়ান অঞ্চলসহ অনেক দেশে দেখা যায়। বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সময়ে কৃষ্ণচূড়া ফুল ফোটে। এ ধরনের আরও দুটি ফুল প্রকৃতিপ্রেমীদের আকৃষ্ট করে। সেগুলো হলো- কনকচূড়া ও রাধাচূড়া। রাজসিক চেহারার কৃষ্ণচূড়ার লাল টকটকে ফুল ফোটে থোকা ধরে। রানির মাথার মুকুটের মতো ডালের মাথায় মাথায় সোনারঙের উজ্জ্বল হলুদ ফুল ফোটে কনকচূড়ার। আর রাধাচূড়া যেন দীনভিখারি। ওদের ফুল ফোটে ডালের আগায় চূড়ার মতো পুষ্পমঞ্জরিতে। কখনও সেসব ফুলের রং হয় জাতভেদে হলদে-লালে মেশানো, কখনো বা নিরেট হলুদ। বাতাসের দুলুনিতে তবু পথিককে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করে। তবে তিনটি ফুলের মধ্যে সব দিক দিয়ে নগরতরু হিসেবে কনকচূড়া এগিয়ে। কেননা, এ ফুলের প্রস্ফুরণের প্রাচুর্যে ও সুগন্ধে বিমোহিত হয় মানব-পতঙ্গ সবাই। গাছও মজবুত, দীর্ঘজীবি। ঢাকা ও অন্যান্য শহরের শোভা বাড়াতে অন্তত একটি সড়কের দু’পাশে ছায়াঘন কনকচূড়া লাগানো হয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত