মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অধীনে প্রায় ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে চলমান একটি সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সড়ক নির্মাণের গুরুত্বপূর্ণ স্তর ওয়েট মিক্স ম্যাকডাম (ডব্লিউ এমএম) এর কাজে বালির পরিবর্তে ব্যবহার হচ্ছে কাদামাটি। শিডিউল বহির্ভূত কাজ করায় রাস্তার স্থায়িত্ব নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে।
জানা গেছে, ঢাকা বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পের অধীনে সাটুরিয়া উপজেলার কান্দাপাড়া ভাসিয়ালি ডিআর থেকে তিল্লি ইউপি হয়ে হরগজ ইউপি এবং শিমুলিয়া সড়কের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। ৪ হাজার ৭২০ মিটার নির্মাণে ১০ কোটি ৮৯ লাখ ৭৩ হাজার ৭২৫ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
প্রকল্পের নথি অনুযায়ী, ভালো মানের খোয়ার সাথে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ বালু মিশিয়ে নির্দিষ্ট অনুপাতে রেশিও তৈরি করে রোলার দিয়ে কম্পেকশন করার নিয়ম রয়েছে। ২০২৪ সালের ১৮ আগস্ট শুরু হওয়া এ কাজটি ২০২৫ সালের ১৮ আগস্টের মধ্যে সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে। প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা উপসহকারী প্রকৌশলী আব্দুল আলিম জানান, এখন পর্যন্ত মাত্র ২০ থেকে ২৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এই কাজের ধীরগতি, নিম্নমানের সামগ্রীর ব্যবহার এবং বালুর পরিবর্তে কাদামাটি দিয়ে কম্পেকশন নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে।
মঙ্গলবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, হরগজ মোড় থেকে শিমুলিয়াগামী রাস্তার বিল্লাল ফকিরের বাড়ির সামনের অংশে কাদামাটি মেশানো নিম্নমানের খোয়া দিয়ে ডব্লিউএমএম (ওয়েট মিক্স ম্যাকডাম) স্তরের কম্পেকশন করা হচ্ছে। এছাড়াও, রাস্তার দুই পাশে পর্যাপ্ত সোল্ডার ছাড়াই কম্পেকশন করার কারণে কাজের গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
হরগোজ গ্রামের বাসিন্দা রব্বানী বলেন, ঠিকাদারের লোকজন বালুর বদলে সরাসরি কাদা ব্যবহার করে রাস্তার কাজ করছে। এলজিইডির নির্মাণ বিধি অনুসরণ না করায় এই রাস্তা টেকসই হবে না।
একই গ্রামের রমেলা বেগম বলেন, এইভাবে কাজ করলে শুধু সরকারি টাকাই নষ্ট হবে। ইটের মানও খুব খারাপ।
ঠিকাদার মজিবুরের পক্ষে তার ভাতিজা বকুল বলেন, আমার কাকা সাইটে থাকেন না, আমিই দেখাশোনা করি। ওখানে ভালো ইট দেওয়ার কথা। হয়ত ভালো মালের সাথে কিছু খারাপ মাল চলে এসেছে। আর কাদামাটিতে কাজ করার সময় হয়ত কাঁদা লেগে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে সাটুরিয়া উপজেলা প্রকৌশলী ইমরুল হাসান বলেন, তাদের কাজে অনেক ইটের প্রয়োজন। আমাদের নজরে যখনই খারাপ ইট ধরা পড়ে, আমরা সেই গাড়ি ফেরত দিতে বলি। শিডিউল অনুযায়ী তাদের কাজ করতে হবে। নিয়মের বাইরে কাজ করার কোনো সুযোগ নেই। যদি কাদা মিশ্রিত কাজ হয়ে থাকে, তবে সেগুলো অবশ্যই অপসারণ করা হবে।
এলজিইডি মানিকগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী এ বি এম খোরশেদ আলম বলেন, এখনই ব্যবস্থা নিচ্ছি।