ঢাকা বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

চলতি মাসেই উদ্বোধন

যমুনা রেলওয়ে সেতু দিয়ে দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর ট্রেন চলাচল শুরু

যমুনা রেলওয়ে সেতু দিয়ে দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর ট্রেন চলাচল শুরু

দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর যমুনা নদীর বুকে নবনির্মিত যমুনা রেলওয়ে সেতু দিয়ে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। এতে যমুনা বহুমুখী সেতুতে ট্রেন চলাচল প্রায় ২৭ বছরের অবসান ঘটলো। রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী আন্তঃনগর সিল্কসিটি এক্সপ্রেস যাত্রীবাহী ট্রেন বুধবার বেলা ১১.১৭ মিনিটে সেতুতে ওঠে এবং ১১.২৪ মিনিটে টাঙ্গাইল প্রান্তে পৌঁছে। এসময় ট্রেনের গতিবেগ ছিল প্রায় ৭০ কিলোমিটার। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের বিভাগীয় প্রকৌশলী-২ বীরবল মন্ডল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, যাত্রী নিয়ে বাণিজ্যিক ভাবে ট্রেন প্রথমবারের মতো যমুনা রেলওয়ে সেতু পার হয়েছে। ওই ট্রেনটি প্রতিদিন রাজশাহী স্টেশন থেকে ৬০০ যাত্রী নিয়ে সকাল ৬.৪০ মিনিটে ১১ বগির ট্রেনটি ছাড়লেও বিভিন্ন স্টেশন থেকে যাত্রী নিবে। ওই সেতু প্রকল্পের পরিচালক আল ফাত্তাহ মোঃ মাসউদুর রহমান বলেন, বুধবার বেলা সোয়া ১১ টায় রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী ওই এক্সপ্রেস ট্রেনটি যমুনা বহুমুখী সেতুর ৩০০ মিটার উজানে নবনির্মিত যমুনা রেলওয়ে সেতু প্রথম পাড়ি দেয়ার ইতিহাস গড়লো। নবনির্মিত যমুনা রেলওয়ে সেতু ডাবল লাইনের হলেও প্রথমে এক লাইন দিয়েই ট্রেন চলাচল করবে। তবে চলতি মাসেই আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে বলে জানান তিনি। এরপর পর্যায়ক্রমে দেশের দীর্ঘতম নবনির্মিত যমুনা রেলওয়ে সেতু দিয়ে সিডিউল অনুযায়ী বাকি ট্রেনগুলো চলাচল করবে।

বিরতিহীনভাবে কমপক্ষে ৮৮টি ট্রেন দ্রæত গতিতে দেশের এ দীর্ঘতম রেলসেতু দিয়ে পারাপার হতে পারবে। এতে আগের চেয়ে ২৫ থেকে ৩০ মিনিট সময় বেঁচে যাবে সেতু পারাপারে। ১৯৯৮ সালে প্রমত্তা যমুনা নদীর ওপর নির্মিত যমুনা সেতু চালু হওয়ার পরই ঢাকার সঙ্গে উত্তর-দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয় এবং এ সেতু চালু হওয়ার প্রায় ১০ বছর পর ২০০৮ সালে সেতুটিতে ফাঁটল দেখা দেয়ায় ট্রেনের গতি কমিয়ে দেয়া হয় এবং সেই থেকে প্রতিদিন প্রায় ৩৮টি ট্রেন ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে সেতু পারাপার হচ্ছিল।

এ সমস্যা সমাধানের লক্ষে ২০২০ সালের ৩ মার্চ যমুনা বহুমুখী সেতুর উজানে আলাদা রেলওয়ে সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয় এবং ওই বছরের ২৯ নভেম্বর রেল সেতুটি নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তুর স্থাপন করা হয়। এ রেলসেতুর প্রথম পিলার নির্মাণে ২০২১ সালের মার্চে পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয়। দেশের দীর্ঘতম এ রেলওয়ে সেতু প্রকল্পের প্রথম নির্মাণ ব্যয় ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা নির্ধারিত হয় এবং পরে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকায় উন্নীত করা হয়। এরমধ্যে ২৭ দশমিক ৬০ শতাংশ অর্থায়ন করেছে দেশি উৎস থেকে এবং ৭২ দশমিক ৪০ শতাংশ ঋণ দিয়েছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)।

দেশের সর্ববৃহৎ এ রেলওয়ে সেতুর নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করেছে জাপানি কোম্পানি ওটিজি ও আইএইচআই জয়েন্টভেঞ্চার। শুরুতে এ সেতুর নাম ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু রাখা হলেও শেখ হসিনার সরকারের পতনের পর অর্ন্তবতী সরকার প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে গত ডিসেম্বরে সেতুর নাম পরিবর্তন করে যমুনা রেলসেতু রাখা হয়।

ট্রেন
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত