ঢাকা সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

শ্রমিকের বাধ্যতামূলক তহবিল-আপৎকালীন মজুরি বিমা চালুর সুপারিশ

শ্রমিকের বাধ্যতামূলক তহবিল-আপৎকালীন মজুরি বিমা চালুর সুপারিশ

শ্রমিকের মজুরি নিয়মিত রাখতে নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় ক্যাশ ফ্লো ঠিক রাখার জন্য তিন মাসের মোট বেতন বা মজুরির সমপরিমাণ বাধ্যতামূলক আপদকালীন তহবিল গঠনের সুপারিশ করেছে শ্রম সংস্কার কমিশন। একই সঙ্গে মজুরির নিশ্চয়তায় বিমা স্কিম চালুর সুপারিশ করা হয়েছে। যাতে কোনো প্রতিষ্ঠান মজুরি দিতে ব্যর্থ হলে, কোনো শ্রমিক ছাঁটাই হলে, পুনরায় কম বেতনে নিযুক্ত হলে, এই বিমার আওতায় তা পরিশোধ করা যায়। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মদের নেতৃত্বাধীন ১৮ সদস্যের শ্রম সংস্কার কমিশন এসব সুপারিশ করে। এ সংক্রান্ত ‘শ্রম জগতের রূপান্তর-রূপরেখা: শ্রমিক অধিকার, সুসমন্বিত শিল্প সম্পর্ক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রতিবেদন সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দিয়েছে শ্রম সংস্কার কমিশন। কমিশনের সুপারিশে বলা হয়েছে, মজুরি নিয়মিত রাখতে নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় ক্যাশ ফ্লো ঠিক রাখার জন্য ব্যবস্থাগুলো, যেমন, ব্যাংক ওভারড্রাফট, বাধ্যতামূলক আপদকালীন তহবিল (তিন মাসের মোট বেতন/মজুরির সমপরিমাণ) এবং অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা। একই সঙ্গে দেউলিয়া আইনে সংশোধন করে শ্রমিকদের পাওনা প্রথমে পরিশোধের বিধান নিশ্চিত করতে হবে। রপ্তানিমুখী শিল্পের সব প্রতিষ্ঠানের জন্য সরকার একটি আপদকালীন তহবিল গঠন করবে, যেখানে নিয়োগকারী কারখানা বা প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের দুই মাসের মজুরি বা বেতনের সমপরিমাণ টাকা ওই তহবিলে জমা রাখবে বলে সুপারিশ করেছে কমিশন। এ তহবিল প্রতিষ্ঠানের নিয়োগকারী, সরকার ও ওই শিল্পের মালিকদের অ্যাসোসিয়েশনের (যদি থাকে) যৌথ ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হবে। তবে কোনো কারণে নিয়োগকারীর অবর্তমানে সরকার জরুরি পরিস্থিতিতে নিজস্বভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবে। আপদকালীন মজুরি বিমার বিষয়ে কমিশনের সুপারিশে বলা হয়েছে, জাতীয় মজুরি নিশ্চয়তা বিমা স্কিম চালু করা, যাতে করে কোন প্রতিষ্ঠান মজুরি প্রদানে ব্যর্থ হলে, কোনো শ্রমিক ছাঁটাই হলে, পুনরায় কম বেতনে নিযুক্ত হলে, এই বিমার আওতায় তা পরিশোধ করা যায়।

শ্রমিকের আইনি সুরক্ষা ও স্বীকৃতি : প্রাতিষ্ঠানিক, অপ্রাতিষ্ঠানিক, কৃষি, গৃহভিত্তিক, অভিবাসী, স্বনিয়োজিত শ্রমিকসহ সব শ্রমিকের জন্য রাষ্ট্র কর্তৃক শ্রম আইনের সুরক্ষা নিশ্চিত করার সুপারিশ করেছে কমিশন। এ লক্ষ্যে, কাজের স্বীকৃতি ও পরিচয়পত্র নিরবচ্ছিন্ন কাজ এবং আয়ের নিশ্চয়তা, মর্যাদাকর-শোভন কর্ম পরিবেশ, চাকরির অপ্রাতিষ্ঠানীকরণ, অস্থায়ী ও এজেন্সিনির্ভর নিয়োগের ক্রমবর্ধমান প্রবণতা রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে কয়েকটি পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, নিজের ও পরিবারের মর্যাদাকর জীবনযাপন উপযোগী ন্যায্য মজুরি (লিভিং ওয়েজ), উন্নয়নে ন্যায্য অংশীদারত্ব ও হিস্যা প্রাপ্তির অধিকার। প্রত্যেকের জন্য নিরাপদ কাজ ও স্বাস্থ্যসম্মত কর্মপরিবেশ, দুর্ঘটনায় যথাযথ ক্ষতিপূরণ এবং নিজের ও পরিবারের সাধারণ স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার অধিকার।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত