সতীর্থ দিয়োগো জোতার মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর পর লিভারপুলে ফিরে যাওয়ার ভাবনায় এখন ভয় জাগাচ্ছে মোহামেদ সালাহর মনে। এ ঘটনায় ভেঙে পড়েছে পুরো দল। ফলে প্রাক-মৌসুম প্রস্তুতির জন্য কিছু খেলোয়াড়দের রিপোর্টিং পিছিয়ে দিয়েছে ক্লাবটি। গত বৃহস্পতিবার ভোরে স্পেনে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড দিয়োগো জোতা এবং তার ছোট ভাই আন্দ্রে সিলভা। তাদের গাড়িটি সড়ক থেকে ছিটকে পড়ে আগুন ধরে যায়।
এ দুর্ঘটনার আগে, মাত্র ২২ জুন প্রেমিকা রুতে কার্ডোসোর সঙ্গে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেছিলেন জোতা। নিজের তিন সন্তানকে নিয়ে বিয়ের ভিডিও নিজের ইনস্টাগ্রামেও পোস্ট করেছিলেন তিনি। গতকাল শুক্রবার পর্তুগালে জোতা ও তার ভাইয়ের জন্য আয়োজন করা হয় শোকসভা, শনিবার অনুষ্ঠিত হবে তাদের দাফন।
এ ঘটনায় বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন লিভারপুলের খেলোয়াড়রা।
অধিনায়ক ভার্জিল ফন ডাইক ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, ‘আমি পুরোপুরি বিধ্বস্ত, বিশ্বাসই করতে পারছি না।’ ক্লাব ম্যানেজার আর্নে স্লট বলেছেন, ‘জোতার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আমাদের একতাবদ্ধ থাকতে হবে, একজন আরেকজনের পাশে দাঁড়াতে হবে।’ ইনস্টাগ্রামে জোতাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে মোহামেদ সালাহ লেখেন, ‘আমি সত্যিই বাকরুদ্ধ। গতকাল পর্যন্ত আমি ভাবতেই পারিনি যে, লিভারপুলে ফেরার চিন্তাটাই আমাকে ভীত করবে। দলে খেলোয়াড়রা আসবে, যাবে এটা স্বাভাবিক। কিন্তু এমনভাবে নয়। জোতা আর ফিরবে না, এটা মেনে নেওয়া খুব কঠিন হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমার প্রার্থনা তার স্ত্রী, সন্তান ও তার পরিবার-বিশেষ করে মা-বাবার জন্য, যারা হঠাৎ করে একসঙ্গে দুই সন্তানকে হারালেন। জোতা ও আন্দ্রের কাছের মানুষদের এখন সব থেকে বেশি ভালোবাসা ও সমর্থন প্রয়োজন। তারা কখনওই ভুলে যাওয়ার মতো কেউ নয়,’ যোগ করেন সালাহ।
সালাহর মতোই বাকিরাও শোকগ্রস্ত। গতকাল শুক্রবার লিভারপুল দলের প্রথম দলকে অনুশীলন কেন্দ্রে হাজির হওয়ার কথা থাকলেও তা স্থগিত করে সোমবার পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আগামী ১৩ জুলাই প্রিসিজনে প্রেস্টনের বিপক্ষে প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে ক্লাব। এরইমধ্যে অ্যানফিল্ডে রাখা হয়েছে একটি শোকবই, অর্ধনমিত করা হয়েছে পতাকা। ভক্তরা অ্যানফিল্ড, এমনকি জোতার সাবেক ক্লাব উলভারহ্যাম্পটনের মলিনো স্টেডিয়ামের বাইরে রেখে যাচ্ছেন ফুল, স্কার্ফ ও জার্সি একান্ত অনুভূতির নিঃশব্দ অভিব্যক্তি হয়ে।