কক্সবাজারের চকরিয়ায় আমন মৌসুমে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযানে সফলতা পায়নি উপজেলা খাদ্য বিভাগ। গত বছর আগস্ট মাস থেকে সরকারীভাবে এ ধান ও চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হলেও তাতে সাড়া মেলেনি কৃষক ও মিলারদের পক্ষ থেকে। অথচ খাদ্য বিভাগ এ নিয়ে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণাও চালিয়েছিল। কিন্তু তাতেও কৃষক এবং মিলাররা সাড়া না দেয়ায় আমন মৌসুমের ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান এক প্রকার শূন্যের কোটায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা খাদ্য বিভাগ।
চকরিয়া উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা যায়, আমন মৌসুমে চকরিয়ায় সরকারিভাবে কৃষক পর্যায় থেকে ৩৩ টাকা কেজি দরে ১৩৪৭ মেট্রিক টন ধান ও ৪৬ টাকা কেজি দরে মিলারদের (রাইচ মিল মালিক) কাছ থেকে ১৬৪১ মেট্রিক টন আতপ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের ২৮ তারিখ ধান সংগ্রহ অভিযানের বেঁধে দেওয়া সময় শেষ হচ্ছে। কিন্তু ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সরকারিভাবে সংগ্রহ করা এককেজি ধানও গুদামে উঠেনি। আর ১৬৪১ মেট্রিক টন আতপ চাল সংগ্রহের ব্যাপারে উপজেলা খাদ্য বিভাগ স্থানীয় ৬ জন মিলারের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়। এসব মিলাররা আগামী ১৫ মার্চের মধ্যে উপরোক্ত আতপ চাল সরকারী গুদামে সরবরাহ দেয়ার ব্যাপারে চুক্তিতে উল্লেখ রয়েছে।
খাদ্য বিভাগের তথ্য মতে, কাকারা ইউনিয়নের মেসার্স সোনালী এগ্রো রাইস মিল ২৯৪ মেট্রিক টন, চিরিংগা ইউনিয়নের নিউ জনতা অটো রাইস মিল ২৫৮ মেট্রিক টন, বরইতলী ইউনিয়নের বানিয়াছড়া স্টেশনস্থ চিরিংগা অটো রাইস মিল ৩২১ মেট্রিক টন, চকরিয়া পৌর এলাকার মেসার্স জাকের অটো রাইস মিল ২৬০ মেট্রিক টন, বিএমচর ইউনিয়নের বেতুয়া বাজারস্থ মেসার্স আছমত উল্লাহ অটো রাইস মিল ২৫৮ মেট্রিক টন ও খুটাখালী ইউনিয়নের মেসার্স মেঘনা অটো রাইস মিল ২৫০ মেট্রিক আতপ চাল সরবরাহ দিবে মর্মে খাদ্য বিভাগের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়। তাদের মধ্যে কাকারা ইউনিয়নের মিলার মেসার্স সোনালী এগ্রো রাইস মিল ১২০ মেট্রিক টন চাল সরবরাহ দিলেও অন্য ৫ জন মিলারের কেউ এককেজি চালও সরবরাহ দেয়নি। অথচ আগামী ১৫ মার্চ শেষ হচ্ছে আতপ চাল সংগ্রহে সরকারিভাবে বেঁধে দেওয়া সময় সীমা। এ অবস্থায় ধান-চাল সংগ্রহের বিষয়টি নিয়ে দুঃচিন্তায় পড়েছেন উপজেলা খাদ্য বিভাগ।
চকরিয়া উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. আব্দুল খালেক বলেন, বর্তমানে সরকার-নির্ধারিত দামের চেয়ে বাজারে ধানের দাম অনেক বেশি। তাই কৃষকরা বেশি লাভের আশায় তাদের উৎপাদিত ধান সরকার নির্ধারিত মূল্যে খাদ্য গুদাামে সরবরাহ না দিয়ে বাইরের মিলারদের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছেন। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি শেষ হচ্ছে ধান সংগ্রহে সরকারের বেঁধে দেওয়া সময়। এ পর্যন্ত সরকারী নির্দেশনা মেনে কোন কৃষক এককেজি ধানও গুদামে সরবরাহ করেননি। তাই ধান সংগ্রহ অভিযান একেবারেই শূন্য।
তিনি আরও বলেন, আতপ চাল সংগ্রহে কিছুটা সফলতা পাওয়া গেছে। চুক্তিবদ্ধ হওয়া ৬জন মিলারের মধ্যে একজন মিলার ১২০ মেট্রিক টন চাল সরবরাহ দিয়েছেন। চুক্তি মতে যেসব মিলার এখনো চাল সরবরাহ দেয়নি তাদেরকে বারবার তাগাদা দেওয়া হচ্ছে। বেঁধে দেওয়া সময় সীমার মধ্যে যদি কোন মিলার চুক্তির শর্ত অনুযায়ী চাল সরবরাহে ব্যর্থ হয় তাহলে ওই মিলারদের লাইসেন্স বাতিলসহ প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।