ঢাকা শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

কোটি পেরিয়ে চট্টগ্রামে নাঈম ৯২ লাখে রংপুরে হৃদয়

কোটি পেরিয়ে চট্টগ্রামে নাঈম ৯২ লাখে রংপুরে হৃদয়

গত কয়েকদিন ধরেই দেশের ক্রীড়াঙ্গনে উত্তাপ ছড়িয়েছিল বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) নিলাম নিয়ে। অবশেষে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অনুষ্ঠিত হলো ১২তম আসরের নিলাম। প্রথম ডাকেই উত্তেজনার পারদ চড়ে গেল চূড়ায়। কাড়াকাড়ি পড়ে গেল মোহাম্মদ নাঈম শেখকে নিয়ে। তার জন্য লড়াই করল সিলেট, রংপুর ও নোয়াখালী। ভিত্তিমূল্য থেকে ১৩ ধাপ পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত থামল সেই লড়াই। ততক্ষণে তার পারিশ্রমিক হয়ে গেছে দ্বিগুণের বেশি! তিন দলের লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত জয়টা হয়েছে চট্টগ্রাম রয়্যালসের। ‘এ’ ক্যাটাগরিতে নাঈমের ভিত্তিমূল্য ছিল ৫০ লাখ টাকা। তাকে ১ কোটি ১০ লাখ টাকায় দলে পায় নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি চট্টগ্রাম রয়্যালস। নিশ্চিতভাবেই নিলামের সবচেয়ে দামি ক্রিকেটার হতে যাচ্ছেন তিনি। তবে অতটা লড়াই হলো না বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক লিটন কুমার দাসকে নিয়ে। একই ক্যাটাগরি ও সমান ভিত্তিমূল্যের লিটনকে ৭০ লাখ টাকায় পেয়ে যায় রংপুর রাইডার্স।

লিটনের চেয়ে বেশি লড়াই জমে ওঠে তাওহিদ হৃদয়কে নিয়ে। ‘বি’ ক্যাটাগরিতে ৩৫ লাখ ভিত্তিমূল্যের এই ব্যাটসম্যানকে ৯২ লাখ টাকায় দলে নেয় রংপুর রাইডার্স। আগ্রাসী ব্যাটসম্যান শামীম হোসেনকে ৫৬ লাখ টাকায় নিয়েছে ঢাকা ক্যাপিটালস। প্রথম ডাকে কেউ নেয়নি এই ক্যাটাগরিতে থাকা অভিজ্ঞ দুই ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহকে। অবিক্রিত ক্রিকেটারদের নাম পরে তোলা হবে আবার। নিলামের আগেই সরাসরি চুক্তির পর ‘এ’ ক্যাটাগরিতে বাকি ছিলেন কেবল নাঈম আর লিটন। লটারিতে আগে ওঠে নাঈমের নাম। তাকে প্রথম ডাকে সিলেট টাইটান্স। এরপর প্রতি ডাকে বাড়তে থাকে ৫ লাখ টাকা করে। সিলেটের সঙ্গে প্রথমে লড়াইয়ে আসে রংপুর। পরে যোগ দেয় নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি নোয়াখালী এক্সপ্রেস। তখনও পর্যন্ত দৃশ্যপটে নেই চট্টগ্রাম।

৮০ লাখ টাকা থেকে লড়াইয়ে যোগ দেয় চট্টগ্রাম। সিলেটের সঙ্গে তুমুল লড়াইয়ের পর শেষ পর্যন্ত ১ কোটি ১০ লাখে বাঁহাতি এই ওপেনারকে পেয়ে যায় চট্টগ্রাম। বিপিএলের গত আসরে খুলনা টাইগার্সের হয়ে ৪২.৫৮ গড় ও প্রায় ১৯৪ স্ট্রাইক রেটে ৫১১ রান করেছিলেন তিনি। এরপর আসে লিটনের পালা। তাকে নিয়ে সিলেটের সঙ্গে কিছুটা লড়াই করে ৭০ লাখে পেয়ে যায় রংপুর। নাঈমের মতো কাড়াকাড়ি পড়ে যায় হৃদয়কে দলে পেতে। ভিত্তিমূল্যের দ্বিগুনের বেশি দামে তাকে নেয় রংপুর।

গত বিপিএলে চিটাগং কিংসের হয় দুর্দান্ত পারফর্ম করা পেসার সৈয়দ খালেদ আহমেদকে ৪৭ লাখ টাকায় দলে নেয় সিলেট টাইটান্স। নিলামের মাঝমাঝি পর্যন্ত সবচেয়ে বড় চমক বলা যায় অবশ্য মোহাম্মদ মিঠুন। গত তিন বিপিএলে ভালো পারফর্ম না করলেও তাকে নিয়ে লড়াই জমে যায় ঢাকা ক্যাপিটালস ও নোয়াখালী এক্সপ্রেসের। ২২ লাখা টাকা ভিত্তিমূল্যের ব্যাটসম্যান শেষ পর্যন্ত ৫২ লাখ টাকায় ঠাঁই পান ঢাকায়।

মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিনও বেশ উত্তেজনা ছড়ান নিলামের টেবিলে। এই পেস বোলিং অলরাউন্ডারকে ৬৮ লাখ টাকায় নেয় ঢাকা ক্যাপিটালস। গতি তারকা নাহিদ রানাকে নিয়েও বেশ লড়াই হয়। ৫৬ লাখ টাকায় তাকে আবার দলে নেয় রংপুর রাইডার্সকে। ভিত্তিমূল্য ৩৫ লাখ রুপিতে জাকের আলি ও মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনকে দলে পায় নোয়াখালী এক্সপ্রেস। বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলামকে ৩০ লাখে পায় ঢাকা ক্যাপিটালস।

সম্প্রতি রাইজিং স্টার্স এশিয়া কাপে নজরকাড়া রিপন মন্ডলকে ২৫ লাখে পেয়ে উচ্ছ্বসিত হয়ে যায় রাজশাহী ওয়ারিয়র্স। দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় দলের বাইরে থাকা ব্যাটসম্যান সাব্বির রহমানকে ২৮ লাখ টাকায় দলে নেয় ঢাকা। ১৮ লাখ টাকা ভিত্তিমূল্যের হাবিবুর রহমান সোহানকে ৫০ লাখ টাকায় দলে পায় নোয়াখালী এক্সপ্রেস। এই মাসেই রাইজিং স্টার্স এশিয়া কাপে ১৪ বলে ফিফটি ও ৩৫ বলে সেঞ্চুরি করে রেকর্ড গড়েন ২৬ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান।

কোন দলে কারা-

ঢাকা ক্যাপিটালস

স্থানীয় খেলোয়াড় : তাসকিন আহমেদ ও সাইফ হাসান

বিদেশি খেলোয়াড় : অ্যালেক্স হেলস ও উসমান খান

নিলাম থেকে নেওয়া স্থানীয় খেলোয়াড় : শামীম হোসেন, সাইফউদ্দিন, মোহাম্মদ মিঠুন, তাইজুল ইসলাম, সাব্বির রহমান, নাসির হোসেন, তোফায়েল আহমেদ, ইরফান শুক্কুর

সিলেট টাইটানস

স্থানীয় খেলোয়াড় : মেহেদী হাসান মিরাজ ও নাসুম আহমেদ

বিদেশি খেলোয়াড় : মোহাম্মদ আমির ও সাইম আইয়ুব

নিলাম থেকে নেওয়া স্থানীয় খেলোয়াড় : পারভেজ হোসেন, খালেদ আহমেদ, আফিফ হোসেন, রনি তালুকদার, জাকির হাসান, রুয়েল মিয়া, আরিফুল ইসলাম, ইবাদত হোসেন

রংপুর রাইডার্স

স্থানীয় খেলোয়াড় : মোস্তাফিজুর রহমান ও নুরুল হাসান

বিদেশি খেলোয়াড় : খাজা নাফে ও সুফিয়ান মুকিম

নিলাম থেকে নেওয়া স্থানীয় খেলোয়াড় : লিটন দাস, তাওহিদ হৃদয়, নাহিদ রানা, রাকিবুল হাসান, আলিস আল ইসলাম, মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী, নাঈম হাসান, কামরুল ইসলাম

নোয়াখালী এক্সপ্রেস

স্থানীয় খেলোয়াড় : হাসান মাহমুদ ও সৌম্য সরকার

বিদেশি খেলোয়াড় : জনসন চার্লস ও কুশল মেন্ডিস

নিলাম থেকে নেওয়া স্থানীয় খেলোয়াড় : মাহিদুল ইসলাম, জাকের আলী, হাবিবুর রহমান, মুশফিক হাসান, শাহাদাৎ হোসেন, রেজাউর রহমান

রাজশাহী ওয়ারিয়র্স

স্থানীয় খেলোয়াড় : নাজমুল হোসেন ও তানজিদ হাসান

বিদেশি খেলোয়াড় : সাহিবজাদা ফারহান ও মোহাম্মদ নেওয়াজ

নিলাম থেকে নেওয়া স্থানীয় খেলোয়াড় : তানজিম হাসান, ইয়াসির আলী, আকবর আলী, রিপন মণ্ডল, জিসান আলম, হাসান মুরাদ, আব্দুল গাফফার, মেহরব হাসান

চট্টগ্রাম রয়্যালস

স্থানীয় খেলোয়াড় : মেহেদী হাসান ও তানভীর ইসলাম

বিদেশি খেলোয়াড় : আবরার আহমেদ

নিলাম থেকে নেওয়া স্থানীয় খেলোয়াড় : মোহাম্মদ নাঈম, শরীফুল ইসলাম, আবু হায়দার, মাহমুদুল হাসান, মাহফিজুল ইসলাম, সুমন খান, জিয়াউর রহমান, আরাফাত সানি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত