ঢাকা মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

কবরে মাটি দেওয়ার নিয়ম

মাওলানা জাবের আহমদ
কবরে মাটি দেওয়ার নিয়ম

মানুষ মরণশীল। ক্ষণস্থায়ী পৃথিবীতে স্থায়ী নয় কেউই। দুনিয়ার টাকা-পয়সা, ধন-সম্পদ, পরিবার-পরিজন, বন্ধুবান্ধব সবাইকে ছেড়ে একদিন পাড়ি জমাতে হবে ওপারে। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘প্রত্যেক প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদগ্রহণ করতে হবে এবং তোমরা নিজ নিজ কাজের প্রতিফল সম্পূর্ণভাবেই কেয়ামতের দিন পাবে...।’ (সুরা আলে ইমরান : ১৮৫)।

আল্লাহতায়ালা আরও বলেন, ‘অতঃপর নির্ধারিত সময়ে যখন তাদের মৃত্যু এসে যাবে, তখন একমুহূর্তও বিলম্বিত কিংবা ত্বরান্বিত করতে পারবে না।’ (সুরা নাহল : ৬১)।

কারও মৃত্যু হলে তার জানাজা ও দাফন দেওয়া জীবিতদের ওপর ফরজে কিফায়া। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের জানাজায় শরিক হয়ে নামাজ পড়ে এবং তাকে কবরও দেয়, সে দুই কিরাত নেকি পাবে। আর যে ব্যক্তি শুধু জানাজার নামাজ পড়ে; কিন্তু মাটি দেয় না, সে এক কিরাত নেকি পাবে। সাহাবায়ে কেরাম রাসুলুল্লাহকে (সা.) জিজ্ঞাসা করলেন, দুই কিরাতের পরিমাণ কতটুকু? তিনি বললেন, প্রত্যেক কিরাত উহুদ পাহাড়সমান নেকি।’ (বোখারি : ৪৭)।

মৃত ব্যক্তিকে দাফনের সময় উপস্থিত লোকদের জন্য কবরে তিনবার উভয় হাত দিয়ে মাটি দেওয়া এবং তা মৃত ব্যক্তির মাথার দিক থেকে দেওয়া মুস্তাহাব। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) এক জানাজার নামাজ আদায় করে মৃতের কবরের কাছে আসেন এবং তার মাথার দিকে তিনবার মাটি দেন।’ (ইবনে মাজাহ : ১৫৬৫; তাবয়িনুল হাকায়েক, ১/৫৮৭)। কবরে দুই হাতে মাটি দিতে হয়। মাটি দেওয়ার সময় দোয়া পড়া উত্তম। রাসুলুল্লাহ (সা.) মাটি দেওয়ার সময় দোয়া পড়তেন। আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কন্যা উম্মে কুলসুমকে কবরে রাখা হয়, তখন তিনি বললেন-

বাংলা উচ্চারণ : মিনহা খালাকনাকুম, ওয়া ফিহা নুয়িদুকুম, ওয়ামিনহা নুখরিজুকুম তা রাতান উখরা।

বাংলা অর্থ : আমি মাটি থেকে তোমাদের সৃষ্টি করেছি, আর মাটিতেই তোমাদের ফিরিয়ে আনব। পুনরায় তোমাদের মাটি থেকে বের করব।’ (সুরা তহা : ৫৫)।

কোনো ব্যক্তিকে মাটি দেওয়ার সময় এটা বলার নিয়ম হলো, প্রথমবার মাটি দেওয়ার সময় ‘মিনহা খালাকনাকুম’ বলতে হয়। দ্বিতীয়বার ‘ওয়া ফিহা নুয়িদুকুম’ বলতে হয়। আর তৃতীয়বার বলতে হয় ‘ওয়া মিনহা নুখরিজুকুম তা রাতান উখরা।’ (বায়হাকি : ৬৯৭৩)।

লেখক : আলেম ও মাদ্রাসা শিক্ষক

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত