প্রিন্ট সংস্করণ
০০:০০, ০৭ আগস্ট, ২০২৫
ইসলামে সকাল গুরুত্বপূর্ণ সময়। ইশার নামাজের পরে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে যাওয়া আর সাতসকালে দ্রুত ঘুম থেকে ওঠা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। প্রকৃত মুসলমানরা ফজরের নামাজের মাধ্যমে দিন শুরু করেন। কিন্তু মুনাফিকরা কখনোই ফজরের নামাজে শামিল হয় না। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মুনাফিকদের ওপর ফজর ও ইশার নামাজের চেয়ে অধিক ভারী নামাজ আর নেই। এ দুই নামাজের কি ফজিলত তা যদি তারা জানত, তাহলে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তারা (জামাতে) উপস্থিত হতো।’ (বোখারি : ৬২৪)।
মুসলমানরা ফজরের নামাজের পর ছড়িয়ে পড়ে আপনকাজকর্মে। এতে জীবনজুড়ে নেমে আসে রহমত ও বরকত। অল্প সময়ের মধ্যেই পেয়ে যায় পর্যাপ্ত রিজিক। কারণ সকালে ঘুম থেকে ওঠা শুধু ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে নয়, বরং শারীরিক এবং মানসিক দিক থেকেও উপকারী। রাসুলুল্লাহ (সা.) সকালের বরকতের জন্য দোয়া করেছেন। সাখর গামিদী (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘হে আল্লাহ, তুমি আমার উম্মতের জন্য ভোরের মধ্যে বরকত দান করো। বর্ণনাকারী বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন কোথাও ক্ষুদ্র সেনাদল বা বৃহৎ সৈন্যবাহিনী পাঠাতেন, তখন তাদেরকে দিনের প্রথমাংশে পাঠাতেন। সাখর ছিলেন ব্যবসায়ী। তিনি তার ব্যবসায়ীদলকে দিনের শুরুতেই পাঠিয়ে দিতেন। ফলে তিনি ধনবান হন এবং তার সম্পদ প্রচুর বৃদ্ধি পায়।’ (তিরমিজি : ১২১২)।
সকালবেলা যারা ঘুম থেকে ওঠে না, তাদের বিভিন্ন অসুস্থতা লেগে থাকে। শরীরের সজীবতা নষ্ট হয়ে যায়। পরবর্তী সময়ের কাজগুলো দক্ষতার সঙ্গে করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। সর্বোপরি রিজিক থেকে বঞ্চিত হয়। তাই ওই সময়ে ঘুমের ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে। আলি (রা.) বলেন, ‘একদিন রাসুলুল্লাহ (সা.) সকালবেলা ফাতেমা (রা.)-এর কাছে গেলেন। তখন ফাতেমা প্রভাত-নিদ্রায় শায়িত ছিল। রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর পা দিয়ে- তাকে খোঁচা দিয়ে বললেন, হে কন্যা, উঠো, তোমার প্রভুর রিজিক বণ্টনের সময় তুমি উপস্থিত থাক। আর গাফিলদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না। মহান আল্লাহ সুবহে সাদিক থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত সময়ের মধ্যে মানুষের রিজিক বণ্টন করে থাকেন।’ (আত-তারগিব ওয়াত-তারহিব : ২৬২৭)।
লেখক : খতিব ও মাদ্রাসা শিক্ষক