ঢাকা শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ঈশ্বরদীতে চাল সরবরাহ না করায় ৪৪ চালকলের লাইসেন্স বাতিল

ঈশ্বরদীতে চাল সরবরাহ না করায় ৪৪ চালকলের লাইসেন্স বাতিল

পাবনার ঈশ্বরদীতে সরকারি খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহ না করায় ৪৪টি চালকলের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে।

ঈশ্বরদী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শাহিনুর আলম ৪৪টি চালকলের লাইসেন্স বাতিলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জানা যায়, উপজেলায় চলতি আমন মৌসুমে ঈশ্বরদীর দুটি সরকারি গুদামে চাল সরবরাহের জন্য ৯৯টি চালকল চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল। এসব চালকলের মাধ্যমে সেদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৭ হাজার ২৫৮ মেট্রিক টন। প্রতি কেজি সেদ্ধ চাল ৪৭ টাকা এবং আতপ চাল ৪৬ টাকা দরে কেনা হয়।

ঈশ্বরদী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ঈশ্বরদীতে মোট ১৪৩টি চালকলের মধ্যে আমন মৌসুমে চুক্তির আওতায় আনা সম্ভব হয়েছিল ৯৯টি। এর মধ্যে ৮৩টি চালকল চুক্তির পুরো চাল গুদামে সরবরাহ করেছে, আংশিক চাল দিয়েছে ১৬টি এবং কোনো চাল সরবরাহ করেনি ৪৪টি চালকল। ফলে আমন মৌসুমে ঈশ্বরদীতে মোট সংগ্রহ হয়েছে ৪ হাজার ৬৪৩ মেট্রিক টন চাল। যা চুক্তির মাত্র ৬৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ। চুক্তির আংশিক চাল সরবরাহ করা চালকলগুলোর জামানতও আনুপাতিক হারে বাতিল করা হয়েছে।

চাল সরবরাহে ব্যর্থ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক চালকল মালিক বলেন, এক কেজি চাল উৎপাদনে ৫২ থেকে ৫৪ টাকা খরচ হয়। তখন সরকারি গুদামে সে সিদ্ধ চাল ৪৭ টাকা ও আতপ চাল ৪৬ টাকা কেজি দরে সরবরাহ করতে হয়। লোকসান দিয়ে সব চালকল মালিকের পক্ষে চাল সরবরাহ করা সম্ভব নয়। সেজন্য অনেকেই ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও সরকারি গুদামে চাল সরবরাহ করতে পারেননি। সরকারি ক্রয়মূল্য ৫৪ টাকার বেশি হলে সবাই যার যার দায়িত্ব পালন করবে। কিন্তু লোকসান দিয়ে কেউ ব্যবসা করবে না।

আরেক চালকল মালিক বলেন, সরকারি খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহে লোকসান হয়। আমরা কয়েকবার দর পুনরায় নির্ধারণের আবেদন করেছিলাম। সরকারের পক্ষ থেকে এ নিয়ে কোনো আলোচনার সুযোগ হয়নি। তাই চাল সরবরাহ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি।

ঈশ্বরদী উপজেলা চালকল মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল হক দুলাল মন্ডল বলেন, সরকার নির্ধারিত দামে চাল সরবরাহ করে আমি অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। আমার প্রায় ১২ মেট্রিক টন চাল সরবরাহে ৩৪ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে। লোকসান দিয়ে অনেকের পক্ষে চাল সরবরাহ সম্ভব না। সরকার যদি সঠিক রেট দেয়, তাহলে সব মিল মালিক স্বতঃস্ফূর্তভাবে চাল সরবরাহ করবে।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শাহিনুর আলম জানান, যারা চাল সরবরাহে ব্যর্থ হয়েছে, তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। সরকারি যেকোনো কাজে চুক্তিবদ্ধ হলে তা বাস্তবায়ন না করতে পারলে অপরাধ বলে গণ্য হবে।

পাবনা জেলা ভারপ্রাপ্ত খাদ্য নিয়ন্ত্রক হাসান আল নাঈম বলেন, সরকারি গুদামে চাল দেওয়ার জন্য যেসব মিল চুক্তি করেনি এবং চুক্তি করেও যারা চাল দেবে না, তাদের বিরুদ্ধে সরকারের অভ্যন্তরীণ খাদ্যশস্য নীতিমালা অনুযায়ী লাইসেন্স বাতিল এবং নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সংগ্রহ কার্যক্রম স্থগিত রাখার শাস্তির বিধান রয়েছে।

লাইসেন্স,বাতিল
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত