ঢাকা সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ৯ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

চামড়া পাচার ঠেকাতে যশোর সীমান্তে বিশেষ সতর্কতা

চামড়া পাচার ঠেকাতে যশোর সীমান্তে বিশেষ সতর্কতা

কোরবানির ঈদকে ঘিরে ভারতে চামড়া পাচার ঠেকাতে যশোরের বিভিন্ন সীমান্ত পথে ব্যাপক সতর্ক অবস্থান নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

বিশেষ করে শার্শা উপজেলার ১০২ কিলোমিটার সীমান্তের শিকারপুর, কাশিপুর, রঘুনাথপুর; বেনাপোলের পুটখালি, দৌলতপুর, সাদিপুর, ঘিবা, গোগা, রুদ্রপুর, অগ্রভুলোট, পাঁচভুলোট ও দাদখালি সীমান্তকে চামড়া পাচারের পথ হিসেবে চিহ্নিত করে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের আশঙ্কার পরিপ্রেক্ষিতে চিহ্নিত এসব এলাকায় সীমান্তরক্ষা বাহিনীর পাশাপাশি পুলিশও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলে জানান যশোর-৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী।

রাজধানীর পর দেশে পশুর চামড়ার সবচেয়ে বড় মোকাম যশোরের রাজারহাট। সেখানে দুই শতাধিক আড়তের সঙ্গে ২১ জেলার ব্যবসায়ীরা জড়িত। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এ মোকামের ওপর নির্ভরশীল প্রায় ১০ হাজার মানুষ।

এবার কোরবানির পশুর সংখ্যা তুলনামূলক কম; অথচ চামড়ার নিম্নদর নির্ধারণ, লবণের দাম বৃদ্ধি, ট্যানারি মালিকদের কাছে পাওনা টাকা অনাদায়ি আর বকেয়া পরিশোধে টালবাহানার কারণে চামড়া ভারতে পাচারের আশঙ্কা করছেন যশোরের ব্যবসায়ীরা।

বেনাপোলের চামড়া ব্যবসায়ী মনির হোসেন, বাগআচড়ার শেখ সহিদুল ইসলাম, শার্শার মোসলেম আলি এবং নাভারনের ইয়াকুব আলিও একই সুরে কথা বলেন।

তারা বলেন, সরকার চামড়া কেনার জন্য ট্যানারি মালিকদের ঋণ দিলেও সেই অর্থের পুরোটা তারা ব্যয় করেন না। এ ছাড়া স্থানীয় চামড়া ব্যবসায়ীরা ঋণ পান না। কোরবানির সময় তাদের হাতে টাকা থাকে না। ফলে ‘সিন্ডিকেট করে’ চামড়ার দাম কমিয়ে দেওয়া হয়। তখন বেশি দামের আশায় অসাধু ব্যবসায়ীরা বেছে নেন সীমান্তের চোরাই পথ।

চামড়া ব্যবসায়ী মোসলেম আলি বলেন, “পেশাদার চামড়া ব্যবসায়ীদের পুঁজি সংকটের সুযোগ নেয় চোরাকারবারিরা। পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে তারা বাজার দরের চেয়ে বেশি দামে চামড়া সংগ্রহ করেন। পরে সুযোগ বুঝে পাচারকারীদের কাছে সেই চামড়া তুলে দেওয়া হয়।”

বেনাপোলের দক্ষিণাংশের সীমান্তে নিরাপত্তার দায়িত্বে আছে খুলনা ২১ বিজিবি ব্যাটালিয়ন। এই ব্যাটেলিয়ানের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ খুরশীদ আনোয়ার বলেন, “কোরবানির পশুর চামড়া পাচার হওয়ার এবার কোনও সম্ভাবনা নেই।

“কারণ দৌলতপুর, পুটখালি, গোগা রুদ্রপুর, দাদখালি, পাচভুলোট ও অগ্রভুলোট সীমান্তের ইছামতি নদী দিয়ে চামড়া পাচারের শঙ্কার বিষয়টি মাথায় রেখে সেখানে বাড়তি সতর্কতা ও বাহিনীর সদস্য সংখ্যা বাড়ানোসহ নদীতে টহল জোরদার করা হয়েছে।”

বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি রাসেল মিয়া বলেন, সীমান্তে বিজিবি সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার পাশাপাশি সীমান্ত অভিমুখে চামড়া বোঝাই যান চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ ছাড়া সীমান্তবর্তী পুলিশ ফাঁড়িগুলোকেও সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

যশোর-৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী বলেন, “যশোরের সীমান্ত দিয়ে চামড়া পাচারের সম্ভবনা খুবই কম। তারপরও আমরা সতর্ক আছি।

“সীমান্তের সব বিওপি ক্যাম্পগুলোকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ঈদের দিন বিকাল থেকে অতিরিক্ত টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।”

শার্শার সীমান্তা দিয়ে চামড়া পাচার রোধে ও ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন এবং তল্লাশি চৌকি স্থাপন করা হয়েছে বলে জানান শার্শা থানার ওসি কে এম রবিউল ইসলাম ।

চামড়া,পাচার
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত