ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ১২ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ট্রেন না থামলেও থেমে গেছে ছোট্ট আয়েশার জীবন

ট্রেন না থামলেও থেমে গেছে ছোট্ট আয়েশার জীবন

চট্টগ্রামের কালুরঘাট রেলসেতুতে ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে দুই বছর বয়সী শিশু আয়েশা।

বৃহস্পতিবার (৫ জুন) রাতে বাবা-মায়ের সাথে অটোরিকশায় থাকা অবস্থায় ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ হারায় এই নিষ্পাপ শিশুটি।

মেয়েকে হারিয়ে তাই পাগলপ্রায় বাবা, তার আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।

জানা যায়, স্ত্রী জুবাইদা ফেরদৌস ইসরা ও একমাত্র সন্তান আয়েশাকে নিয়ে অটোরিকশায় ছিলেন মিঠু। তাদের অটোরিকশাটি সেতুর ওপর আটকে পড়ে আর ঠিক তখনই দ্রুতগতিতে ছুটে আসে কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেন। মুহূর্তেই ওলটপালট হয়ে যায় সবকিছু।

আয়েশার বাবা মিঠু বলেন, বুকফাটা কষ্টে ভেঙে পড়া আয়েশার বাবা মিঠু বলেন, আমরা অটোরিকশায় ছিলাম। এটা একেবারে শেষে ছিল। আমাদের সামনে একটা টেম্পো ছিল। ট্রেনের চালক বারবার হর্ন দিচ্ছিলেন। লাইনম্যান ব্রিজের ওপর চলে আসে। টেম্পোটা ক্রস করে চলে যায়। কিন্তু আমাদের অটোরিকশা আটকে যায়।

তিনি বলেন, আমি জানি না এটা কাদের গাফিলতি। তবে কর্তৃপক্ষ এজন্য দায়ী। আমার একটাই দাবি, এই সেতুতে আমি আর ট্রেন চলতে দেব না। যদি চলে তবে আমি আমার জীবন দিয়ে দেব।

এসময় চোখের পানি ফেলতে ফেলতে তিনি বলেন, আমি আল্লাহর গজব দিচ্ছি। আমার ২ বছরের বাচ্চা। আমার ৩০ বছর বয়স, আমি গোনাহ করেছি কিন্তু সে তো নিষ্পাপ।

প্রত্যক্ষদর্শী ও রেল কর্তৃপক্ষ জানায়, দুর্ঘটনার সময় একটি গাড়ি সেতুর ওপর নষ্ট হয়ে যানজট সৃষ্টি করে। তখন কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামমুখী ট্রেনটির চালক লাল সিগন্যাল ও গার্ডের লাল পতাকা উপেক্ষা করে দ্রুতগতিতে কালুরঘাট সেতুতে ওঠে পড়ে। এর ফলে অটোরিকশা, মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেলসহ কয়েকটি গাড়িকে ধাক্কা দেয় ট্রেনটি। এতে শিশু আয়েশাসহ মোট তিনজন নিহত ও পাঁচজন আহত হন।

জালানিহাট স্টেশন মাস্টার মো. নেজাম উদ্দিন বলেন, ট্রেনটি রাত ১০টা ১০ মিনিটে এটি কালুরঘাট রেলসেতুর অদূরে পৌঁছায়। ওইসময় সেতুর ওপরে একটি গাড়ি নষ্ট হয়ে গেলে যানজট তৈরি হয়। আমরা তখনই লাল সিগন্যাল দিই। গার্ডও হাতে লাল পতাকা নিয়ে সিগন্যাল দেন। কিন্তু চালক সিগন্যাল মানেননি।

ট্রেন,আয়েশা
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত