
কেন তিনি এ প্রজন্মের সেরা তা আবারও প্রমাণ করলেন কার্লোস আলকারাজ। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ফাইনালে রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে হারালেন ইতালির জ্যানিক সিনারকে। এরমধ্য দিয়ে এই স্প্যানিশ তারকা জিতলেন নিজের দ্বিতীয় ইউএস ওপেন ও ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ গ্র্যান্ড স্ল্যাম শিরোপা। একই সঙ্গে ফিরলেন বিশ্বের এক নম্বর আসনেও। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হাজির হওয়ায় ইউএস ওপেনের ফাইনাল কোর্টে গড়ায় একটু দেরিতে। তার কারণে নিরাপত্তা বাড়ানোয় ম্যাচ শুরু হয় প্রায় আধঘণ্টা পর। গ্যালারিতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পেলেও উপস্থিত ছিলেন আরও অনেক তারকা, রকস্টার ব্রুস স্প্রিংস্টিন, অভিনেতা মাইকেল ডগলাস, ফ্যাশন আইকন টমি হিলফিগার ও বাস্কেটবল তারকা স্টিফেন কারি। তবে এ বিড়ম্বনার পররও নিজেকে মেলে ধরতে সমস্যা হয়নি কার্লোস আলকারেজের।
গত রোববার ইউএস ওপেনের ফাইনালে ইতালির সিনারকে ৬-২, ৩-৬, ৬-১, ৬-৪ গেমে হারিয়ে শিরোপা জিতলেন স্পেনের এই টেনিস তারকা। ট্রফি আর প্রাইজমানির সঙ্গে আলকারাসের প্রাপ্তি আরও অনেক কিছু। গত জুলাইয়ে উইম্বলডনের ফাইনালে এই সিনারের কাছে হেরেছিলেন তিনি। সেটির মধুর প্রতিশোধ নেয়া হলো। পাশাপাশি এই জয়ে নিশ্চিত হয়ে গেল, সিনারকে সরিয়ে র্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বর জায়গাও ফিরে পাচ্ছেন তিনি। তুমুল আগ্রহের কেন্দ্রে থাকা ফাইনালে যথারীতি গ্যালারিতে ছিল নানা আঙিনার তারকাদের ভীড়। সেখানে সবচেয়ে আলোচিত নামটি অবশ্য ডনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট খেলা দেখতে আসায় এদিন নিরাপত্তা তল্লাসির ছিল কড়াকড়ি। দর্শকদের লাইন তাই অনেক লম্বা হয়ে যায়। অনেককেই লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় এক ঘণ্টার বেশি সময়।
খেলাও তাতে একটু দেরিতে শুরু হয়। তারপরও স্থানীয় সময় দুপুর ৩টার একটু আগে খেলা শুরুর সময় অনেক আসন ছিল খালি। কারণ, তখনও অনেকে ঢুকতে পারেননি স্টেডিয়ামে। গ্যালারি থেকে ট্রাম্পকে উল্লাসে স্বাগত জানান অনেকে, অনেকই আবার দুয়ো দেন। খেলা শুরুর পর অবশ্য সব মনোযোগ কেড়ে নেন আলকারাস। সিনার প্রথম সার্ভ করলেও প্রথম গেম দারুণভাবে জিতে নেন আলকারাস। প্রথম সেটও জিতে নেন দাপটে। পরের সেটে অবশ্য ঘুরে দাঁড়ান সিনার। টুর্নামেন্টে প্রথম সেট হারেন আলকারাস। তাতে যেন আরও চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞায় কোর্টে নামেন তিনি। পরের দুই সেটে আর পাত্তাই পাননি সিনার। জয়ের পর খ্যাপাটে উল্লাসে মেতে ওঠেন আলকারাস। র্যাকেটকে গল্ফ ক্লাব বানিয়ে গলফ সুইংয়ের মতো সেই চেনা উদযাপন দেখিয়েও তিনি মাতিয়ে তোলেন গ্যালারি।
ম্যাচের পর তার প্রতিক্রিয়ার শুরুতেই থাকল প্রবল প্রতিদ্বন্বী সিনারের প্রশংসা। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন তিনি নিজের কোচিং স্টাফদের প্রতিও। ‘শুরু করতে চাই ইয়ানিককে দিয়ে, গোটা মৌসুমে যা করেছো, প্রতিটি আসরে যে পর্যায়ের টেনিস খেলেছো, তা অবিশ্বাস্য। তোমাকে এখন পরিবারের চেয়েও আপন করে দেখিৃ। তোমার সঙ্গে কোর্টে নামা, লকার রুমে থামা, সবকিছুই ভাগাভাগি করতে পারা দারুণ। আমার আশপাশে থাকা মানুষগুলোকে নিয়েও গর্বিত আমি। আমার প্রতিটি অর্জন তোমাদের কারণেই এই শিরোপাও তোমাদের।’ ইউওস ওপেনে আলকারাসের দ্বিতীয় শিরোপা এটি। ২০২২ এখানে প্রথম জিতে প্রথমবার এক নম্বরে উঠেছিলেন। এবার সেটির পুনরাবৃত্তি করতে পেরে উচ্ছ্বসিত ২২ বছর বয়সি তারকা। ‘বছরের প্রায় শুরুতেই লক্ষ্য ঠিক করেছিলাম যে, এক নম্বর হতে চাই। সেটি অর্জন করতে দেখাটা অবিশ্বাস্য।