লা লিগায় রিয়াল বেতিস, লেগানেস, অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ ও হেতাফে— এই চার দলের বিপক্ষে টানা পয়েন্ট হারিয়েছিল বার্সেলোনা। তার মাঝে লেগানেস ও অ্যাতলেটিকোর বিপক্ষে তো হেরেই মাঠে ছাড়তে হয়েছিল। তাই গত রোববার রাতে অবনমন অঞ্চলে থাকা ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে জয়ের বিকল্প ছিল না কাতালানদের সামনে। দেয়ালে পিঠ থেকে যাওয়াতেই কিনা এই ম্যাচে জ্বলে উঠল হ্যান্সি ফ্লিকের দল। গোল উৎসব করে ভ্যালেন্সিকে ৭-১ ব্যবধানে উড়িয়ে দিলো। ঘরের মাঠ এস্তাদিও অলিম্পিকে বদলি নামার ছয় মিনিট পর জালের দেখা পান বার্সা স্ট্রাইকার রবার্ট লেভানদোভস্কি। যা ছিল চলতি মৌসুমে বার্সেলোনার শততম গোল। চলতি মৌসুমের শুরুতে বার্সার কোচের দায়িত্ব নেয়ার পর ফ্লিকের অধীনে এটি ক্লাবটির শততম গোল। গত গ্রীষ্মে কোচ হয়ে অনন্য এই মাইলফলক স্পর্শ করলেন কোচ হ্যান্সি ফ্লিক। তবে অল্পের জন্য ছুঁতে পারেননি ৭৫ বছর আগের রেকর্ড।
মোট ৩২ ম্যাচে হয়েছে ১০১ গোল, যা বার্সার ইতিহাসে এক মৌসুমের দ্বিতীয় দ্রুততম গোলের সেঞ্চুরি। কেবলমাত্র ১৯৫০-এর দশকে হেলেনিও হেরেরার বার্সেলোনা মাত্র ৩১ ম্যাচে এই সংখ্যায় পৌঁছেছিলেন। তবে পেছনে ফেলে দিয়েছেন লুইস এনরিকে, টিটো ভিলানোভা, ডোমেনেক বালমানিয়া, লাডিস্লাও কুবালা এবং পেপ গার্দিওলাদের মতো কোচদের। ট্রেবল জয়ী লুইস এনরিকের একশ গোল পূরণ করতে লেগেছিল ৩৪ ম্যাচ, একই পরিসংখ্যান টিটো ভিলানোভারও। এছাড়া ৩৬ ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছিলেন ডোমেনেক বালমানিয়া ও লাডিস্লাও কুবালা। জোসেপ গার্দিওলা ৩৭ ম্যাচে এই মাইলফলক স্পর্শ করেছিলেন। বার্সেলোনার এই একশ গোলে জালের দেখা পেয়েছেন ১৫ জন। সবচেয়ে বেশি লেভানদোভস্কি। ২৯ গোল নিয়ে তালিকার শীর্ষে আছেন। তার পরে রয়েছেন রাফিনিয়া (২৩ গোল), লামিন ইয়ামাল (৯ গোল), ফেরান তোরেস (৭ গোল), দানি ওলমো (৬ গোল), পেদ্রি ও পাবলো তোরে (৪ গোল করে), জুলস কুন্দে ও ফার্মিন লোপেজ (৩ গোল করে), ইনিয়াগো মার্তিনেজ, গাভি, পাও ভিক্তর, এরিক গার্সিয়া, ফ্র্যাঙ্কি ডি ইয়ং (প্রতিজন ২টি করে) এবং বালদে (১ গোল)। এছাড়াও দুইটি আত্মঘাতী গোল এসেছে।
বার্সেলোনা লা লিগায় করেছে ৫৯ গোল, চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ২৬ গোল, কোপা দেল রেতে ৯ গোল এবং স্প্যানিশ সুপার কাপে ৭ গোল করেছে। সবচেয়ে বেশি গোল করেছে দলটি রিয়াল মাদ্রিদ ও ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে। দুটি দলের বিপক্ষেই ২টি করে ম্যাচ খেলে গোল দিয়েছেন ৯টি করে। এদিন তিন মিনিট যেতেই ফ্রাঙ্কি ডি ইয়াং ডান পায়ের শটে জাল খুঁজে নিয়ে গোল উৎসবের শুরুটা করেন। পাঁচ মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ফেরান তোরেস। ১৫ মিনিট যেতেই প্রতিপক্ষের রক্ষণের ভুলে স্কোর ৩-০ করেন রাফিনিয়া।
প্রথমার্ধেই চতুর্থ ও পঞ্চম গোলটি আসে ফের্মিন লোপেসের পা থেকে। ম্যাচের ৫৯ মিনিটে ভ্যালেন্সিয়ার হয়ে এক গোল শোধ করেন হুগো দুরো। ৬৬তম মিনিটে আবারো পাঁচ গোলের ব্যবধানে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। লোপেসের কাছ থেকে বল পেয়ে আড়াআড়ি শটে জাল খুঁজে নেন লেভানদোভস্কি। ৭৫তম মিনিটে আত্মঘাতী গোল হজম করে ৭-১ গোলের ভাপে পিষ্ট হয় ভ্যালেন্সিয়া। এই জয়ের ফলে ২১ ম্যাচে ১৩ জয় ও তিন ড্রয়ে ৪২ পয়েন্ট নিয়ে তিনে ফিরেছে বার্সেলোনা। সমান ম্যাচে ৪৯ পয়েন্ট নিয়ে চূড়ায় রিয়াল মাদ্রিদ। আর ৪৫ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে অ্যাতলেটিকো। চার ম্যাচ পর জয়ে ফিরে বার্সার কোচ হ্যান্সি ফ্লিক বলেন, ‘জয়ের জন্য এই ক্ষুধা থাকাটা আমার পছন্দের এবং যেভাবে সেটা প্রকাশ করেছে (ফুটবলাররা) সেটাও। ম্যাচটা ২-০ বা ৩-০তে শেষ হয়ে যায়নি। আমরা খুব দারুণভাবে ম্যাচটা শুরু করেছিলাম। ঘরের মাঠে পরের ম্যাচটাতেও আমাদের এভাবেই এগিয়ে যেতে হবে।’