ঢাকা রোববার, ২২ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান একই হলে ব্যাহত হয় গণতন্ত্র: বদিউল আলম

প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান একই হলে ব্যাহত হয় গণতন্ত্র: বদিউল আলম

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ও সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, বাংলাদেশের সংবিধানে প্রধানমন্ত্রীর হাতে বিপুল ক্ষমতা ন্যস্ত। একই ব্যক্তি যদি আজীবন প্রধানমন্ত্রী থাকেন, তবে তার স্বৈরাচারী হয়ে ওঠা অস্বাভাবিক নয়। তাই একই ব্যক্তি যদি প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন, তাহলে তা একটি বিপজ্জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করে।

শনিবার বিকেলে রংপুর আরডিআরএস মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘জাতীয় সনদ ও নাগরিক প্রত্যাশা’ শীর্ষক নাগরিক সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন।

সংলাপটির আয়োজন করে সুজনের রংপুর মহানগর কমিটি। এবারের সংলাপের মূল প্রতিপাদ্য ছিল—‘সচেতন, সংগঠিত ও সোচ্চার জনগোষ্ঠীই গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ’।

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, অতীতে দেখা গেছে একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন, সংসদ নেতা হয়েছেন, আবার দলীয় প্রধানও ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী নির্বাহী বিভাগের প্রধান, আর সংসদ নেতা আইনসভার প্রধান। একই ব্যক্তি যদি এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ পদ অলংকৃত করেন, তবে তা ক্ষমতার বিভাজনের নীতির লঙ্ঘন হয়।

তিনি আরও বলেন, ক্ষমতা কুক্ষিগত করার বেশ কিছু পন্থা রয়েছে। তার মধ্যে একটি হলো—একজন ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী থাকা। আমাদের দেশে প্রধানমন্ত্রী-শাসিত সরকার ব্যবস্থায় মন্ত্রিপরিষদের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে নয়, অনেক সময় এককভাবেই প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নেন। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাষ্ট্রপতিকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। প্রধান বিচারপতির নিয়োগ ব্যতীত প্রধানমন্ত্রীর প্রায় সব সিদ্ধান্তই রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্ত হিসেবে গৃহীত হয়।

বদিউল আলম মজুমদার আরও বলেন, “জুলাই ঘোষণাপত্র একটি ঐতিহাসিক ঘোষণা। গত জুলাই মাসে যে আন্দোলন হয়েছিল, সেটি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে মূল্যায়ন করতে হবে। ‘জাতীয় সনদ’ হবে একটি সংস্কারভিত্তিক প্রস্তাবনা। রাজনৈতিক দলগুলো এতে সম্মত হয়ে স্বাক্ষর করবে এবং নির্ধারণ করবে—এই সংস্কারগুলো কীভাবে বাস্তবায়িত হবে।”

রংপুর মহানগর সুজনের সভাপতি অধ্যক্ষ খন্দকার ফখরুল আনাম বেঞ্জুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার, সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক দিলিপ সরকার, আইনজীবী অ্যাডভোকেট জোবাইদুল ইসলাম, মাহে আলম ও সমাজকর্মী মঞ্জুশ্রী সাহা প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে শিক্ষাবিদ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন অংশীজনেরা ‘আগামী বাংলাদেশের’ গঠন নিয়ে আলোচনা করেন। তাঁরা সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক চর্চা, নারী ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন, রাজনৈতিক দলগুলোতে গণতন্ত্র চর্চা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখাসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ উত্থাপন করেন।

প্রধানমন্ত্রী,গণতন্ত্র,বদিউল আলম
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত