ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৮ আশ্বিন ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

কাউখালীতে অবাধে বিক্রি হচ্ছে ভেজাল গুড়া মসলা

কাউখালীতে অবাধে বিক্রি হচ্ছে ভেজাল গুড়া মসলা

পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার হাট-বাজারগুলোতে অবাধে বিক্রি হচ্ছে ভেজাল গুড়া মসলা। বিশেষত হলুদ, মরিচ ও ধুনিয়ার গুঁড়ার মতো মসলাগুলো খোলা বাজারে কম দামে বিক্রি হচ্ছে। এইসব মসলার মান সম্পর্কে কোনো সনদপত্র বা অনুমোদন না থাকায় খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

বাজার অনুসন্ধান করে জানা গেছে, বাজারে কোম্পানির প্যাকেটজাত ১ কেজি মরিচের গুঁড়া বিক্রি হচ্ছে ৬৭০ থেকে ৬৯০ টাকায়, ১ কেজি হলুদের গুঁড়া ৬৬০ থেকে ৬৮০ টাকায়, এবং ধুনিয়ার গুঁড়া ৪০০ টাকার বেশি দামে। অথচ খোলা বাজারে একই মসলা পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়।

সচেতন মহলের প্রশ্ন, কোম্পানির পণ্যের তুলনায় অর্ধেক দামে এই মসলাগুলো কীভাবে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া এই সমস্ত খোলা বাজারে বিক্রি করা মসলাগুলোর মান সঠিক আছে কিনা এ বিষয়ে তাদের কাছে কোন সনদপত্র বা কাগজপত্র মিলছে না। অথচ সকলের চোখের সামনেই কাউখালী উপজেলার দক্ষিণ বাজার বড় মসজিদের সামনে শুক্র ও সোমবার সাপ্তাহিক বাজারের দিনে বিভিন্ন মসলা ব্যবসায়ীরা দোকান সাজিয়ে বসে এবং শত শত কেজি হলুদ, মরিচ,সহ বিভিন্ন প্রকারের গুঁড়া মসলা বিক্রি করেন। খোলা বাজার থেকে হলুদ মরিচের গুঁড়ো ক্রয় করা ভোক্তা বেলাল হোসেন সিকদার বলেন খোলা বাজার থেকে গুড়া মসলা ক্রয় করে রান্না করলে কোন স্বাদ পাওয়া যায় না। এছাড়া খাবার পরে হাতে রং মিশে থাকে। এই সমস্ত খাবার ফ্রিজে রাখলে তরকারির রং এ পরিবর্তন দেখা যায়।

কম দামে পাওয়া যায় বলে গরীব ও সাধারণ মানুষ খোলা বাজার দিয়ে গুড়া মশলা ক্রয় করে থাকে।

দক্ষিণ বাজারে শুক্র ও সোমবার হাটের দিন দেখা যায় ইন্দেরহাট, স্বরূপকাঠি ও কাউখালীর স্থানীয় কিছু মসলা ব্যবসায়ী নিয়মিত দোকান বসিয়ে হাজার হাজার টাকার মসলা বিক্রি করেন। এমনকি এই সমস্ত মসলা ছোট বড় দোকানগুলোতে পাইকারি ক্রয় করে ভোক্তাদের মাঝে খোলা মশলা হিসেবে খুচরা বিক্রি করেন। নিয়ম অনুযায়ী নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তর ও বিএসটিআই কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে সনদপত্র দিলে খাদ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করা কথা।

তবে ব্যবসায়ীদের কাছে অনুমতি পত্র যেমন নাই তেমনি ভাবে কাউখালীতে নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তরের কোন কর্মকর্তাকে কখনো অভিযান চালানোর সংবাদ পাওয়া যায় নাই। ভেজাল প্রতিরোধে প্রশাসনের কোনো কার্যকর উদ্যোগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না বলে জানান ক্রেতারা।

ক্রেতারা জানান, খোলা বাজারের মসলাগুলোতে স্বাদ পাওয়া যায় না, রান্নার পর হাতে রং লেগে থাকে এবং ফ্রিজে রাখলে তরকারির রং পরিবর্তন হয়ে যায়।

নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক অনেকেই জানিয়েছেন- চাল, ডাল, ধানের তুষ এবং ঘাসের বীজের সঙ্গে কৃত্রিম রঙ মিশিয়ে এই ভেজাল মসলা তৈরি করা হয়। এসব মসলা হাটবাজারের মুদি দোকান, হোটেল-রেস্তোরাঁ এবং এতিমখানাগুলোতে পাইকারি দামে বিক্রি হচ্ছে। ভেজাল মসলার বড় ক্রেতা হচ্ছে হাটবাজারের মুদি দোকানি ও বন্দরের বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরাঁ লিল্লাহ বোর্ডিং ও এতিমখানা।

কাউখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার দীপ্ত কুন্ডু বলেন, ভেজাল মসলা থেকে পাকস্থলীর বিভিন্ন জটিল রোগ, হৃদরোগ, লিভার ও কিডনি সমস্যা এমনকি ক্যান্সারের মতো প্রাণঘাতী রোগ হতে পারে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্বজল মোল্লা জানান, "ভেজাল মসলা বিক্রির বিষয়ে কোনো অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

ভেজাল,গুড়া মসলা
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত