ঢাকা সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

পাকিস্তানের কাছে হেরেও বিশ্বকাপে টাইগ্রেসরা

পাকিস্তানের কাছে হেরেও বিশ্বকাপে টাইগ্রেসরা

টানা তিন ম্যাচ জিতে নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে এক পা দিয়ে রেখেছিল টাইগ্রেসরা। তবে চতুর্থ ম্যাচেই হঠাৎ ছন্দপতন। ধুঁকতে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে নিগার সুলতানার দল হারলে জটিল হয়ে উঠে সমীকরণ। তবে বিশ্বকাপের পথটা সহজ হয়ে যায় গত শুক্রবার আয়ারল্যান্ডের কাছে স্কটল্যান্ড হারায়। বাছাইপর্বের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানকে হারালেই বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত হয়ে যেত বাংলাদেশের। কম ব্যবধানে হারলেও থাকা যেত নিরাপদ। তবে স্বাগতিকদের বিপক্ষে ব্যাটিং ব্যর্থতায় বড় ব্যবধানে হারল লাল সবুজের কন্যারা। তাই কিছুটা দুশ্চিন্তা নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ-থাইল্যান্ড ম্যাচের দিকে তাকিয়ে ছিল বাংলাদেশ দল।

বিশ্বকাপের টিকেট পেতে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে অবিশ্বাস্য এক জয়ের দরকার ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। সেই চ্যালেঞ্জে খুব কাছে পৌঁছেও গিয়েছিল তারা। ম্যাচটি জিতলেও শেষ দিকে একটু গড়বড় করে হৃদয় ভাঙল তাদের। দ্বিতীয় সেরা দল হয়ে বিশ্বকাপে জায়গা করে নিল বাংলাদেশ।

গতকাল শনিবার লাহোরে থাইল্যান্ডকে ৬ উইকেটে হারিয়ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রতিপক্ষের ১৬৬ রান ১০.৫ ওভারে পেরিয়ে যায় তারা। বিশ্বকাপে খেলতে ম্যাচটি ওয়েস্ট ইন্ডিজকে জিততে হতো ১০.১ ওভারে। আরেকটি উপায়ও ছিল তাদের সামনে। স্কোর সমান করে ছক্কায় ম্যাচ জিতলে ১১ ওভারের মধ্যে ম্যাচ জিতলেও বৈশ্বিক আসরের টিকিট পেত তারা। কিন্তু কোনোটিই করতে পারেনি দলটি।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য সমীকরণ যত কঠিন ছিল, ব্যাট হাতে সেটার নমুনা দেখা গেল না সেই অর্থে। অধিনায়ক হেইলি ম্যাথিউস কিংবা শ্যানেল হেনরি লড়েছিলেন শেষ পর্যন্ত। কিন্তু সেটা যথেষ্ট হলো না। ১১তম ওভারের ৫ম বলে চার এবং ৬ষ্ঠ বলে ছক্কা হলেই কেবল বিশ্বকাপে যেত ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু সরাসরি ছয় হাঁকানোর ফলে ম্যাচ জিতলেও সেটা আর উইন্ডিজ নারীদের পক্ষে থাকেনি। নেট রানরেটে এগিয়ে থেকে বাংলাদেশ চলে গেল নারী বিশ্বকাপের মূলপর্বে। এই ম্যাচের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ নারীদের নেট রানরেট ০.৬৩। আর বাংলাদেশের নেট রানরেট ০.৬৪। থাইল্যান্ডের দেয়া ১৬৭ রানের টার্গেট ১০ দশমিক ৫ ওভারে শেষ করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে দুর্দান্ত মারকুটে এই ব্যাটিংটাও এদিন কাজে লাগলো না তাদের।

নিজেদের ম্যাচে বাংলাদেশ দিনের শুরুতে হেরে গিয়েছিল পাকিস্তানের কাছে। ৭ উইকেটে হার দেখতে হয়েছিল টাইগ্রেসদের। তারপরেও আশার প্রদীপটা একেবারেই নিভে যায়নি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের নারীদের হার কিংবা নেট রানরেটে পিছিয়ে থাকা জ্যোতির দলকে পৌঁছে দেবে বিশ্বকাপে– এটাই ছিল সমীকরণ। সেই কাজটা অনেকটাই সহজ হয়ে যায় থাইল্যান্ডের ব্যাটার নাত্তাখাম চাংথামের কল্যাণে। তার এক ফিফটিতে ভর করে উইন্ডিজ নারীদের বিপক্ষে থাইল্যান্ডের স্কোর হয়েছিল ১৬৬। থাইল্যান্ডের ইনিংস অবশ্য শেষ হতে পারত আরও অনেক আগেই। ওয়েস্ট ইন্ডিজের নারীদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে একসময় ৮৫ রানেই ৭ উইকেট হারায় থাইল্যান্ড। চারে নামা চাংথাম একাই ছিলেন প্রাচীর হয়ে। খেলেছেন ৬৬ রানের ইনিংস। শেষদিকে থাই নারীদের আর কেউই দুই অঙ্কের ঘরে যেতে না পারলেও বলের পর বল খেলে গিয়েছেন, আর সেটাই বাংলাদেশের স্বপ্নটা উজ্জ্বল করেছে বিশ্বকাপের দৌড়ে।

বহু জটিলতার পর জানা যায়, ১০.১ ওভারে ১৬৭ রান করতে হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। সেটা ১১ ওভার পর্যন্ত যেতে পারে। সেক্ষেত্রে স্কোর থাইল্যান্ডের সমান ১৬৬ করতে হবে। এরপরেই দরকার ১ ছক্কা। ১১ ওভারে ১৭২ রান হলেও বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে টপকে চলে যেত ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দুই ক্যারিবিয়ান ওপেনার হেইলি ম্যাথিউস আর কিয়ানা জোসেফ ছিলেন দুর্দান্ত আগ্রাসী। ১২ বলে ২৬ করে কিয়ানা থামলেও অধিনায়ক হেইলি ছুটছিলেন দুর্বার গতিতে।

৭ম ওভারের শেষ বলে থামে তার ২৮ বলে ৭০ রানের ইনিংস। বাংলাদেশের স্বপ্নটাও উজ্জ্বল হয় তখন। কিন্তু তিনে নামা শ্যানেল হাল ছাড়ার নন। ১৭ বলে ৪৮ রান করেছেন। উইন্ডিজ নারীদের চার-ছয়ের কাছে তখন বাংলাদেশের দর্শকরা অসহায়। প্রতিটা ডট বল যেন টাইগ্রেসদের জন্য আশীর্বাদ। ১০.১ ওভারে উইন্ডিজের সংগ্রহ ছিল ১৫৭। পরের বলেই বাউন্ডারি লাইনে ধরা পড়েন শ্যানেল হেনরি। আলিয়াহ অ্যালেইনে প্রথম বলে চার মেরে জমিয়ে দেন সমীকরণ।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত