অনলাইন সংস্করণ
১৯:৪৭, ০৮ জুন, ২০২৫
কোরবানির পশুর চামড়ার বাজারে এবার কিছুটা উন্নতি হলেও কাঙ্ক্ষিত দাম মেলেনি বলে অভিযোগ করেছেন কোরবানিদাতা ও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। এতে বঞ্চিত হয়েছেন গরিব ও অসহায় মানুষরা, যাদের সাহায্যের জন্যই মূলত চামড়া দান করা হয়।
সরকার এবার লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট ৬০-৬৫ টাকা নির্ধারণ করলেও, রাজধানীতে বড় ও মাঝারি গরুর কাঁচা চামড়া ৬০০ থেকে সর্বোচ্চ ৯০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ছোট আকার ও নিম্নমানের চামড়ার দাম ছিল ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা। ঢাকার বাইরের বাজারে এই দাম আরও কম।
চামড়ার বাজার নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেক কোরবানিদাতা। খিলগাঁওয়ের সাইফুল ইসলাম জানান, ১ লাখ ৭০ হাজার টাকার গরুর চামড়া মাত্র ৬৫০ টাকায় বিক্রি করতে হয়েছে। ছাগলের চামড়া বিক্রি করতে না পেরে বিনামূল্যে দিতে হয়েছে বলেও জানান তিনি।
আরেক কোরবানিদাতা বলেন, “৭-৮ বছর আগে গরুর চামড়া ১৮০০-২০০০ টাকায় বিক্রি করলেও এখন তা ৫০০-৬০০ টাকায় নামছে। গরুর দাম দ্বিগুণ হলেও চামড়ার দাম কমেছে কয়েকগুণ।”
মৌসুমি ব্যবসায়ীরাও অভিযোগ করে বলেন, কিনে আনা চামড়া প্রত্যাশিত দামে বিক্রি করতে পারছেন না তারা।
ব্যবসায়ী রজ্জব আলী জানান, ৭০০ টাকায় চামড়া কিনে আনলেও একই দামে বিক্রি করতে হচ্ছে, ফলে লোকসানে পড়েছেন।
আড়তদার আবেদ বেপারী বলেন, “চামড়া কিনে লবণ, কেমিক্যাল, লেবার, গোডাউনসহ খরচ হয় ৩০০-৪০০ টাকা। তাই দাম কিছুটা বেশি হলেও ব্যয়ও বেড়েছে।”
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান সাখাওয়াত উল্লাহ দাবি করেন, গতবারের তুলনায় এবার চামড়ার বাজার ভালো। তিনি জানান, সরকারের লবণ বিতরণ ও অন্যান্য পদক্ষেপে এবার চামড়া নষ্ট হয়নি। তবে স্থানীয়ভাবে প্রভাব খাটিয়ে অনেক সময় কম দামে চামড়া সংগ্রহ করার ঘটনাও ঘটেছে বলে জানান তিনি।
সরকার এবার বিনামূল্যে ৩০ হাজার টন লবণ বিতরণ করেছে এবং কাঁচা ও ওয়েট ব্লু চামড়া রপ্তানির সুযোগ দিয়েছে। সেই সঙ্গে ঈদের দিন থেকে ১০ দিন দেশের বাইরে থেকে ঢাকায় চামড়া আনা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে ১০৩ কোটি ৮৮ লাখ ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ১১.৮ শতাংশ কম। তবে সরকার আশা করছে, নতুন উদ্যোগের ফলে রপ্তানি আবার বাড়বে।
