ঢাকা শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

নিয়ত করার পদ্ধতি

হাসসান মনোয়ার
নিয়ত করার পদ্ধতি

নিয়তের স্থান হলো কলব বা অন্তর, যা শুধু আল্লাহতায়ালাই জানেন। নিয়ত অন্তরের কাজ, মুখের নয়। তাই সালাতের শুরুতে ‘নাওয়াইতু আন উসল্লিয়া.., সাওম পালনের জন্য নাওয়াইতু আন আসুমা’ এমন করে মৌখিক নিয়ত করবে না। মুখে উচ্চারণ করে নিয়ত করা বিদআত। কারণ, নিয়তের স্থান অন্তরে, নিয়ত করাও অন্তরের কাজ; মুখের কাজ নয়। মৌখিক নিয়তের মাঝে রিয়া বা লৌকিকতার আশঙ্কা রয়েছে।

রাসুলুল্লাহ (সা.) মুখে উচ্চারণ করে নিয়ত করেছেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায় না। হ্যাঁ, এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বিদায় হজে ইহরাম বাঁধার সময় বলেছিলেন, আমি হজ ও উমরাহর উদ্দেশ্যে তালবিয়া পাঠ করছি। (মুসলিম : ১২৫১)। এই কথাটি বাহ্যত নিয়তের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে মনে হলেও এটি কোনো মৌখিক নিয়ত নয়। কারণ, এই বাক্যে ‘নিয়ত’ শব্দের উচ্চারণ করা হয়নি, হয়েছে নিয়তকৃত ইবাদতের উচ্চারণ। কেননা, ইহরামের পরে একাধিক ধরনের ইবাদত করা যেতে পারে। শুধু হজ করা যায়, শুধু উমরাহ করা যায়, হজ ও উমরাহ এক ইহরামে করা যায়, হজ ও উমরাহ ভিন্ন ভিন্ন ইহরাম বেঁধেও করা যায়।

এতসব সম্ভাবনা থেকে একটি ধরনকে নির্দিষ্ট করার লক্ষ্যেই এই বাক্যটি বলেছেন রাসুলুল্লাহ (সা.)। যদি তিনি নিয়ত মুখে উচ্চারণ করতে চাইতেন, তা হলে ‘নাওয়াইতুল হজ’ (আমি হজের নিয়ত করছি) বা ‘নাওয়াইতুল উমরাহ’ (আমি উমরাহর নিয়ত করছি) এভাবে বলতেন। অথচ এমনটি তিনি বলেননি। সুতরাং এ হাদিস থেকে নিয়ত মুখে উচ্চারণ করার বিষয়টি প্রমাণিত হয় না।

আবার রাসুলুল্লাহ (সা.) কিন্তু এটাও বলেনি যে, ‘আমি হজ করতে চাচ্ছি, আমি উমরাহ করতে চাচ্ছি।’ ‘নিয়ত’ শব্দের উচ্চারণ না করে ‘আমি চাচ্ছি’ বলে মৌখিক নিয়ত করার অনুমতি কোনো কোনো ফকিহ দিয়ে থাকেন। এটাও সঠিক নয়। কেননা, নবীজি শুধু হজের একটি বিশেষ ধরনের কথা মুখে উচ্চারণ করেছেন। এটাকে মৌখিক নিয়তের দলিল বানানো কোনোভাবেই যুক্তিসঙ্গত নয়। অতএব, নামাজ, জাকাত বা যেকোনো কাজে মুখে উচ্চারণ করে নিয়ত করা জায়েজ নয়। মুখে উচ্চারণ করা ছাড়াই আমল করে নিতে হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত