ঢাকা মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

শামসুরকে বিদায়ী ‘গার্ড অব অনার’

শামসুরকে বিদায়ী ‘গার্ড অব অনার’

দুইপাশে সারি বেঁধে দাঁড়িয়ে সতীর্থরা। দুইপাশ থেকে ব্যাট উঁচিয়ে ধরা হলো ব্যাট। তাদের মধ্য দিয়ে মাঠে প্রবেশ করলেন শামসুর রহমান। ‘গার্ড অব অনার’ পাওয়ার পালা তার শেষ নয় সেখানেই। মাঠের ভেতরে পিচের কাছে একইভাবে দুইপাশে সারিবদ্ধ দাঁড়িয়ে প্রতিপক্ষ সিলেট দলের ক্রিকেটাররাও। তারাও করতালিতে স্বাগত জানালেন শামসুরকে। এগিয়ে এসে হাত মেলালেন অধিনায়ক জাকির হাসান। পিঠ চাপড়ে দিলেন মুশফিকুর রহিম। দুই দফা ‘গার্ড অব অনার’ পেয়ে প্রথমশ্রেণির ক্রিকেটে শেষবার ব্যাট করতে নামলেন শামসুর। বিদায়ী ইনিংসটি অবশ্য খুব লম্বা হলো না। ১৭ বলে ১৭ রান করে তিনি আউট হলেন তোফায়েল আহমেদের বলে দ্বিতীয় স্লিপে মুবিন আহমেদ দিশানের দারুণ ক্যাচে। ফেরার পথে আবার পেলেন অভিনন্দনের ডালি। প্রতিপক্ষের সবাই জড়ো হয়ে করমর্দন করলেন, পিঠ চাপড়ে দিলেন, আলিঙ্গনে জড়ালেন। সবাই একসঙ্গে তালি দিয়ে বিদায় দিলেন শামসুরকে।

মাঠের বাইরে আরও এক দফায় ‘গার্ড অব অনার’ পেলেন তিনি সতীর্থ ক্রিকেটার ও স্টাফদের কাছ থেকে। ড্রেসিংরুমে ফেরার সময় হেলমেটের গ্রিলের ফাঁক দিয়েও দেখা গেল, তার গাল বেয়ে নামছে অশ্রুধারা। ২০০৫ সালের ১ জানুয়ারি প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে প্রথমবার মাঠে নেমেছিলেন শামসুর। বিসিবি একাদশের হয়ে খেলেছিলেন তিনি সফরকারী জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। দীর্ঘ সেই পথচলা এবার থামছে। সাদা পোশাকে শেষ ইনিংসটি তিনি খেলে ফেললেন বরিশাল বিভাগের হয়ে সোমবার। রাজশাহীতে মঙ্গলবার জাতীয় লিগের ম্যাচের শেষ দিনটিই হবে এই সংস্করণে তার ক্যারিয়ারের শেষ দিন। শামসুরের সেই অভিষেক ম্যাচের একাদশ থেকে এখনও খেলে যাচ্ছেন শুধু আর দুজন। সেই ম্যাচ দিয়ে অভিষেক হয়েছিল সাকিব আল হাসান ও মুশফিকের। সাকিব এখন দেশে ফিরতে না পারলেও খেলে যাচ্ছেন নানা লিগে। মুশফিক তো মাঠেই আছেন শামসুরের বিদায়ী ম্যাচে। প্রায় ২১ বছরের ক্যারিয়ারে ১৬০ ম্যাচ খেলে ৩৬.২৩ গড়ে ৯ হাজার ৬০২ রান নিয়ে শেষ হচ্ছে তার ক্যারিয়ার। সেঞ্চুরি ২৩টি, ফিফটি ৪৬টি। শেষ ম্যাচের মতো শেষ মৌসুমটিও তার খুব ভালো কাটেনি। ৫ ম্যাচে ৯ ইনিংস খেলে কোনো ফিফটি তিনি করতে পারেননি।

দীর্ঘ এই পথচলায় বাংলাদেশকে টেস্ট ক্রিকেটে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগও তার হয়েছিল ২০১৪ সালে। দ্বিতীয় টেস্টেই সেঞ্চুরি করেছিলেন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চট্টগ্রামে। তবে এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে ফিফটি পাননি। ৬ টেস্টের ক্যারিয়ার শেষ ওই বছর। সুযোগ পাননি আর কখনও। শেষ ইনিংসটির পর সামাজিকমাধ্যমে তার প্রতিক্রিয়ায় মিশে থাকল মিশ্র অনুভূতির ছোঁয়া। ‘আজকে প্রথমশ্রেণির ক্রিকেটে শেষ ইনিংসটি খেললাম। জানি না, কতটা অর্জন করতে পেরেছি- তবে সবসময় চেষ্টা করেছি নিজের প্রতি সৎ থাকতে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত